ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

এবার জার্মানিতেও বৃটিশ-সুইডিশ টিকা নেওয়া স্থগিত

বিটু বড়ুয়া, বার্লিন, জার্মানি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
এবার জার্মানিতেও বৃটিশ-সুইডিশ টিকা নেওয়া স্থগিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা

অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার পর পরই রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাধা, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, বমি বমি অবস্থা, জ্বরাক্রান্ত হওয়াসহ সারা শরীরে অস্বস্তি বোধের কারণে প্রতিবেশী দেশ ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও ইতালিসহ আরু বেশ কটি দেশের মতো অবশেষে জার্মানিও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে অক্সফোর্ড ও বৃটিশ-সুইডিশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অুফ১২২২।  

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পাহন দেশটির স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পাউল এয়ার্লিশের সঙ্গে কথা বলে টিকা নিতে আপাতত নিষিদ্ধের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।


 
এদিকে টিকাটির মান ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মেডিসিন এজেন্সিও।  

বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) জানা যাবে ইইউর ২৭ দেশে টিকা নিতে কোনো বাধা থাকবে কি-না। অথবা আরও গবেষণার প্রয়োজনীতা আছে কি-না। যাচাই করা হবে অনুমোদনের বিষয়টিও।

ইইউর মেডিসিন এজেন্সি গত ২৯ জানুয়ারি ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সির (ইএমএ) অনুমোদন পাওয়ার পর থেকেই ইউরোপের ২৭টি দেশসহ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলোতে অক্সফোর্ডের এ টিকা নেওয়াদের শরীরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে উঠে আসে।  

এর আগে অতিমাত্রায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে প্রতিবেশী দেশ ডেনমার্ক ও নরওয়ের সঙ্গে আইসল্যান্ডে টিকা নেওয়াদের রক্তনালীতে জমাট বাধাসহ এক নারীর মৃতুতে আগামী ১৪ দিনের জন্য এ টিকা নেওয়া নিষিদ্ধ করেছে দেশগুলোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।  

টিকা দেওয়ার আগে পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন ও প্রয়োগ রাজনীতিবিদদের অপরিপক্ক চিন্তা-ভাবনার ফসল বলছে দেশটির সাধারণ নাগরিকরা।  

এ প্রসঙ্গে জার্মান এক নাগরিক বলেন, আমার সোজা কথায়, টিকাটির অনুমোদনসহ পুরো স্ট্র্যাটেজি ছিল অপরিপক্ক একটি সিদ্ধান্ত। এখন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে মনে হচ্ছে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছি। শুধু আমি না বৃটিশ-সুইডিশ টিকাটির সরবরাহ মান, গ্রহণ ও কার্যকারিতা  নিয়েও অন্য নাগরিকরাও অসুখী। টিকাটির সবচেয়ে মাইনাস পয়েন্ট ৬৫ বছরের ওপরে মাত্র ৩ থেকে ৫ শতাংশ কার্যকরী।

তবে ব্রিটেনের ওষুধ এবং স্বাস্থ্যদ্রব্য উৎপাদন রেগুলেটরি এজেন্সি মেডিসিন এবং স্বাস্থ্যসেবা পণ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এমএইচআরএ) অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রেজেনেকার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন।  

সংস্থাটির প্রধান বলছে ইইউর এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। সংস্থাটির মুখপাত্র ফিল ব্রায়ান আবারও বলেন, টিকা নেওয়ার স্থানে হালকা ব্যথা হতেই পারে এবং মানবদেহে যেকোনো অংশে রক্ত জমাট বাধাও একটা সাধারণ বিষয়, এর সঙ্গে অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার কোনো সম্পর্ক নেই। এই অবস্থায় জার্মান প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তেও শঙ্কিত জার্মানিতে বসবাসরত প্রবাসীরাও।

জার্মান স্বাস্থ্যবিভাগের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ১৬ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি মানুষকে অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা দেওয়া হয়েছে। জার্মানিতে বৃটিশ-সুইডিশ সংস্থাটি টিকা সরবরাহ করেছে ৩ লাখ ৬২ হাজরেরও বেশি।  

বাংলাদেশ সময়: ০২৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।