ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন আবারও প্রমাণ হলো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই খালেদা জিয়া কারাবন্দি। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুংকার দিয়ে বলেছেন, ‘বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে আবারো খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়ে দেব।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আইন ও বিচার ব্যবস্থা তার হাতের মুঠোয় জিম্মি, তিনি ইচ্ছা করলে কাউকে জেলে দিতে পারেন, আবার ইচ্ছা করলে কাউকে জেলের বাইরেও রাখতে পারেন। হীরক রানীর দেশে তিনি যা ইচ্ছে তাই করছেন। আইন-আদালত, প্রশাসন সবকিছু তার হুকুমের গোলাম, কেউ স্বাধীনভাবে তাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পালন করতে পারে না। ১৪ বছর আগে ১৫টি মামলা মাথায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ১৫ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির সেই মামলাগুলো আজ কোথায়? ওই মামলাগুলো উনি চিবিয়ে খেয়েছেন। আর চার বারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ২ কোটি টাকার মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করে এখন হুংকার দিচ্ছেন আবারো জেলে পাঠাবেন।
আপনার আমলে দেশ থেকে সরকারি হিসেবে ১১ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। কেনো ব্যাংকে ডলার নেই, এক ব্যাগ রক্তের দামের চেয়ে এক কেজি চালের দাম এখন অনেক বেশি। শেখ হাসিনার উন্নয়নের সরকার মূলত: বাঁশবান্ধব সরকার। কারণ অধিকাংশ মেগা প্রকল্পে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, কয়দিন আগে প্রধানমন্ত্রী আত্মস্বীকৃতি দিয়েছেন যে, বাড়াবাড়ি করলে ‘হেফাজতের মতো বিএনপিকেও’ দমন করা হবে। এই হুমকি প্রমাণ করে যে, তিনি আবারো ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মতো ইতিহাসের রক্তাক্ত গণহত্যাযজ্ঞ চালাবার পাঁয়তারা করছেন। রাতের অন্ধকারে কিশোর বয়সী মাদরাসা ছাত্রদের ওপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানোর কথা স্বীকার করেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এখন বাকি আছে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের স্বীকারাক্তি। তার এই স্বীকারাক্তিগুলো কলঙ্কিত ইতিহাস হয়ে থাকবে বিশ্ব ইতিহাসে। জনগণের কাঠগড়ায় আপনাকে দাঁড়াতেই হবে।
রিজভী বলেন, বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় ছাত্রদলের মশাল মিছিলে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র গুণ্ডারা। হামলা থেকে বাঁচতে গাড়িচাপায় মারা গেছেন রূপগঞ্জ থানার কাঞ্চন পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইমন হাসান অনীক। এটি যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্তৃক সরাসরি হত্যাকাণ্ড। আহত হয়েছেন ছাত্রদল নেতা আবু হানিফ, আপু মিয়া, আমির হোসেন প্রমুখ। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম , চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মীর শরাফত আলী সপু, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ব্যারিষ্টার নাসির উদ্দিন অসীম, কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২২
এমএইচ/এমএমজেড