ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৩১ পয়সা বাড়তে পারে: বিইআরসি চেয়ারম্যান

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১২
পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৩১ পয়সা বাড়তে পারে: বিইআরসি চেয়ারম্যান

ঢাকা: বিতরণ সংস্থাগুলোর জন্য বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর ঘোষণা আগামী সপ্তাহে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন বিইআরসি’র চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন। একই সঙ্গে গ্রাহক পর্যায়ে অন্তবর্তীকালীন ৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন তিনি।



সোমবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন’র (বিইআরসি) হলকক্ষে এ সংক্রান্ত গণশুনানি শেষে সৈয়দ ইউসুফ হোসেন এসব কথা জানান। পাইকারি বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটে সর্বোচ্চ ৩১ পয়সা করে বাড়তে পারে বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন।

শুনানি গ্রহণ করেন বিইআরসি’র চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন, কমিশন সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ ও প্রকৌশলী ইমদাদুল হক।

শুনানিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) পাইকারি (বাল্ক) বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৪১ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। এ প্রস্তাবের পর বিইআরসি’র মূল্যায়ন কমিটি ২২ পয়সা দাম বাড়ানোর সুপারিশ করে। বর্তমানে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য ইউনিট প্রতি তিন টাকা ৭৪ পয়সা রয়েছে।

পিডিবির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে কম দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করায় তিন হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা ঘাটতি হয়।

এছাড়া, ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বর জ্বালানি তেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ানো হয়। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ১৩৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ঘাটতি হয়।

পিডিবি’র চেয়ারম্যান এসএম আলমগীর কবির জানান, ২০১১-১২ অর্থবছরে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার কথা থাকলেও ৩ হাজার ৭ শ’ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে।

পিডিবি’র প্রস্তাব উস্থাপন করেন সংস্থাটির পরিচালক (প্লানিং) মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর এইচএফও ৩০ শতাংশ এবং এইচএসডি ১৫ শতাংশ ফ্যাক্টর হিসেবে চালানো হয়েছে। চলতি সেচ মৌসুমে এসব কেন্দ্র যথাক্রমে ৬০ ও ৩০ শতাংশ ফ্যাক্টরে চালাতে হবে। এতে গড়ে বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি দাম ৩১ পয়সা বেড়ে যাবে।

‘এতে করে বিদ্যুতের বর্তমান উৎপাদন ব্যয় ৫ টাকা ২৯ পয়সা থেকে বেড়ে ৫ টাকা ৭০ পয়সা হবে। ’

‘যে কারণে দাম বাড়ানো জরুরি। আর তা না হলে দিনে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লোডশেডিং দিতে হবে বলেও জানান পরিচালক প্লানিং। ’

পিডিবি আগামী ৪ মাসে (সেচ মৌসুমে)মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক যথাক্রমে ৬ হাজার ১৮২ দশমিক ২৮ ও ১ হাজার ৫৪৫ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টা।

গড়ে মাসে তরল জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যূৎ উপাদিত হবে ১ হাজার ৫৪৫ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টা। যাতে প্রায় ২৮২ মিলিয়ন লিটার জ্বালানি তেলের প্রয়োজন হবে। ৫ টাকা জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় প্রতিমাসে বাড়তি ১ হাজার ৪০৯ টাকা খরচ হবে।

বিইআরসি’র চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন বলেন, কমিশন’র ইউনিট প্রতি ২২ পয়সা দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিষয়ে পিডিবি আপত্তি দিয়েছে। তাদেরকে আগামী ২ দিনের সময় দেওয়া হয়ে তাদের বক্তব্যের প্রমাণ তুলে ধরার জন্য।

এক প্রশ্নের জবাবে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, ‘যতো দেরি হবে ততোই ক্ষতি বাড়বে। তাই আমরা আগামী সপ্তাহেই ঘোষণা দেবো। ’ তিনি পাইকারির পাশাপাশি গত বছরের মতো খুচরা (গ্রাহক পর্যায়ে) অন্তবর্তীকালীন দাম বাড়নো হতে পারে বলেও জানান।

এর আগে ২৪ নভেম্বর এক ঘোষণায় দাম বাড়িয়ে ডিসেম্বর থেকে গড়ে ৩ দশমিক ২৭ টাকা ও ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ দশমিক ৭৪ টাকা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১২

সম্পাদনা: রানা রায়হান ও অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।