ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সারাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয়

‘নির্দিষ্ট কারণ বলা সম্ভব নয়’

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৪
‘নির্দিষ্ট কারণ বলা সম্ভব নয়’ ছবি : ফাইল ফটো

ঢাকা: ঠিক কোথা থেকে এবং কেন বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সূত্রপাত হয়েছে, এর একক কারণ চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। লো-ভোল্টসহ একাধিক কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।



১ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১ টায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। ওই দিনই উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রথমে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ে ব্যর্থ হয়ে পঞ্চম কার্যদিবসে প্রাথমিক রিপোর্ট দেয় কমিটি।

প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ কারণেই বিদ্যুৎ বিপর্যয়। নির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করা যায়নি; যে কারণে আরো ১০ কার্যদিবস সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই নির্ধারিত সময়ও শেষ হয়েছে রোববার (২৩ নভেম্বর)। কিন্তু, রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বলতে গেলে রিপোর্ট চূড়ান্তই রয়েছে। আশা করছি, সোমবার (২৪ নভেম্বর) শেষ মিটিংয়ে কমিটির সদস্যরা সই করবেন। এরপর জমা দেওয়া হবে।

ঠিক কবে নাগাদ রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে এ প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, প্রতিমন্ত্রী দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি এলেই তার হাতে জমা দেওয়া হবে।

অন্যদিকে, তদন্ত কমিটির প্রধান ড. আহমদ কায়কাউস বলেছেন, প্রতিমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় কিছুটা সময় পেয়েছি। সেই সময়কে কাজে লাগানো হচ্ছে। তদন্তে যেসব বিষয় পাওয়া গেছে, সেগুলোর বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়েছে।

ঠিক কী কারণে এবং কোথা থেকে বিপর্যয়ের সূত্রপাত হয় জানতে চাওয়া হলে আহমদ কায়কাউস বাংলানিউজকে জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বিদ্যুৎ বির্পযয়ের পর কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটিও নির্দিষ্ট করে কোনো কারণ চিহ্নিত করতে পারেনি।

আমেরিকার উন্নত প্রযুক্তি ও দক্ষ জনবল থাকার পরও একক কারণ চিহ্নিত করতে পারেনি; সেখানে বাংলাদেশের মতো একটি দেশে এর একক কারণ চিহ্নিত করা কঠিন বিষয় বলে জানিয়েছেন এই তদন্ত কমিটি প্রধান।

তিনি বলেন, ৩০ থেকে ৪০ বছরের পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। অনেক আগেই এগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বাস্তবতার কারণে এগুলো বন্ধ করা যাচ্ছে না। এগুলো যে চলছে, এটাই বিষ্ময়!

তদন্ত কমিটি সূত্র জানিয়েছে, দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হওয়ার সময়সীমা সেকেন্ডে নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু ১ নভেম্বর ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটেছে মিলি সেকেন্ডে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাত্র পাঁচ মিলি সেকেন্ডে ব্ল্যাক আউটের ঘটনা ঘটে যায়। এত বড় সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত নয় ‘ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার’।

কোনো বিপর্যয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কোনোটি ১০০ মিলি সেকেন্ড, কোনোটি ১৫০ মিলি সেকেন্ড আবার কোনোটি এক সেকেন্ডে বন্ধের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন যাতে কোনো দুর্ঘটনায় এক মিলি সেকেন্ডে সিস্টেম অপারেশন করা যায়, ওই ধরনের সফটওয়্যার উন্নয়নের সুপারিশ থাকছে তদন্ত রিপোর্টে।

তদন্ত প্রতিবেদনে দেশের সঞ্চালন ব্যবস্থার কোথায় কী ধরনের ত্রুটি রয়েছে, তাও তুলে ধরা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি কোথায় উদ্ভব হতে পারে, তাও বলা হয়েছে। বিশেষত এতে অতি পুরনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন এবং পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কারণে ভবিষ্যতে আবারও এ ধরনের ঘটনা ঘটনার আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।

ঘটনার পর পরই পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ’র (পিজিসিবি) কর্তারা বলেছিলেন, ভারত থেকে আমদানি বিদ্যুৎ ‘ট্রিপ’ করায় এই সমস্যা হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। এর কোনো বাস্তবতা খুঁজে পায়নি।

যাকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট হয়েছিল, তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিল তদন্ত কমিটি। তিনি তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, তার জুনিয়ররা এ বিষয়টি তাকে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন।

১ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় হঠাৎ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। বিকেল নাগাদ সামান্য সরবরাহ শুরু হলেও আবার হাইভোল্টের কারণে উৎপাদন প্রায় শূন্যে নেমে আসে। রাত  ৯টা নাগাদ পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকে। মধ্যরাতে গিয়ে পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে চলে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৪

** যে কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয়
** অন্ধকারে দেশ, কারণ অনুদঘাটিত
** সুনামগঞ্জে রাত সাড়ে ৯টায় এলো বিদ্যুৎ
** পার্বতীপুরে রাত সোয়া ১০টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ
** পঞ্চগড়ে রাত ১০টায় দেখা মিললো বিদ্যুতের
** ময়মনসিংহের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিদ্যুৎ
** জামালপুরে জেলা শহরে বিদ্যুৎ
** বিদ্যুৎ বিপর্যয় উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর দিকনিদের্শনা
** নীলফামারীতে রাত ১২টায় জ্বললো বিদ্যুতের বাতি
** বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সংবাদমাধ্যম
** রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
** কোথাও আছে কোথাও নেই বিদ্যুৎ!
** ৩০ জেলায় বিদ্যুৎ, আরও আসছে....

** পাঁচতারকা হোটেলে মোমের আলোয় আপ্যায়ন
** আট জেলায় বিদ্যুৎ!
** স্বাভাবিক হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ
** ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে বিদ্যুৎ!
**কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু
** অন্ধকারে দেশ, কারণ অনুদঘাটিত
** অন্ধকারে কাত্যায়নী পূজার লাখো দর্শনার্থী
**আলো জ্বলেনি সংসদে
** সারাদেশ বিদ্যুৎহীন
** বিদ্যুৎ বিভ্রাটে প্রতিমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ
** সিলেটে বিপর্যয় কাটিয়ে সচল পিজিসিবির ৭ সাবস্টেশন
** ভোলায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক!
** ময়মনসিংহ শহরে বিদ্যুৎ আছে, নেই উপজেলায়

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।