ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

প্রশ্নবানে জর্জরিত ওজোপাডিকোর এমডি!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৯
প্রশ্নবানে জর্জরিত ওজোপাডিকোর এমডি! সংবাদ সম্মেলনে ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী শফিক উদ্দিন। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: বিদ্যুতের প্রি-প্রেইড মিটার বন্ধের দাবিতে খুলনায় চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো)।

সোমবার (২৪ জুন) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে বিদ্যুতের প্রি-প্রেইড মিটার স্থাপনের বিষয়ে উত্থাপিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হন ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. শফিক উদ্দিন।



সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নবানে জর্জরিত হলেও কোনো প্রশ্নেরই সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তিনি। এমনকি তিনি তার ব্যক্তিগত অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবও এড়িয়ে যান।

এক পর্যায়ে এমডি নিজে এড়িয়ে গিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত প্রি পেমেন্ট মিটার প্রকল্প পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রকিবুল ইসলামকে বলেন।

দীর্ঘ দুই ঘণ্টার সংবাদ সম্মেলনে ওজোপাডিকোর এমডি ও প্রকল্প পরিচালক এবং প্রকৌশলী সাংবাদিকদের প্রশ্নের মোকাবিলা করতে না পেরে এক পর্যায়ে এমডি বিদ্যুতের প্রি-প্রেইড মিটার সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের জন্য গ্রাহকদের কাছে ছয় মাস সময় চান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ওজোপাডিকো (বিউবো এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান) দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা শহরে এবং ২০টি উপজেলায় বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রাহক আঙ্গিনায় নিরবিচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৫ সালে সহস্রাব্দ উন্নয়ন অভীষ্ট (এমডিজি) অর্জনের পর টেকসই উন্নয়নের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ২০৩০ এর এজেন্ডা গৃহীত হয়েছিল। এজেন্ডাটিতে ১৭টি সার্বজনীন ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) এবং ১৬৯টি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তার মধ্যে বিদ্যুৎখাত সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ৭।

সম্প্রতি খুলনার কয়েকটি স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে প্রি-পেইড মিটার সম্পর্কে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কর্তৃক নির্ধারিত বিদ্যুতের মূল্যহার (ট্যারিফ রেট) ও চার্জ (ডিমান্ড চার্জ, ভ্যাট) মোতাবেক প্রি-পেইড মিটার থেকে টাকা কর্তন করা হয়। যা পূর্বের পোস্ট পেইড/ডিজিটাল মিটারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। এছাড়া অতিরিক্ত কোনো চার্জ কর্তন করার সুযোগ নাই।

সংবাদ সম্মেলনে ওজোপাডিকোর এমডি প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপনের ফলে গ্রাহকরা যে সব সুবিধাদি পাচ্ছেন তার বেশ কিছু বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার শটসার্কিট জনিত দুর্ঘটনা রোধ করে গ্রাহকের বিদ্যুৎ ব্যবহার নিরাপদ করে। স্মাট প্রি-পেমেন্ট মিটারিং পদ্ধতিতে ভেন্ডিং স্টেশন এবং মোবাইল ভেন্ডিংয়ের মাধ্যমে বিল পরিশোধ সহজ সাধ্য যা এনালগ/ডিজিটাল মিটার পদ্ধতির মিটার রিডিং সংক্রান্ত যাবতীয় ঝামেলা থেকে মুক্ত। ব্যবহারকারী পরিবারের বাজেট অনুযায়ী বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যায় বা যেকোনো গ্রাহক বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে পারে। মিটারে ব্যালান্স শেষ হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে মিটার হতে একশত টাকা অগ্রিম ব্যালান্স নেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। সাপ্তাহিক ছুটি (শুক্রবার ও শনিবার), সরকারি ছুটির দিনে এবং অফিস সময়ের পরে (বিকেল ৪ থেকে পরদিন সকাল ১০ টা পর্যন্ত) মিটারে ব্যালান্স না থাকলেও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় না। গ্রাহকরা নিট বিদ্যুৎ বিলের ওপর এক শতাংশ হারে রিবেট প্রাপ্ত হচ্ছেন।

উল্লেখ্য, খুলনায় প্রিপেইড মিটারে বিদ্যমান দুর্নীতি প্রতিরোধে সংগ্রাম কমিটি গঠিত করা হয়। এ কমিটি ওজোপাডিকোর দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রায় এক মাস ধরে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৯
এমআরএম/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।