ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও, পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ২০

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১১
জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও, পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ২০

ঢাকা: বহুজাতিক কোম্পানি কনোকো ফিলিপসকে সমুদ্রের গ্যাস ব্লক ইজারা দেওয়া প্রচেষ্টার প্রতিবাদে আয়োজিত জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এ ঘটনায় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিভিন্ন সংগঠনের ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক রেহনুমা আহমেদ রয়েছেন। এছাড়া তোফাজ্জল, মিশু, রণজিৎ, ফেরদৌস, মিথুন, জুনায়েদ আহত হয়েছেন বলে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ দাবি করেছেন।

আনু মুহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশের প্রশাসন দুষ্টকে পালন আর শিষ্টের উপর নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। যারা দুর্নীতি এবং লুটপাটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে তাদের পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। আর আমরা দেশের স্বার্থের কথা বলতে এসে নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। ’

তিনি বলেন, ‘সরকার যত নির্যাতন করুক তবুও আমরা দেশের সম্পদ বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দিতে দেব না। প্রয়োজন হলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হবে। ’

তিনি এ আন্দোলনকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দেশের সচেতন জনগণকে এতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘৭১ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ৪০ বছর পরে হচ্ছে। একইভাবে এ সময়ের দেশের স্বার্থ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া নব্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলার মাটিতেই করা হবে। ’

প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে বাংলার কাশিম বাজার কুঠি এবং শেখ হাসিনাকে নব্য মীর জাফর দাবি করে বলেন, ‘এখানে বসেই দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র পরিচালিত হচ্ছে। ’

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে যাচ্ছিল। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ঘেরাওয়ের আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, আনু মুহাম্মদ, কলামিস্ট আবুল মকসুদ প্রমুখ।

এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং আগামী ১৬ জুন কনোকো ফিলিপস এর সঙ্গে সাক্ষরিত হতে যাওয়া চুক্তি না করার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

কনোকো ফিলিপসের সঙ্গে উৎপাদন অংশদারী চুক্তি (পিএসসি) ২০০৮ এর আওতায় সমুদ্রের গ্যাস ব্লক (১০ ও ১১) ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেয় জাতীয় কমিটি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে একটি মিছিল দৈনিক বাংলার মোড় ঘুরে প্রেসক্লাবের পাশ দিয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দিকে যাওয়ার পথে পুলিশ কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে পথ আটকে দেয়। এ সময় মিছিল কারিরা কাঁটা তারের বেড়া সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।

র‌্যালিতে আয়োজক সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির নেতাকর্মীরা ব্যানার নিয়ে অংশ নেন।

সরকার এই কনোকো ফিলিপসের সঙ্গে চুক্তি সাক্ষর থেকে বিরত না থাকলে ২০ জুন সারাদেশে হরতাল আহ্বানের চিন্তা করা হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।