ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

১১৩১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছে, সংসদে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১১
১১৩১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছে, সংসদে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: বর্তমান সরকারের আমলে নতুন ভাবে সারাদেশে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে ১১৩১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছে। সংসদে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুল হকের পক্ষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল ইসলাম টুকু এতথ্য জানান।



সুনামগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে সরকারি ভাবে ১৫৮ মেগাওয়াট এবং বেসরকারি খাতে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল ১৩৪৩ মেগাওয়াটসহ মোট ১৫০১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে ।

খুলনা ৪ আসনের সংসদ সদস্য জালাল উদ্দিনের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ২০১১সালে জানুয়ারি মাসে ভোলা জেলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দেশের দক্ষিণাঞ্চল তথা খুলনা জেলা পর্যন্ত জাতীয় গ্যাস পাইপ লাইন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ করতে এরই মধ্যে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ভেড়ামারা থেকে খুলনা পর্যন্ত ২০ ইঞ্চি ব্যাসের ১৬৫ কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।

তিনি আরো জানান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ করতে এরই মধ্যে সুন্দরবন গ্যাস বিতরণ কোম্পানি নামে একটি কোম্পানি গঠন করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের গ্যাস সেক্টরের উন্নয়নের জন্য চীনের সিএনপিসি এবং থাইল্যান্ডের পিটিটিইপির সঙ্গে এরই মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

রাশিয়ার সর্ববৃহৎ সরকারি কোম্পানি গাজপ্রমের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক  স্বাক্ষরের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, প্রতি বছর গ্যাসের ব্যবহার ৮ শতাংশ হারে বাড়ছে। অথচ এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উৎপাদন বাড়েনি। আর এ গ্যাস সংকট ও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ চাহিদার কারণে দেশে বিদ্যুত ঘাটতি হচ্ছে। গ্যাস সংকট কমাতে সরকার আগামী তিন বছরের মধ্যে ২০টি কূপ খনন করার কর্মসূচি নিয়েছে। আর ২০১৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ ঘাটতি নিরসনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

সংসদ অধিবেশনে অনুপস্থিত বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, গ্যাসের ব্যবহার বার্ষিক শতকরা আট ভাগ হারে বৃদ্ধি পেলেও এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উৎপাদন বাড়েনি। গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি নির্ভর করে নতুন নতুন গ্যাস আধার আবিষ্কার ও কূপ খননের মাধ্যমে। অথচ বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার আগে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো বিনিয়োগ করা হয়নি।

এছাড়া বিনিয়োগের সুফল পেতে কিছুটা সময়েরও প্রয়োজন হয়। বর্তমান সরকার এ দায়ভার নিয়ে ক্ষমতা নিয়েছে। তিনি জানান, আগামী তিন বছরের মধ্যে ২০টিরও বেশি কূপ খনন করার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাহিদা ও গ্যাস সংকট অব্যাহত থাকার কারণে বর্তমানে বিদ্যুৎ ঘাটতি হচ্ছে। এ বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোসহ এ খাতের সার্বিক ও সুষম উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সেসব কর্মসূচির আওতায় আগামী ২০১৬ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গ্যাস সংকটকে বিবেচনায় রেখে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি তরল জ্বালানি, কয়লা, ডুয়েল, ফুয়েল, নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।

তার অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দৈনিক পাঁচশ মিলিয়ন ঘনফুটর গ্যাসের সমপরিমাণ তরল গ্যাস আমদানির জন্য সরকার কাজ করছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, এ পরিকল্পনার আওতায় বর্তমান সরকারের আমলে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ২ হাজার ৯৫৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সফল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। পরিকল্পনাগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়িত হলে ২০১২ সালের শেষ দিকে বিদ্যুতের উৎপাদন চাহিদাকে ছাড়িয়ে যাবে। আশা করা যায় ২০১৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ-ঘাটতি থাকবে না।

সংসদ অধিবেশনে অনুপস্থিত বিএনপির সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়ার লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের অধীন চট্টগ্রাম ও সিলেটে দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে এলপিজি গ্যাস উৎপাদন হয়। এ দুটি প্লান্ট-থেকে বার্ষিক ২১ হাজার মেট্রিক টন এলপিজি গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। যা দেশের মোট এলপিজি চাহিদার ২৫ শতাংশ সরবরাহ করে। ”

মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) মানোন্নয়নে ওসিএসপি প্রকল্পের আওতায় পাঁচ হাজার মিটার গভীর কূপ খনন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ড্রিলিং রিগ কেনা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।