ঢাকা: ক্ষমতাসীন সরকারের দুঃশাসন আর সিন্ডিকেটের কারণে জনগণ অসহায় মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশ চলছে মাফিয়া শাসনের অধীনে। এখানে আইনের কোনো বালাই নেই।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
পরে অর্পণ সংঘের উদ্যোগে যুবদলের সাবেক নেতা মরহুম জিএস বাবুলের স্ত্রীর হাতে অর্থসহায়তা তুলে দেন রিজভী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, উদ্বোধনের পর পদ্মাসেতুর ওপর নেমে ছবি তোলা যাবে না বলা হলো। ছবি তোলায় কয়েকজনকে জরিমানাও করা হয়েছে। অথচ কদিন আগে প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে নিজের ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে সেলফি তুলেছেন। আসলে এক দেশে দুই আইন চলছে।
কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে জনদুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, মাফিয়া আওয়ামী লীগের লোকেরা সিন্ডিকেট করে দিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায় করছে। আজকে সিন্ডিকেট এমনভাবে চেপে বসেছে মানুষ মুখ খুলে কিছু বলতে পারছে না। কুরবানির হাটেও সিন্ডিকেট করছে আওয়ামী লীগের লোকজন। সরকারদলীয় লোকেরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদেরকে পশু কিনতে বাধ্য করছে।
লোডশেডিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সব কথা দ্বিচারিতামূলক। তিনি নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করেছেন। তাহলে লোডশেডিং কেনো? আসলে আপনি জনগণের সঙ্গে সৎ মায়ের ভুমিকা পালন করছেন। আপনি একচ্ছত্র ক্ষমতা চান। কিন্তু ক্ষমতা তো আসে জনগণের কাছ থেকে। সেটা তো আপনার নেই। আপনি নতুন নতুন প্রকল্প করেন টাকা পাচার করার জন্য।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, নিজের আত্মীয় স্বজনদের দিয়ে কুইক রেন্টালের সুযোগ দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করছেন বিদ্যুৎ খাত থেকে। লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। আপনি উন্নয়নের নামে দুর্নীতি করে যে টাকা পাচার করেছেন তার কুফল মানুষ এখন ভোগ করছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সরকারের সমালোচনা করে বলেন, উন্নয়নের নামে হৈ চৈ করে এতো লাফালাফি করলেন কোথায় আপনার বিদ্যুৎ? আপনাকে দেশবাসী আর সহ্য করবে না। আপনি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করে চলেছেন। কোথায় দশ টাকার চাল? কোথায় ঘরে ঘরে চাকরি? আজকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বেশি বেকার তথা কর্মহীন লোকের সংখ্যা বাংলাদেশে। আপনি ক্ষমতায় থাকা মানে মানুষ না খেয়ে থাকা। আপনি ক্ষমতায় থাকা মানে কর্মহীন থাকা। আজকে গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে লিখতে ও বলতে পারেনা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে বিভিন্ন কালাকানুন করেছে সরকার।
রিজভী বলেন, আপনি গোটা দেশকে গ্যাস চেম্বারে পরিণত করে মহারাণীর মতো দেশ চালাচ্ছেন। যাতে কেউ টু শব্দ করতে না পারে। সেজন্য দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখেছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছেন। আপনি তারেক রহমানকে বঞ্চিত করছেন। তবুও তারেক রহমান সুদূর লন্ডন থেকে দেশের জন্য কাজ করছেন। তিনি জনগণের জন্য নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। বন্যার্তদের জন্য তিনি সার্বক্ষণিক খবর রাখছেন। দলের নেতাকর্মীরা বন্যার্তদের পাশে উপহার সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, ডা. জাহেদুল কবির, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ও অর্পণ সংঘের বীথিকা বিনতে হোসাইন, ওমর ফারুক কাওসার ও আরিফুর রহমান তুষার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২২
এমএইচ/এসএ