ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারকে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২২
সরকারকে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সরকারকে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মির্জা আব্বাস।

শনিবার (১৬ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারের দমন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, বহু খুন, হত্যা দেখেছি, আর আমরা তা দেখতে চাই না। এবার প্রতিরোধ হবে, প্রতিবাদ হবে। সরকারকে আর কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। আপনারা এখন প্রস্তুতি নিন এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এক বদিউজ্জামান ধনির হত্যার বিচার করে লক্ষ মানুষের হত্যার বিচার করা যাবে না এ সরকারের পতন না করা পর্যন্ত।

জাতীয়তাবাদী যুবদল মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে যশোর যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধনি হত্যার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।

গত ১২ জুলাই যশোর শহরের বেজপাড়া চোপদারপাড়া এলাকায় যুবদলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান ধনিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে বদিউজ্জামান ধনির খুনকে সরকার বিএনপির ওপর চালান করতে চাচ্ছে। যে এটা অভ্যন্তরীণ কোন্দল।

আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা কোনো অভ্যন্তরীণ কোন্দল নয়। এ হত্যাকাণ্ডটা আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে এবং একের পর এক করে বিএনপি কর্মীদের ভয় পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিএনপির কর্মীরা কখনও ভয় পায় না। আমরা বদিজ্জামান ধনি হত্যার সঠিক বিচার আশা করছি। যদি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার না হয় বিএনপি এর বিচার করবে। আমাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই।

মির্জা আব্বাস বলেন, পত্রিকায় আজকে আসছে- বিএনপি নাকি একটি পতিত দল। যিনি (ওবায়দুল কাদের) পতিত দল বলেছেন, তার সম্পর্কে দু-একটা কথা না বললেই নয়, বলতেই হয়। একসঙ্গে (১/১১ সময়কাল) জেলে ছিলাম। সারাদিন জেলখানায় প্রায় কান্নাকাটি করতেন। আর ওই সময়ে অনেকের সামনেই কান ধরে বলতেন, আমি জীবনে আর রাজনীতি করমু না। আজকে উনার মুখ থেকে বেরিয়েছে পতিত দল…। উনার সম্পর্কে কথা হয়েছে কাউয়া কাদের.. তার মুখ থেকে বের হয়েছে পতিত দল কথা, যার অর্থ আমি বুঝতে পারিনি।

আমি বলব, বিএনপি যদি পতিত দল হয়ে থাকে তাহলে এত ভয় কেন আপনাদের? আমাদের মিছিল-মিটিং করতে দেন না। একটা পতিত দল মিছিল করবে, মিটিং করবে আপনাদের ভয়ের কী আছে? আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ, কারাবন্দি, আমাদের নেতা তারেক রহমান অসুস্থ অবস্থায় ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন, আল্লাহর রহমতে উনি অনেকটা ভালো আছেন, বিদেশে আছেন দেশে নেই। তারপরও দেশনেত্রীর প্রতি ভালোবাসা, নেতৃত্বের প্রতি, তারেক রহমানের প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসার কারণেই এ দল এখনো শক্তভাবে টিকে আছে, ভেঙে পড়ে যায়নি।

তিনি বলেন, কিন্তু যদি আপনার নেত্রী (আওয়ামী লীগ) বা কাউয়া কাদেররা কোনো রকমে ভাইগা যায়-অবস্থাটা কী দাঁড়াবে? এ আওয়ামী লীগকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ কাদের সাহেবই বলেছেন তাদের কোনো এক মিটিংয়ে যে, যা কিছু কামাইছেন কিছুই কিন্তু থাকবে না, সব টাকা-পয়সা বালতি-ঘইটা ফেইলা দেশ থেকে পালাইতে হইবো। আমরা উনাকে পালাতে বলিনি, উনারাই দেশ থেকে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন না। আমরা তাদের পালাতে বলিনি। কারণ যত লুট, যত খুন করেছে এর বিচার তো আমরা করবো। যুদ্ধাপরাধীর বিচার যদি ৪০ বছর পর হতে পারে, আপনাদেরও দরকার পড়লে মরনোত্তর বিচার হবে সেদিন সময় আসবে। এ দেশকে, দেশের মানুষকে যে কষ্ট আপনারা দিয়েছেন সেই কষ্ট মানুষ কখনো ভুলবে না।

মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা বলেন এত উন্নয়ন করেছেন- দেশের মানুষ খুশি হয়ে ভোট দেবে-ছেড়ে দেন না। আপনারা তো একটাই চেয়েছি-বেশি কিছু চাইনি। আমরা বলেছি, নিরপেক্ষ সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার। এ রকম একটা সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব। ওই সময় পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী থাকবেন না, নিরপেক্ষ সরকার আসবে, তাদের অধীনে নির্বাচনে যাব। তারপরে আপনি যত খুন, যত জখম করেছেন আমার কোনো আপত্তি নেই, তারপরও যদি মানুষ আপনাদের ভোট দেয় ইনশাল্লাহ আমরাও আপনাদের মেনে নেব। কিন্তু যদি কারচুপি করে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হয়…। ইভিএম চিনি না আমরা, ইভিএম বুঝি না আমরা, দরকার নেই এটি। বিএনপি আপনাদের অধীনে নির্বাচনে যাবে না-এটাই সঠিক।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের কথা বলার সময় নেই। উই শুড গো ফর ডাইরেক্ট অ্যাকশন। খালেদা জিয়ার সামনে আমরা স্লোগান দিতাম- অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন। অ্যাকশন করলে কড়া রি-অ্যাকশন। এখন আমাদের সেই ডাইরেক্ট অ্যাকশনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

মহানগর উত্তর যু্ব দলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জগলুল পাশা পাপেল ও দক্ষিণের খন্দকার এনামুল হক এনামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাইফুল আলম নিরব, যুবদলের সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না, মহানগর বিএনপির আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কামারুজ্জামান দুলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসাহাক সরকারসহ যুবদলের মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।