ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

যুবদল নেতার হাতে ওয়ার্ড আ. লীগের নেতৃত্ব!

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বরগুনা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২২
যুবদল নেতার হাতে ওয়ার্ড আ. লীগের নেতৃত্ব! আফজাল হোসেন

বরগুনা : মো. আফজাল হোসেন, এক সময় ছিলেন বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এখন একই ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

‘ম্যানেজ করে’ বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে নাম লেখানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযোগ থাকলেই বা কী হবে, একে একে ১০টি বছর ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী নেতৃত্ব সামলাচ্ছেন আফজাল। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও তারা নিরুপায়। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিতে পারায় অনেক ত্যাগী নেতা সরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা।

বর্তমানে হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির চেয়ার সামলাচ্ছেন আফজাল হোসেন। জানা গেছে, বিএনপি শাসনামলে ২০০৫ সালে অনুমোদিত হোসনাবাদ যুবদলের কমিটি তালিকায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে রাতারাতি ভোল পাল্টে পুরাদস্তুর ক্ষমতাসীন দলের নেতা বনে যান আফজাল।

পরবর্তীতে ২০১৩ সালে গঠন কারা হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই এক সময়কার যুবদলে নেতার হাতে চলছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বাগডোর।

আফজাল নির্বাচিত হওয়ার পর হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে রাগে ক্ষোভে সরে যান তৎকালীন সভাপতি আব্দুর রহমান (নান্না) শিকদার। তিনি এখন হোসনাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। বাংলানিউজকে নান্না শিকদার বলেন, ২০১৩ সালে কাউন্সিলে হঠাৎ বিএনপি নেতা আফজালের নাম প্রস্তাব করলে আমি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যক্রম থেকে সরে আসি। শুধু আমি-ই নই, অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মীও সরে আসেন। অনেকে ক্ষুব্ধ হলেও উপজেলার নেতাদের ম্যানেজ করে আফজাল আমাদের কমিটিতে ঢুকে পড়েন।

তিনি আরও বলেন, আফজালের কমিটিতে ঠোকার পর তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এখনও ক্ষুব্ধ। তিনি কমিটিতে ঢুকে দলের না হয়ে বরং বিএনপির কাজই বেশি করছেন। তাই ওয়ার্ডের বর্তমান তৃণমূল নেতাকর্মীরা সব দূরে সরে আছেন আওয়ামী লীগের কার্যক্রম থেকে।

আফজাল আগে যে যুবদলের নেতা ছিলেন, তার প্রমাণ মেলে ২০০৫ সালে জেলা বিএনপি থেকে অনুমোদিত তালিকা থেকে। অথচ, নিজে কখনও বিএনপির রাজনীতি করেছেন বলে স্বীকার করেননি তিনি। বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলানিউজকে আফজাল বলেন, আমি কখনও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। ২০০৫ সালের কমিটির কাগজে নাম যোগ করে তার ক্ষতি করার চেষ্টা চলছে বলেও তিনি দাবি করেন।

আফজালের এমন বক্তব্যের পর কথা হয় ২০০৫ সালের যুবদলের কমিটির সদস্য কিসলু মুন্সির সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বিএনপির ক্ষমতাকালীন রাজনীতির লোভেই তিনি যুবদলে এসেছিলেন। সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। যে দল যখন ক্ষমতায়, সে দলে ভিড়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার অভিযোগও তোলেন আফজালের বিরুদ্ধে।

তৃণমূলের ক্ষোভ সম্পর্কে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান ফোরকান বাংলানিউজকে জানান, ২০১৩ সালে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার সুপারিশে কমিটি গঠিত হয়। ২০০৫ সালে অনুমোদিত যুবদলের একটি কাগজও অভিযোগ আকারে তার কাছে এসেছে। যেসব অভিযোগ আছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান ফোরকান।

বাংলাদেশ সময় : ১৪১৮ ঘণ্টা, ১৭ জুলাই, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।