ঢাকা: দেশের চরম অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। এ সংকটের মূলে রয়েছে অবৈধ স্বৈরাচার সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, দুঃশাসন ও ক্ষমতার অপব্যবহার।
সোমবার (১৮ জুলাই) দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাকিব আনোয়ার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
মান্না বলেন, ১৩ বছরের সীমাহীন লুটপাট, দুর্নীতি, দুঃশাসনের কারণে দেশ আজ এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পতিত হয়েছে। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের মাত্র ৪ মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান। ডলারের বিপরীতে টাকার মান প্রতিনিয়ত কমছে। কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম একশ ছাড়িয়েছে। সরকার কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কমে গেছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। ডলারের দাম নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে রেমিট্যান্স আয় আরো কমে যাবে, এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
কিছুদিন আগেই সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) জানিয়েছিল তারা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। জ্বালানি আমদানির জন্য এলসি পর্যন্ত সরকার খুলতে পারছে না রিজার্ভ সংকটের কারণে। আজকে সরকার ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করল। এখন ঘোষণা দিয়ে দিনে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং করবে। অথচ এ সরকারই শতভাগ বিদ্যুতায়নের আলোকসজ্জা করেছে কয়েক মাস আগে। এটা একটা ফোরটোয়েন্টি সরকার। অফিসের সময় সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পেট্রোল পাম্প সপ্তাহে একদিন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে তারা। তার মানে এটা কী শেষের শুরু?
তিনি বলেন, মসজিদে এসির দিকে চোখ পড়েছে সরকারের। অথচ সচিবালয়ে ৩৬টি মন্ত্রণালয় মিলিয়ে রয়েছে ৪ হাজার টন এসি। এ অবৈধ সরকারের দুর্নীতিবাজ মন্ত্রীদের আরাম দিতে সাধারণ জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হবে কেন?
গেল অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি ৩১ বিলিয়ন ডলার। পোশাক শিল্পে ক্রয়াদেশ কমেছে ৩০ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি যে আরো বাড়বে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। অথচ রপ্তানি বাড়াতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। তারা কেবল নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত।
বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতির এ সংকট তৈরি করেছে অবৈধ ভোট ডাকাত সরকার। তাদের লুটপাট, দুর্নীতি, দুঃশাসন আর অপরিণামদর্শীতা আজকে গোটা দেশের অর্থনীতিকে এক অন্ধকার পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে এ অযোগ্য সরকারের। সরকারের কাছে বলছি, এখন আর সময় নেই, এ মুহূর্তে চলে যান। দেশটাকে আর ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবেন না। শ্রীলঙ্কার দিকে তাকান। যারা বড়াই করেছে, তাদের পরিণতি কী হয়েছে, দেখতে পাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২২
এমএইচ/আরবি