ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

কৃষিপণ্যের রেডিয়েশন ভিত্তিক প্রক্রিয়াজাতকরণে রাশিয়ার সহযোগিতা নেবে বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৩
কৃষিপণ্যের রেডিয়েশন ভিত্তিক প্রক্রিয়াজাতকরণে রাশিয়ার সহযোগিতা নেবে বাংলাদেশ

ঢাকা: কৃষিজাত পণ্যের রেডিয়েশন ভিত্তিক প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং গবেষণার লক্ষ্যে রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশে আরপিপি-৩৫০ গামা রেডিয়েশন স্থাপনার আধুনিকীকরণের কাজ চলছে।  

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

 
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল রাশিয়ার লেনিনগ্রাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অবস্থিত একটি আইসোটোপ উৎপাদন কারখানা পরিদর্শন করেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন ইনস্টিটিউট অব রেডিয়েশন অ্যান্ড পলিমার টেকনোলজিসের প্রকল্প পরিচালক রুহুল আমীন খান। প্রতিনিধিদলকে স্থাপনাটি ঘুরে দেখানোর পাশাপাশি আইসোটোপ, বিশেষ করে কোবাল্ট-৬০ এর উৎপাদন প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া হয়।

কারখানা পরিদর্শন শেষে রুহুল আমীন তার মন্তব্যে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ও রাশিয়া পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিয়ে যৌথভাবে কাজ করছে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, এবং রাশিয়া কর্তৃক বাংলাদেশের মাল্টিফাংশনাল প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র এবং নিউক্লিয়ার মেডিসিনের জন্য আইসোটোপ সরবরাহ।  

তিনি বলেন, রোসাটমের সহযোগিতায় আমরা বাংলাদেশে একটি গবেষণা রিয়্যাক্টর স্থাপনের পরিকল্পনা করছি। এ জাতীয় রিয়্যাক্টর থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন এবং ভবিষ্যতের প্রকল্পগুলোতে তা প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন।

রোসাটমের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগ রসএনার্গোএটমের উপ-মহাপরিচালক নিকিতা কনস্তানতিনোভ জানান, রাশিয়ায় রেডিও আইসোটোপ উৎপাদনের মূল প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভূমিকা পালন করছে রসএনার্গোএটম। বিশ্ব বাজারে রাশিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চ্যানেল রিয়্যাক্টরে উৎপাদিত স্টেরিলাইজেশন কোবাল্টের শেয়ার শিগগিরই ৩০ শতাংশে উন্নীত হতে যাচ্ছে।

লেনিনগ্রাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রেডিয়েশন টেকনোলজি বিভাগের প্রধান আলেক্সি কন্দ্রাতিয়েভ বলেন, আমাদের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত আইসোটোপ গত ২০ বছরের অধিক সময় ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। আরবিএমকে-১০০০ রিয়্যাক্টরের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত না করে এটি বিরতিহীনভাবে আইসোটোপ উৎপাদন করতে সক্ষম।

রসএনার্গোএটম উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে বেশ কিছু আইসোটোপ রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন শিল্পে, যেমন খাদ্য, মেডিসিন এবং পরিবেশগত কিছু সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হচ্ছে।

উদাহরণ স্বরূপ, কোবাল্ট-৬০ বিভিন্ন মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সামগ্রীর স্টেরিলাইজেশনে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া আইসোটোপটি বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের ডিজইনফেকশন ও সেলফ লাইফ বৃদ্ধি ও পদার্থের পলিমার গুণাবলী পরিবর্তনের কাজে বহুল ব্যবহৃত। মেডিকেল আয়োডিন-১২৫ এবং আয়োডিন-১৩১ থাইরয়েড ক্যানসার নির্ণয় ও চিকিৎসায় ব্যবহৃত রেডিওফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।  

হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সিন্টিগ্রাফি এবং সিঙ্গেল-ফোটন টমোগ্রাফিতে টেকনিশিয়ান-৯৯এম আইসোটোপ ব্যবহৃত হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে লেনিনগ্রাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সামারিয়াম- ১৫৩ নামক আইসোটপটির উৎপাদন শুরু হবে। রাশিয়ার কুর্স্ক এবং স্মলেন্সক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতেও আইসোটোপ উৎপাদনের সম্ভাব্যতা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৩
এসকে/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।