ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

‘বায়োগ্যাস এবং সিএনজি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১২
‘বায়োগ্যাস এবং সিএনজি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

ঢাকা: বাংলাদেশে আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের সম্ভাবনা এবং এর কারিগরি, বাণিজ্যিক দিকসহ ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার।

বাংলাদেশে বাণিজ্যকভিত্তিতে মুরগির বাচ্চা এবং পোলট্রি খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম পথিকৃৎ প্রতিষ্ঠান চিকস অ্যান্ড ফিডস লিমিটেড বাংলাদেশের উদ্যোগে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় প্রতিষ্ঠানটির কনফারেন্স হলে।



বৈঠকে বাণিজ্যিকভাবে বায়োগ্যাস ও বায়োগ্যাস থেকে সিএনজি উৎপাদন নিয়ে আলোচনা হয়।
 
গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের  উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উচ্চ পদস্থ নির্বাহী কর্মকর্তারা। এছাড়া বৈঠকে বাণিজ্যিকভিত্তিতে বিভিন্ন কাঁচামাল ব্যবহার করে বৃহৎ বায়োগ্যাস প্লান্ট নির্মাণের বিভিন্ন কারিগরি দিক তুলে ধরেন চীনের প্রখ্যাত বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠান এইচইইইয়ের প্রতিনিধি।

অনুষ্ঠানে চীনা কারিগরি সহযোগিতায় গাজিপুর ও মাওনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভিত্তিতে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করেন আয়োজক চিকস অ্যান্ড ফিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এখলাসুল হক।
 
তিনি এ সময় বৃহৎ বায়োগ্যাস প্রকল্প স্থাপনে কারিগরী ও বাণিজ্যিক বিভিন্ন দিকসহ  প্রয়োজনীয় জৈব কাঁচামাল এবং এই খাতের বিনিয়োগের সম্ভবনা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় সম্বন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরেন।

বৈঠক উপস্থিত  গ্রামীণ শক্তি লিমিটেডের এমএ গোফরান বায়োগ্যাস প্লান্টের ওপর নিজের বিশাল অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি তিনি দেশে আধুনিক প্রযুক্তি পরিচিত করার মাধ্যমে এক হাজার ঘন মিটারেরও বেশি ডাইজেস্টার ক্ষমতাসম্পন্ন বৃহৎ বায়োগ্যাস প্লান্ট নির্মাণের জন্য চিকস অ্যান্ড ফিডসের উচ্ছসিত প্রশংসা করেন।

তিনি আর বলেন, বায়োগ্যাস সিএনজিতে রূপান্তরের মাধ্যমে গাড়ি চালানো খুবই সহজ একটি বিষয়। যে সব এলাকায় সিএনজি নেই, সেসব এলাকায় এই সিএনজি ব্যবহার করা যেতে পারে।

এছাড়া তিনি প্রকল্পের উৎপাদিত তরল সার বাজারজাতকরণে গ্রামীণশক্তির আগ্রহের কথাও জানান এ সময়।
 
বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক শাহ মো. ওয়াহেদুজ্জামান প্রকল্পে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে অর্থায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

এ ছাড়া বৈঠকে উপস্থিত মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের মোহাম্মদ ইকবাল ও নাইয়ার ফাতেমা, ইউসিবিএলের ফয়সাল আহমেদ, এক্সিম ব্যাংকের মো. ময়েন উদ্দিন, ইস্টার্ন ব্যাংকের খুরশেদ আলম, স্টান্ডার্ড ব্যাংকের সৈয়দ এম মাসুম এবং নিহার রঞ্জন হালদার এই ধরণের প্রকল্পের ওপর তাদের নিজস্ব ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। এর পাশাপাশি তারা এই প্রকল্পের বিভিন্ন দিক যাচাই করে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রকল্প অনুমোদন লাভ করতে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হবে না।

বৈঠকে উপস্থিত এনজিও প্রতিনিধিদের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন কারিতাসের মো: মিজানুর রহমান ও মো: আলমগীর। তারা বায়োগ্যাস ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি খাতে সেচের সম্ভাবনা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় এ প্রকল্প স্থাপনের ব্যাপারে ব্যাপারে তাদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সহযোগিতারও আশ্বাস দেন তারা।

বৈঠকে উপস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনার্জি প্যাক লিমিটেডের মাহমুদুল হাসান এবং রানার গ্রুপের উপমহাব্যবস্থাপক লে. কর্নেল কেএম আবু রায়হান (অব.)। তারা শিল্পখাতে বায়োগ্যাস প্রজেক্ট স্থাপনের সম্ভাবনা এবং ব্যবহার সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত চীনের প্রখ্যাত বায়োগ্যাস কোম্পানি এইচইইই লিমিটেডের মি. হি এ সময় তাদের কোম্পানির সরবরাহ করা বায়োগ্যাস প্রকল্পের কারিগরি বিভিন্ন দিক সম্পর্কে উপস্থিত সুধীজনদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। পাশাপাশি তিনি বায়োগ্যাস প্রকল্পে ভিন্ন ভিন্ন কাঁচামাল ব্যবহার করে কি পরিমান উৎপাদন সম্ভব তাও তুলে ধরেন।

বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়, চলমান বায়োগ্যাস প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম শুরু হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। এই আশাবাদ ব্যক্ত করে বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১২
সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর; আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।