ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচনে যাওয়া মানে সরকারকে বৈধতা দেওয়া: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২
নির্বাচনে যাওয়া মানে সরকারকে বৈধতা দেওয়া: ফখরুল ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধিনে নির্বাচনে যাওয়ার মানেই হচ্ছে তাদের আরও বৈধতা দেওয়া।

সদ্য ঘোষিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

এ সময় তিনি বলেন, কালকের নির্বাচন তো আপনারা নিজেরাই দেখেছেন, দ্বিতীয়বার আমি বলতে চাই না। এটা আমরা বহু আগে থেকেই জানি যে এমন হবে। যে কারণে বলে দিয়েছি আমরা কোনো নির্বাচনেই যাচ্ছি না- খুব পরিষ্কার করে বলেছি।

জাতীয়তাবাদী দলের সমর্থিত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে ‘১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা হয়।

১৯৭৫ সালের ১৬ জুন সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে সরকার ৪টি সংবাদপত্র রেখে বাকি সব বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে সাংবাদিকদের একটি অংশ এ দিনটিকে কালো দিবস হিসেবে পালন করছে।

গত এক যুগ ধরে একদলীয় শাসনব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এ দুইটাকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন করা যায় না, এটা মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। সেজন্য গণতন্ত্রকে না পেলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আমরা কিভাবে পেতে পারি? আমরা গত কয়েকবছর ধরে বলছি যে, আমাদের মূল্য লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা। যারা গণতন্ত্রকে হরণ করেছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে বাকশাল করে তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্র পাওয়া যাবে না, এটা বাস্তবতা।

বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের পার্থক্য তুলে ধরে দলটির মহাসচিব বলেন, বিএনপির সঙ্গে তফাৎটা কোথায়? আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হরণ করেছে, সংবাপত্রের স্বাধীনতার হরণ করেছে, মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করেছে। আর বিএনপি সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিয়েছে, বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছে।

আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিদ্যমান ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করার কথাও পূনর্ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। দলমত নির্বিশেষে সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারি ও এ দেশের জনগণ মিলে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। তাহলেই মিডিয়ার স্বাধীনতা অর্জিত হবে। তাছাড়া এ দেশে মিডিয়ার স্বাধীনতা আসবে না।

বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওতত মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস যদি আপনারা দেখেন, দেখবেন এটা হচ্ছে সংবাদপত্র বিরোধী ইতিহাস, মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিপক্ষের ইতিহাস। তারা সব সময় নির্দেশ করেন এবং তারা গর্ব অনুভব করেন। ফ্যাসিজমের প্রতি অনুরক্ত একটি দল এটা করবে, এটা খুব স্বাভাবিক।

বিএফইউজের বর্তমান সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা (সরকার) আরও কিছু নিবর্তনমূলক আইন করতে যাচ্ছে। উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করা। শুধু তাই নয়, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান পরশুদিন যে বক্তব্য রেখেছেন কী ভয়ংকর একটা বিষয় যে, সেখানে সাংবাদিকরা কোনো অপরাধ করলে সেটার জন্য ১০ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। প্রেস কাউন্সিলের আইন সংশোধন করে এ ধারা যুক্ত করা হচ্ছে।

বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, কায়কোবাদ মিলন, আবদুল আউয়াল ঠাকুর, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন ও শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২
এমএইচ/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।