ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাড়া

জ্বালানি ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন শাহিদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৪
জ্বালানি ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন শাহিদের ছবি: রেহানা / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে ব্যবহার করে পদার্থ বিজ্ঞানের পাঁচটি সূত্রের মাধ্যমে তেল, গ্যাস, কয়লা বা সোলারবিহীন বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন তরুণ উদ্ভাবক দিনাজপুরের শাহিদ হোসেন।
 
বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে ২০০৩ সাল থেকে জ্বালানিবিহীন প্রযুক্তি আবিষ্কারে মনোনিবেশ করেন দিনাজপুরের এ তরুণ।


 
নতুন এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ৩০ বছরের জীবনী শক্তির পাঁচ মেগাওয়াট একটি প্ল্যান্ট স্থাপনে ব্যয় ধরা হয়েছে, ৪০ কোটি ও ১০ মেগাওয়াটের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ কোটি টাকা।
 
এই বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউনিট প্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে, সর্বোচ্চ ৭৫ পয়সা। তবে বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে ৮০ কিলোওয়াটের প্ল্যান্টে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় হচ্ছে ২০ পয়সা।
 
নতুন এই প্রযুক্তির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘হেকমত’ (হেভি সার্কুলার মুভিং অবজেক্টস ট্রিগিয়ারিং এনার্জি) কনভারশন টেকনোলজি।
 
শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নতুন এ প্রযুক্তি প্রদর্শনের (ডেমো) মাধ্যমে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
 
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রযুক্তির মূল উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক প্রধান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এম শমসের আলী।
 
সংবাদ সম্মেলনে উদ্ভাবক শাহিদ হোসেন বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে একাধিক প্রস্তাবনা পেয়েছি। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরের এক কোম্পানি কয়েক মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবনা দিয়েছে। ২০০৮ সালে কানাডার এক কোম্পানি ১৫০ কোটি টাকায় এ প্রযুক্তি কিনতে চেয়েছিল।
 
তিনি বলেন, আমি চাই, আমার প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ উপকৃত হোক। তাই, আমি টাকার কাছে প্রযুক্তি হস্তান্তর করিনি।
 
অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার নাসির আলম বলেন, প্রযুক্তিটি এখন আর কেবল ধারণা নয়। টঙ্গীতে প্রযুক্তিটি ব্যবহারের মাধ্যমে ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে গত দুই বছর ধরে। এরই মধ্যে আমেরিকায় পেটেন্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বাংলাদেশেও পেটেন্ট সংরক্ষণের কাজ চলছে।
 
তিনি বলেন, এমনিতেই বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী উদ্ভাবকই সব পেটেন্টের মালিক। এছাড়া পৃথিবীর সব বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তিটি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। পেটেন্ট পাওয়ার পরই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নালগুলোতে গবেষণাটি প্রকাশের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
 
প্রযুক্তির উপদেষ্টা ড. এম শমসের আলী বলেন, এটা একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। তেল, গ্যাস, কয়লা, সোলার ছাড়া আমাদের মতো এনার্জি হাঙ্গার দেশের জন্য এ এক অনন্য উদ্ভাবন।
 
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য অনেক জ্বালানি প্রয়োজন। এ জন্য জ্বালানির সব খাত ও প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। এই উদ্ভাবক এই প্রযুক্তি অনেক টাকায় বিক্রি করে সারাজীবন আরাম আয়েসের মাধ্যমে দিন কাটাতে পারেন। কিন্তু, তা দেশপ্রেম হবে না। উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশবাসী উপকৃত হলেই তা হবে বড় কাজ।
 
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও পদার্থ বিজ্ঞানী উদ্ভাবককে সহায়তায় দেশের ধনিক শ্রেণী ও সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
 
তিনি বলেন, প্রযুক্তিটি মেগা প্রজেক্টে নিতে হলে এখনই এটাকে ডিজিটালাইজেশন মনিটরিংয়ে রূপান্তর করতে হবে।
 
সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আল্ট্রাম্যাক্স পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।