ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

হালতিবিলে ৯৪৩৮ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৩
হালতিবিলে ৯৪৩৮ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

নাটোর: চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে নাটোরের হালতিবিল অধ্যুষিত নলডাঙ্গা উপজেলায় ৯ হাজার ৪৩৮ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মৌসুমে মাছের উৎপাদন হয়েছিল ৮ হাজার ৯২১ মেট্রিক টন।

এর মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে নদী-খাল-বিলে উৎপাদিত মাছের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ও পুকুরে চাষকৃত মাছের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৪২১ মেট্রিক টন।

এবার মাছের উৎপাদন বাড়াতে ৬টি বিল নার্সারি প্রকল্পের আওতায় ১২ লাখ রুই জাতীয় রেণু পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ১০টি অভয়াশ্রমের কারণে মাছের উৎপাদন ১৪০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে এবারও প্রায় ২৫০ কোটি টাকার মাছ উৎপাদন হবে।

সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও সমৃদ্ধি অর্জনে গৃহীত কার্যক্রম বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো র্স্মাট বাংলাদে ‘ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) থেকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু হবে। এ উপলক্ষে আজ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে নলডাঙ্গা উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর।

নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজিনা আক্তারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন- উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম সরদার, উপজেলা কৃষি অফিসার ফৌজিয়া ফেরদৌস, উপজেলা মৎস্য অফিসার সঞ্জয় কুমার সরকার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার সানা উল্লাহ, উপজেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান, নলডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, স্থানীয় মৎস্য আড়তদার হাবিবুর রহমান, মৎস্যজীবী শিশির চন্দ্র দাস, শহীদ উদ্দিন প্রমুখ।  

এসময় সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, মৎস্যচাষি, মৎস্যজীবী, আড়তদার ও খাদ্য বিক্রেতাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে নলডাঙ্গা উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ব্যানার, ফেস্টুনসহ বর্ণাঢ্য র‌্যালি, বারনই নদীতে পোনা মাছ অবমুক্তকরণ, আলোচনাসভা, স্থানীয় পর্যায়ে সফল মৎস্যচাষি ও উদ্যোক্তাকে পুরস্কার দেওয়া এবং মৎস্য সেক্টরে সরকারের অগ্রগতি ও সাফল্য বিষয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ের মৎস্যচাষি ও মৎস্যজীবীদের সঙ্গে মতনিমিয়, সুফলভোগীদের প্রশিক্ষণ ও উপকরণ বিতরণ করা হবে।

নলডাঙ্গা উপজেলা মৎস্য অফিসার সঞ্জয় কুমার সরকার বাংলানিউজকে জানান, এই উপজেলায় ১ লাখ ২৯ হাজার ৩০৪ জন জনসংখ্যার জন্য বছরে চাহিদা ৩ হাজার ২০০ মেট্রিক টন মাছ। সেখানে খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত মাছ উৎপাদন হয় প্রায় ৫ হাজার ৭২১ মেট্রিক টন। যা বাজারজাত করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন এখানকার ২ হাজার মৎস্যচাষি, ২ হাজার ৩০৯ জন মৎস্যজীবী, আড়তদারসহ সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ সুফল পাচ্ছে।

তিনি বলেন, আগে জনপ্রতি প্রতিদিন গড়ে ৬০ গ্রাম মাছ খেত, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ দশমিক ৮০ গ্রাম। বিপন্ন প্রায় মাছের প্রজাতির সংরক্ষণ, অবাধ প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে সার্বিক মাছের উৎপাদন বেড়েছে। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নদ-নদী, খাল-বিল ও অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে অভয়াশ্রম স্থাপন এবং বিল নার্সারি স্থাপনের ফলে নলডাঙ্গা উপজেলায় মাছের উৎপাদন ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। পাশাপাশি সিলন, বউ বা রানী মাছ, মেনি ও রিঠা মাছের প্রাচুর্য্যতা বেড়েছে।  

তিনি আরও বলেন, নলডাঙ্গা উপজেলায় মাছের উৎপাদন বাড়াতে ১০টি অভয়াশ্রম স্থাপন ও বিল নার্সারি প্রকল্প গ্রহণ, চাষিদের আধুনিক প্রশিক্ষণ সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এতে বিলুপ্ত প্রায় এবং বিপন্ন ও দুর্লভ প্রজাতির মাছের প্রাপ্যতা বাড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।