ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

১০ লাখে বিক্রি নাটোরের ‘কালা তুফান’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২৩
১০ লাখে বিক্রি নাটোরের ‘কালা তুফান’

নাটোর: দীর্ঘ চার বছর লালন-পালনের পর নাটোরের আলোচিত ‘কালা তুফান’ নামে একটি ষাঁড় গরু ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন মালিক আমিরুল ইসলাম।  

গত সোমবার (২৬ জুন) সিলেটের সামসুল আলম নামে এক ক্রেতার কাছে তিনি এই ষাঁড়টি বিক্রি করেন।

দাম ১০ লাখ হলেও ক্রেতা তাকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বকশিশ দিয়েছেন। এনিয়ে কালা তুফানের দাম পড়েছে সাড়ে ১১ লাখ টাকা।

বুধবার (২৮ জুন) দুপুরের দিকে কালা তুফানের মালিক আমিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  

তিনি জানান, এই দামে গরু বিক্রি করে তার প্রায় ৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। পাশাপাশি মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য দিয়ে প্রচারণার কারণে তার অনেক ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।  

আমিরুল নাটোর সদর উপজেলার হয়বতপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং প্রাণি সম্পদ অফিসের তালিকাভুক্ত একজন খামারি।  

আমিরুল জানান, প্রায় চার বছর আগে ৬ মাস বয়সের ষাঁড়টি স্থানীয় এক খামারির কাছ থেকে ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকায় কিনেছিলেন। হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি দেখতে একেবারে কুচকুচে কালো এবং লুদলুদে। এজন্য তার নাম রাখ হয় কালা তুফান। সেই সময় গরুটির ওজন ছিল প্রায় ৬ মণ।  

পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে শুরু থেকেই ষাঁড়টিকে চিড়া, গুড় ও অ্যাংকরের ভুসি খাওয়াতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত ওই ষাঁড়টি লম্বায় সাড়ে ৯ ফুট এবং উচ্চতায় সাড়ে ৭ ফুটের মতো হয়। ষাঁড়টিকে প্রতিদিন আট কেজি ভুসি, দুই কেজি চিড়া ও দুই কেজি গুড় খাওয়াতে হতো। কালা তুফানের পেছনে আমিরুলের প্রতিদিন অন্তত ১ হাজার ৩০০ টাকা খরচ হতো।

তিনি বলেন, ষাঁড়টি লম্বায় সাড়ে ৯ ফুট এবং উচ্চতায় সাড়ে ৭ ফুট হয়েছিল। ওজনও প্রায় ৩০ মণের কাছাকাছি হবে। বিশাল আকৃতির এ ষাঁড়টি ২৫ লাখ টাকা দাম চাওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক প্রচার হয়েছে। এতে মানুষ ষাঁড় দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছেন। কিন্তু গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সঠিক তথ্য উপস্থাপন না করে বিকৃতি তথ্য উপস্থাপন হয়েছে। এজন্য ক্রেতা আসলেও দেখে অনেকে দাম শুনে ফিরে গেছেন।  

এতে তার ক্ষতি হয়েছে। পরে তিনি পুঁজি হাতে পেতে সিলেটের এক ক্রেতার কাছে নিজ বাড়ি থেকেই ষাঁড়টি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। আর ওই ক্রেতাও খুশি হয়ে তাকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বকশিশ হিসাবে দিয়েছেন। এই দামে ষাঁড়টি বিক্রি করে অনেক লোকসান হয়েছে। ষাঁড়টি এবার বিক্রি করতে না পারলে তাঁর পক্ষে লালন-পালন করা কঠিন হয়ে পড়তো। তাই এই দামেই বিক্রি করেছেন। অথচ এই কোরবানির ঈদে ষাঁড়টি ২৫ লাখ টাকায় বিক্রির আশা করেছিলেন তিনি। আগামীতে গরু লালন-পালন করলেও এই ধরনের ঝুঁকি আর নেবেন না বলে তিনি বাংলানিউজকে জানান।  

নাটোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, ষাঁড়টি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছে। এটিকে যে খাবার খেতে দেওয়া হয়, তা স্বাভাবিক খাবার। তাই এটির শারীরিক গঠন সুন্দর হয়েছে। তবে ষাঁড়টির বিক্রি দাম আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।