ঢাকা: সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির একাংশ ও বিএনপি যুগপৎভাবে আন্দোলন করার বিষয়ে একমত হয়েছে।
রোববার (১৯ জুন) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দল দুটির নেতারা ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও এনপিপির একাংশের চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিএনপির মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের চলমান যে সংলাপ তার অংশ হিসেবে আজকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বর্তমানে যে কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদী, অনির্বাচিত সরকার বাংলাদেশে গত একযুগ ধরে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলেছে। মানুষের অধিকার, বাকস্বাধীনতা, ভোটাধিকার হরণ করেছে। অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্র হচ্ছে। অনির্বাচিত এ সরকারের বিরুদ্ধে জনতার ঐক্য গড়ে তোলার জন্যে আমরা সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, এনপিপির সঙ্গে আলোচনায় কয়েকটা বিষয়ে একমত হয়েছি। প্রধানত গণতন্ত্রের মাতা যিনি সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, যিনি অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। আমাদের সেই নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, সেইসঙ্গে রাজনৈতিক কারণে বন্দি সব নেতাদের মুক্তি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যিনি দীর্ঘকাল ধরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিদেশে নির্বাসিত হয়ে আছেন তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে সঙ্গে দেশের প্রায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, সে মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবিতে আমরা একমত হয়েছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আরও একমত হয়েছি এ সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো অধিকার নেই। তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচনকালীন একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকারের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। কমিশনের মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এ বিষয়গুলোতে আমরা একমত হয়েছি। এ দাবিগুলোকে সামনে নিয়ে আমরা যুগপৎভাবে সবাই যার যার স্থান থেকে আন্দোলন শুরু করবো।
এ সময় এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ঘণ্টাব্যাপী সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সংলাপ হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব বললেন আমরা সংলাপে যেসব বিষয়ে একমত হয়েছি তা হলো আমাদের ২০ দলীয় জোটের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমানসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। তাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। বর্তমান সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিতে হবে। এ সরকার যতদিনে পদত্যাগ না করবে আমরা যুগপৎভাবে একসঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রাম করবো এবং রাজপথে থাকবো।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য আ হ ম জহির উদ্দিন হাকিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য মনির শরীফ, বেলাল আহমেদ, নবী চৌধুরী, যুগ্ম-মহাসচিব মো. ফরিদ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুজ্জামান, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মুফতি হাসিবুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২২
এমএইচ/আরবি