ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুতে ট্রেড ইউনিয়ন নিষিদ্ধ হচ্ছে!

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৪
বিদ্যুতে ট্রেড ইউনিয়ন নিষিদ্ধ হচ্ছে!

ঢাকা: জরুরি সেবা বিবেচনায় বিদ্যুৎখাতকে শ্রম আইনের বাইরে রাখতে চায় সরকার। শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নের সুবিধা রোহিত করে নতুন আইন প্রণয়নের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে বলে জানা গেছে।


 
বিদ্যুৎ বিভাগের উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আইনের খসড়া প্রায় চ‍ূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সর্বোচ্চ ৩ মাসের মধ্যে আইনটি চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে।
 
শিগগিরই আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা আহ্বান করা হবে বলেও জানান তিনি।
 
মোহাম্মদ হোসাইন আরও জানান, আইন প্রণয়নের পর বিধি প্রণয়নে সময়ক্ষেপণ হয়, তাই আইনের পাশাপাশি বিধিমালার খসড়াও প্রস্তুত করা হচ্ছে। যাতে আইন প্রণয়নের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিধিমালা তৈরি করা যায়।
 
নতুন এই আইনে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার রোহিত করা হচ্ছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

তবে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনও চ‍ূড়ান্ত নয়, এর পক্ষে বিপক্ষে মত রয়েছে। নতুন আইনে বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বর্তমানে ১৯১০ সালের আইনে বিদ্যুৎ খাত পরিচালিত হচ্ছে।
 
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০০৮ সালের জুলাই মাসে এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক বিদ্যুৎ খাতের সংস্কারে কর্পোরাইজেশন অব বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড নামে একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বরাবর দাখিল করে।
 
প্রতিবেদনে বেতন কাঠামো ঢেলে সাজানো ছাড়াও এ খাতের সংস্কারের বিষয়ে তাগিদ দেন। এতে পিডিবিকে গতিশীল করার জন্য করপোরেশন বা হোল্ডিং কোম্পানিতে পরিণত করার সুপারিশ দেওয়া হয়।
 
গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে অফিস করতে এসে সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিয়ে যান। বর্তমানে সে অনুযায়ীই কাজ চলছে।
 
সংস্কারের অংশ হিসেবে পিডিবিকে কর্পোরেশন বা হোল্ডিং কোম্পানিতে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। এ জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে সম্প্রতি দুই সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
 
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে লোকসান কমাতে পিডিবির এ রূপান্তর জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ এখন পিডিবির সিসটেম লস প্রায় ১২ শতাংশের মতো। যেখানে অন্যান্য বিতরণ কোম্পানির সিসটেম লস ৮ শতাংশের মতো।
 
সংস্কারের অংশ হিসেবে পাঁচটি বিদ্যুৎ বিতরণী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আরো নতুন তিনটি বিতরণী প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ) সেন্ট্রাল জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (বৃহত্তর ময়মনসিংহ) ও সাউথ জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (চট্টগ্রাম বিভাগে)।
 
এছাড়া সংস্কারের অংশ হিসেবে ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশকে (ইজিসিবি) শক্তিশালী করা, হরিপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জ-এর পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো ইজিসিবির কাছে হস্তান্তর ও ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে কর্পোরাইজেশন করার কাজ চলছে বলেও জানা গেছে।
 
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, গ্রাহক সেবার মান বাড়ানো এবং কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার জন্য ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে এসব বাস্তবায়ন হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।