ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

দাম বাড়ানোর প্রস্তাব

তোপের মুখে তিতাস গ্যাস কর্তারা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৪
তোপের মুখে তিতাস গ্যাস কর্তারা তিতাস গ্যাসের সাধারণ সভায় অতিথিরা/ছবি: জাহিদ সায়মন/বাংলানিউটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আবাসিকে গ্যাসের দাম দ্বিগুন করার প্রস্তাবনা দেওয়ায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কর্তাদের কঠোর সমালোচনা করলেন কোম্পানির শেয়ার হোল্ডাররা।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত তিতাস গ্যাসের ৩৩তম সাধারণ সভায় এই সমালোচনা করেন তারা।

শেয়ার হোল্ডার শফিকুল ইসলাম খান বলেন, ৪৫০ টাকার আবাসিকের গ্যাস ১ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একবারে ডবল করতে হবে কেন?

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, যিনি এই দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব তৈরি করেছেন, তিনি ‘গাঁজা’ খেয়ে প্রস্তাব করেছেন। তা না হলে এত বেশি প্রস্তাব করবেন কেন। ’

শফিকুল ইসলাম বলেন, তিতাস গ্যাস মুনাফায় আছে। প্রতি বছরেই মুনাফা বাড়ছে। তাহলে আবাসিকে কেন দ্বিগুন মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলো আমার বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ থেকে ৬শ’ টাকা করার পক্ষে মত দেন।

শেয়ার হোল্ডার দেলোয়ার হোসেন বলেন, শুনেছি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একশ’ ভাগ বেতন বাড়ানো হচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। সারা দেশে কতজন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন? তার উপর যদি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় তাহলে মানুষের ভোগান্তি আরো বাড়বে।
একেবারে দ্বিগুন না করে সামান্য পরিমাণে বাড়ানোর পক্ষে মত দেন তিনি।

শেয়ার হোল্ডার আব্দুল মতিন বলেন, পাইপ লাইনে বিপুল পরিমাণ চুরি ঠেকানো গেলে দাম এত বাড়ানোর প্রয়োজন পড়ে না।
চুরি বন্ধের জন্য পাইপ লাইনের পরিবর্তে সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহের পক্ষে মত দেন তিনি।

শেয়ার হোল্ডারদের এসব বক্তব্যের জবাবে তিতাস গ্যাসের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গ্রামের একটি পরিবার কাঠ অথবা সিলিন্ডার ব্যবহার করলে ২ হাজার থেকে ২৩শ’ টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু যারা পাইপ লাইনে গ্যাস ব্যবহার করছে তারা কেন কম দামে পাবে?
চুরি প্রসঙ্গ বলেন, নারায়ণগঞ্জের অনেক এলাকা এখন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। অল্প কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। শিগগিরই জোরালো অপরেশন চালানো হবে।

গ্যাস সংকট নিয়ে শেয়ার হোল্ডারদের অভিযোগ প্রসঙ্গে এই জ্বালানি সচিব বলেন, বর্তমানে ৬শ’ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ঘাটতি রয়েছে। আগামী জুন মাস নাগাদ বিবিয়ানা থেকে বাড়তি ৩শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া গেলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

তিতাস গ্যাস গত অর্থ বছরে ১৪ হাজার ৭৩২ মিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি করেছে। এতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৭ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা। যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি।

আলোচ্য বছরে কর পূর্ব ১ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। অন্যদিকে শেয়ার হোল্ডারদের ৩৮ শতাংশ হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি বিভিন্ন খাতে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ৬শ’ ১৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

সভায় কোম্পানির পরিচালকমণ্ডলী ও শেয়ার হোল্ডাররা অংশ নিয়েছেন। শেয়ার হোল্ডারদের বক্তব্য দেওয়ার সময় কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও জ্বালানি সচিবের হস্তক্ষেপে এগিয়ে চলে সাধারণ সভা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।