লিচু চাষি ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের সিংহভাগ লিচু উৎপাদন হয় দিনাজপুরে। আর দিনাজপুরের বেশী লিচু চাষ হয় বীরগঞ্জ-কাহারোল উপজেলায়।
কাহারোল এর মকুন্দপুর গ্রামের মোস্তফার বাগানে গাছে গাছে লিচু পেকে টসটসে হয়ে গেছে। বাগানেই কথা হয় পরিচর্যাকারী আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বাগনটি প্রায় ৩ বিঘা জমি নিয়ে করা। এখানে বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না থ্রি জাতের লিচু পাওয়া যায়। সবার আগে পাকে মাদ্রাজি, এরপর চায়না থ্রি ও বোম্বাই।
লিচু গাছে বাঁধা ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে তিনি বলেন, এবার আগাম লিচু পাওয়া যাচ্ছে। এখন বাজারে যে লিচু দেখা যায় এসব লিচু আসলে জুনের প্রথম সপ্তাহে পাওয়ার কথা। এবার বেশী তাপ থাকায় পরিপক্ক না হতেই লিচু লাল হয়ে গেছে। যে কারণে এবারের লিচুতে স্বাদ নেই, মিষ্টিও কম।
তার এই কথার সঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’র তথ্যের মিল রয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, জুনের প্রথম সপ্তাহেই পাকা লিচু পাওয়া যাবে।
জাকির হোসেন নামে এক লিচু ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, এবার লিচুর সাইজ ছোট, স্বাদও কম। এর কারণ অতিরিক্ত গরম। সময়ের আগেই বাজারে লিচু উঠেছে। আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ায় অনেক লিচু ফেটে যাচ্ছে। এতে এবার যারা বাগান কিনেছেন তাদের লোকসানে পড়া লাগতে পারে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর তথ্য অনুযায়ী, দেশে বেশ কয়েক ধরনের লিচু পাওয়া যায়। এরমধ্যে বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না থ্রি, মঙ্গলবাড়ি, মোজাফ্ফরপুরী, বেদানা, বারি-১, বারি-২, বারি-৩ ইত্যাদি প্রজাতি উল্লেখযোগ্য। বোম্বাই লিচু টকটকে লাল ও একটু লম্বা আকৃতির। আর মাদ্রাজি আগাম জাত, গোল আকৃতির। চায়না থ্রি আকারে বড়, এতে বড় বড় গুটি দাগ দেখা যায়।
গাছের ধরন অনুযায়ী, প্রতিটি গাছে ৩ হাজার ২শ’ থেকে ৬ হাজার লিচু পাওয়া যায়। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দিনাজপুর জেলার দেড় হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়।
বাগানে এক হাজার মাদ্র্রাজি লিচু বিক্রি হচ্ছে ১৭৭০ টাকায়। এই লিচু ঢাকায় গিয়ে ৩ হাজার টাকা হাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। কোনো কোনো জায়গায় আরও বেশী দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৭
এসএম/জেডএম