ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সরকারি সৌর প্রকল্পে ৩০ শতাংশ কোটা বরাদ্দের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
সরকারি সৌর প্রকল্পে ৩০ শতাংশ কোটা বরাদ্দের দাবি

ঢাকা: সরকারি সৌর কর্মসূচিতে দেশীয় সোলার প্যানেল/মডিউল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠাগুলোর জন্য ৩০ শতাংশ বিশেষ কোটা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে সোলার মডিউল ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এসএমএমএবি)। 

রোববার (২৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সোলার খাতের উন্নয়নে স্থানীয় প্রস্তুতকারীদের যৌক্তিক কোটা বরাদ্দ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এসময় এসএমএমএবির পক্ষে বেশ কিছু দাবিও তুলে ধরা হয়।

সংগঠনের সভাপতি মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন এসব দাবি জানিয়ে বলেন, এ খাতে গড়ে ওঠা স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা দেশের সমগ্র চাহিদার যোগান দেওয়ার পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু দেশীয় পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে সহায়ক কোনো সরকারি নীতিমালা না থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠানই উৎপাদনের আগ্রহ হারাবে।

সম্প্রতি পিভি (ফটোভোল্টেইক/সোলার) মডিউল রপ্তানিতে ১০ শতাংশ ভর্তুকি ঘোষণা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গুণগতমান বজায় না রেখে বর্তমানে চায়না ও ভারত থেকে কম দামে সোলার প্যানেল আমদানি হচ্ছে। যা দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অসম প্রতিযোগিতায় ফেলছে। এ বিষয়টিও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।  

এসএমএমএবির সাধারণ সম্পাদক গোলাম বাকী মাসুদ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এবং সংগঠনের ইতিহাস, সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা ও পূর্ণাঙ্গ দাবিগুলো উপস্থাপন করেন।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন- এসএমএমএবির সিনিয়র সহ-সভাপতি মশিউর রহমান, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আনসার উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ আবদুল হালিম মৃধা, সদস্য তানজিল চৌধুরী প্রমুখ।

দেশে সোলার মডিউল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন এসএমএমএবির নেতারা বলেন, সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে চাহিদার ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন করা হবে। যার পরিমাণ হবে প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট। বর্তমানে দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদিত ৬০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের সিংহভাগ (৩৭০ মেগাওয়াট) আসছে প্রায় ৬৮ লাখ সোলার প্যানেল থেকে, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রকল্প হিসেবে পরিচিত।

সংগঠনের নেতারা বলেন, সংগঠনটির ৯টি সদস্য প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুতের সোলার প্যানেল উৎপাদনে সক্ষম, যা দেশের বার্ষিক চাহিদার সমান। বর্তমানে দেশীয় বাজারে চায়না ও ভারত থেকে আমদানিকৃত মানহীন কমদামি প্যানেল স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন নিরুৎসাহিত করছে অথবা তারা রপ্তানির দিকে ঝুঁকছে। ব্যাপক হারে আমদানিকৃত নিম্নমানের এসব সোলার প্যানেলের মান নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তারা। যথা সময়ে সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে পাবলিক ও প্রাইভেট সেক্টর সম্মিলিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন নেতারা।

এসময় বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল- এ খাতে দেশী শিল্পকে উৎসাহিতকরণে নূন্যতম ১০-১৫ বছর মেয়াদী ঋণ দেওয়া, গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে সর্বনিম্ন ৪ থেকে ৫ শতাংশ সুদের হার নির্ধারণ, এ খাতের বিকাশে মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে ত্রৈমাসিক সভার আয়োজন, স্থানীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় সোলার প্যানেল আমদানি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন, আমদানিকৃত সৌর যন্ত্রাংশের মান নিশ্চিতকরণে নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন এবং এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব প্রতিষ্ঠা, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ সরকারের সোলার বিষয়ক সব কমিটিতে এসএমএমএবির একজন প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, সরকারের রুফটপ প্রকল্প, সৌর সেচ প্রকল্প, নেট মিটারিং প্রকল্প, টিআর/কাবিখা, কাবিটা, গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণসহ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রিক সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে দেশীয় উৎপাদনকারী শিল্পের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং এ বিষয়ে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়ন, সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবহারকারীদের আর্থিক (যেমন ট্যাক্স-ভ্যাট অব্যাহতিসহ উৎসাহব্যঞ্জক) প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৯
ইএআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।