ঢাকা: সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশে সমরাস্ত্র নিয়ে আসার সময় কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরে সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ভাষ্য এবং আইএসপিআর-এর বক্তব্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে জানিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে সরকারের কাছে প্রকৃত তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়েছে দলটি।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৮ জুলাই রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা হয়। ওই সভায় গত ১৬ জুলাই রাতে সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশে সমরাস্ত্র নিয়ে আসার সময় ইউক্রেনের একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায়, আইএসপিআর-এর দু’রকম বক্তব্যে বিষ্ময় প্রকাশ করা হয়। সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ভাষ্য এবং আইএসপিআর এর বক্তব্য সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় জনগণের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে সরকারের কাছে প্রকৃত তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়।
সভায়, সম্প্রতি প্রদত্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য, ‘কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়; আপনাকে রাইফেল বা আরেকটি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে, আমরা সহিংসতা বন্ধ করতে পারবো না’-এর বিষয়ে আলোচনা হয়। সভা মনে করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের মধ্যদিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নির্বাচন সম্পর্কে বক্তব্যের যথার্থতা প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি বরাবরই বলে আসছে যে দলীয় সরকারের, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কখনই কোনো নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ, অবাধ, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না। একমাত্র নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানই সংকট উত্তরনে একমাত্র পথ।
নির্বাচন কমিশন সংহিসতা বন্ধ করতে না পারার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে। প্রমাণিত হয়েছে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন কতটা ক্ষমতাহীন। আর সেই কারণেই বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল বর্তমান নির্বাচনকালীন সময় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে। সভায় অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও পদত্যাগের পরে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, দলীয় সভায় ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক আবারও পানির দাম ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানো হয় এই নিয়ে গত ১৪ বছরে অন্তত ১৫ বার পানির দাম বাড়ানো হলো, অথচ ঢাকায় নাগরিকেরা শতকরা ৪০ ভাগও সুপেয় পানি পায় না। ওয়াসার পানি ময়লা ও জীবানু যুক্ত হওয়ায় পান করার অযোগ্য। সভায় অবিলম্বে পানির দাম কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনা এবং পানির গুনগত মান বৃদ্ধি করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর কর্তৃক ৫৩টি অত্যাবশকীয় ওষুধের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। অবিলম্বে পানি ও ঔষধের মুল্য হ্রাসের দাবি জানানো হয়। মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি, অঙ্গ সংগঠন সমূহকে মহানগর এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায়, বন্যার কারণে স্থগিত দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২২
এমএইচ/এসএ