ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

লাভের আশায় আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৯
লাভের আশায় আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক আলু ক্ষেত পরিচর্যা করছেন দুই কৃষক। ছবি: বাংলানিউজ

ঠাকুরগাঁও: ধান কাটার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন ঠাকুরগাঁওয়ের আলু চাষিরা। ধান কাটা শেষ হলেই আলুর আবাদ করবেন এ অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। তবে কিছু কিছু এলাকায় উঁচু জমিতে আগাম জাতের ধান কেটে আগাম আলু চাষ শুরু করছেন কৃষকরা।

এদিকে ধানের ন্যায্য দাম না থাকায় চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। এ কারণে আগাম আলু চাষ করে তারা কিছুটা লাভবান হতে চান।

 

এবারে দক্ষিণাঞ্চলে বন্যা ও দুর্যোগ বেশি হওয়ায় শাক- সবজির দাম ভালো পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন চাষিরা। তাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন আলু চাষ নিয়ে। ঠাকুরগাঁওয়ে আগাম জাতের আলু চাষ করে লাভের আশায় বুক বেঁধে আছেন চাষিরা।

আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবারে আলুর ফলন বাম্পার হবে বলে জানান ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের আলুচাষি জুয়েল রানা বলেন, আমাদের কিছু উঁচু জমি আছে যেটাতে আগাম জাতের আলু চাষ করার জন্য আগাম ধান চাষ করেছিলাম। অনেকদিন আগেই আমরা ধান কেটেছি। ওই জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবারে ঠাকুরগাঁও জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হতে পারে। আমরা আর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে আগাম জাতের নতুন আলু তুলতে পারবো।
আলুক্ষেত।  ছবি: বাংলানিউজঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বুড়িরবাঁধ এলাকার আলুচাষি আনোয়ার বলেন, বর্তমানে শীতের প্রকোপ কম তাই আলুর বাম্পার ফলন হতে পারে বলে আশা করছি। দামও ভালো হতে পারে। কারণ এবার পুরাতন আলুর দাম বেশি থাকায় নতুন আলুর দাম তার থেকে দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৪ নম্বর বড়গাঁও ইউনিয়নের মোলান খুড়ি মিয়াজী গ্রামের বেকার যুবক মামুন বলেন, এবারে আগাম জাতের গেনোলা আলু চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। যদি আলুর ফলন ভালো হয় তাহলে এক বিঘা জমিতে আলু বিক্রি হবে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। আমার ক্ষেতের আলু আর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বাজারজাত করতে পারব। আগাম আলু তুলতে পারলে দাম বেশি পাব বলে আশাকরি।

ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের ৩য় সেমিস্টারের ছাত্র লাবন্য বলেন, আমরা কয়েকজন ছাত্র একসঙ্গে থাকি আমাদের প্রতিদিনই বাজার করতে হয়। ঠাকুরগাঁও শহরের কাঁচাবাজার আড়ত থেকে বর্তমানে পুরাতন কার্ডিনাল আলু কিনছি ২০-২৫ টাকা কেজি দরে। আর দেশি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে। পুরাতন আলুর দাম যদি এটা হয় তাহলে আমার মনে হচ্ছে নতুন আলুর দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হবে আমাদের।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারে আগাম জাতের আলুর ভালো ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাই কৃষক উঁচু জমির ধান কেটে আগাম জাতের আলু লাগানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলতাবুর রহমান জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বিভিন্ন উপজেলার চাষিরা আগাম জাতের আলু লাগিয়েছেন। এবারে ঠাকুরগাঁও জেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু লাগিয়েছেন কৃষকরা। তবে কিছু কিছু এলাকায় ব্যাক্টেরিয়া উইল্ট রোগ দেখা দিয়েছে।  

কৃষি বিভাগ চাষিদের ম্যানকোজেফ, কারবান্ডাজিফ গ্রুপের ওষুধ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে উপসহকারী বিভিন্ন মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করে কাজ করে যাচ্ছেন এবং কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।