ভোলা: ভোলায় সরিষার চাষে বিগত বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে চাষিদের।
বিগত সময়ের তুলনায় এবার বাজার দাম ভালো এবং রোগ-পোকার আক্রমণ না থাকায় সরিষা আবাদে কৃষকদের আগ্রহ অনেকটা বেড়ে গেছে। এমন বাস্তবতায় ভবিষ্যতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলায় সরিষার তেল রপ্তানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কৃষকদের বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতে সরিষার সমারোহ। এ যেন সবুজের বুকে হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে চারপাশ। ফুলের মৌ-মৌ গন্ধে মধু আহরণে ব্যস্ত মৌমাছির ঝাঁক। বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ ফুলের সুভাস।
এমনি মনোমুগ্ধকর চিত্র দেখা গেছে ভোলার কৃষকদের সরিষা ক্ষেতে। এবার ফলন ভালো হওয়ায় বেশ খুশি চাষিরা। কয়েকদিন পরেই ফলন ঘরে তুলবেন তারা।
লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের কৃষক মোস্তফা মিয়া বলেন, এ বছর তিনি ১০০ শতাংশ জমিতে ৮ হাজার টাকার খরচ করে সরিষার আবাদ করেছেন। এখন ক্ষেতে ফুল ধরেছে। ফলন অনেকটা ভালে। ইতোমধ্যে ছড়া চলে আসছে, মধু আহরণ করছে মৌমাছি। এবার ক্ষেতে পোকার আক্রমণ নেই।
কৃষক মো. নুরুন্নবী ২৪ শতাংশ জমিতে এবং কালাম ৫৬ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করে খুশি। তারা জানান, বিগত বছরের তেমন লাভ হয়নি। এ বছর আমাদের লাভ হতে পারে। কারণ এবার বাজার দামও অনেক ভালো।
কৃষক আবু তাহের বলেন, ৪ হাজার টাকা খরচ করে ৩২ শতাংশ জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। এখন ক্ষেত পরিচর্যা করছি। এবার বাজার দামও ভালো। গত বছর প্রতি মন সরিষা বিক্রি হতো ৩ হাজার টাকায়, এবার তা বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার টাকা।
সরিষা চাষি নুর মোহাম্মদ বলেন, কীটনাশক, জৈব-কেঁচো সারসহ কিছু সারের দাম বাড়তির দিকে থাকলেও এবার আমরা উৎপাদন খরচ পুশিয়ে ঘুরে দাড়াতে পারবো বলে আশা করছি।
কৃষি বিভাগ জানান, এবার সরিষার আবাদ বেশি হওয়ায় হেক্টর প্রতি ১৩'শ কেজি বীজ উৎপাদন হলেও তেল উৎপাদন হবে ৪৫৫ কেজি।
ভালো ফলনের এমন ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে তেল রপ্তানি সম্ভব বলে মনে করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর।
তিনি বলেন, দিন দিন জেলায় সরিষার আবাদ বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। কৃষি বিভাগ এ বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে। গত বছর জেলায় ৫ হাজার ৩৮৭ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫০ হেক্টর। যা থেকে উৎপাদন হবে ৩ হাজার ৬৬২ মেট্রিক টন তেল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৩
এসএম