ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

ভয়েই মন্ত্রিসভায় তুলিনি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৪
ভয়েই মন্ত্রিসভায় তুলিনি ছবি: জি এম মুজিবুর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আমি হলে দরিদ্র গ্রাহকদের একশ’ ওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ফ্রি দিতাম। এতে যে ব্যয় হতো তা ধনী গ্রাহকদের কাছ থেকে তুলে নিতাম।

এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।

তিনি বলেন, আমি অনেক দিন ধরেই বিষয়টি ভাবছি, মন্ত্রিসভায় তুলবো। কিন্তু কে কি বলেন- এ ভয়েই বিষয়টি মন্ত্রিসভায় তুলতে সাহস পাইনি।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় ‘দেশের বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি সেক্টরের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, জনগণ বিদ্যুৎ চায়। তারা তিনগুণ মূল্য বাড়ালেও দিতে রাজি আছেন। সে কারণে মূল্য নিয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে এখন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের উত্তরাঞ্চলের কয়লার চেয়ে যদি আমদানি করা কয়লা সাশ্রয় হয় তাহলে কেন সে কয়লা আনা হবে না।

এনার্জির (জ্বালানি) কারণেই সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মারপিট খুনা-খুনি হয় বলেও এ সময় মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রাইভেট সেক্টর এখন ড্রাইভিং সিটে বসে আছে। তাদের সরানোর কোনো সুযোগ নেই। সরকার তাদের সহযোগিতা করেই দেশকে এগিয়ে নিতে চায়।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যুতের ব্যাংক সুদের হার অনেক বেশি। ক্ষেত্র বিশেষে হিডেন চার্জসহ ২০ শতাংশের মতো পড়ে বলে শুনেছি। চার্জ বেশির কারণেই বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে। সুদ কম হলে বিদ্যুতের মূল্যও কমবে।

তিনি বলেন, বিদ্যুতে কোনো ব্যাড লোন নেই। যে ব্যাংকেই ঋণ দিয়েছে সময় মতো ফেরত পেয়েছে। তবে দুই-একটি ব্যতিক্রম ক্ষেত্র রয়েছে যারা পুরাতন মেশিন এনেছিলেন।

সচিব বলেন, এক সময় মার্চেন্ট পাওয়ার প্লান্টের কথা চিন্তা করা হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল সরকার কিনবে ৩০ শতাংশ আর ৭০ শতাংশ বাইরে বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু সে পরিকল্পনা বেশিদূর যেতে পারেনি।

সিনিয়র সচিব আবুল কালাম আজাদ আরো বলেন, সরকার ৩ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎখাত থেকে ভর্তুর্কি তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তাতে হয় তো গরিব লোকজনের কষ্ট হবে। তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ খান।

এ সময় তিনি বলেন, এই মুহুর্তে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর ফলে সাড়ে ৪৫ লাখ শ্রমিক, ৫০টি বাণিজ্যিক ব্যাংক, ১৬০ মিলিয়ন মানুষের খাদ্য যোগানে সহায়তা হচ্ছে। বার্ষিক উন্নয়নে (জিডিপি) যার ৮০ শতাংশ ভূমিকা রয়েছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদ্যুতের সঞ্চালন বিষয়টি খুবই চ্যালেঞ্জিং। বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের সুযোগ থাকলেও সঞ্চালনে বিনিয়োগের সুযোগ নেই। এ বিষয়টি ভেবে দেখার সময় এসেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দিক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুহু রুহুল্লাহ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৪, আপডেট ১৭৩৬

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।