কিছু মুনাফালোভী ডিলারের যোগসাজশে বিগত কয়েক বছর অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিতে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়েছিল। সেসময় নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকা দিয়ে বীজ কিনতে হয়।
সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
দেখা গেছে, জেলার সর্বত্রই পুরোদমে চলছে আলুর জমি প্রস্তুতের কাজ। অনেক এলাকায় জমি তৈরির কাজ শেষ করেছেন চাষিরা। অনেকেই জমিতে আলু লাগানোর কাজও শেষ করেছেন।
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মো. ইসমাইল হোসেন, শাজাহান আলী, মকবুল হোসেন, আনছার মিয়াসহ কয়েকজন আলু চাষি বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর নভেম্বরের শেষের দিকে আলুর জমি প্রস্তুতের কাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু এ বছর অক্টোবরের শেষে টানা দু’দিনের বৃষ্টিতে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ পিছিয়ে যায়। ফলে চলতি ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে জেলার সব জমিতে আলু চাষ সম্পন্ন হবে।
উপজেলার চন্ডিবর গ্রামের আবু তালেব, আইযুব আলী, তাজু ইসলাম, জিয়াউল হক বাংলানিউজকে জানান, বিগত কয়েক বছরে বীজ ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। চলতি বছরে এমন হয়রানিতে পড়তে হয়নি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. ফরিদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে এ জেলায় উপশী ও স্থানীয় মিলে ৫৫ হাজার ৪শ ৫৪ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উপশী ৪০ হাজার ৯৫৪ ও স্থানীয় ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হবে। যার মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে (উপশী-৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ মে. টন ও স্থানীয়-২ লাখ ৫২ হাজার ৮৪২ মে. টন) ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৭শ ৩৮ মে. টন।
তিনি আরও জানান, হেক্টর প্রতি জমিতে দেড় মেট্রিক টন বীজের প্রয়োজন। এ হিসাবে জেলায় প্রায় ৮৩ হাজার মেট্রিক টন বীজের চাহিদা রয়েছে। ইতোমধ্যে আগাম চাষ করা মোট ১ হাজার ১শ ৭৫ হেক্টর জমির আলু উত্তোলন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (বীজ বিপণন) জুলফিকার মো. গোলাম সরোয়ার জাহান বাংলানিউজকে জানান, বিএডিসি’র অধীনে বগুড়া অঞ্চলে ২৫০ জন ও জয়পুরহাট অঞ্চলে ১১৪ জন ডিলার রয়েছেন। বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার জন্য ২৯ হাজার মেট্রিক টন আলুর বীজের মার্কেটিং চাহিদা পাঠানো হয়েছিল। যা দেশের মোট ২৯টি হিমাগারের মধ্যে ১৪টি থেকে বীজের এ চাহিদা পূরণ করা হয়েছে। চলতি বছরে জেলায় আলু বীজের কোনো সংকট নেই। চাষিরা এখন অনেক সচেতন। তারা নিজেরাই তাদের চাহিদা মোতাবেক বীজ বিভিন্ন হিমাগারে সংরক্ষণ করে রাখে।
তিনি আরও জানান, বিএডিসি’র কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, গ্রানোলা, কারেজ, লেডিরোসেটা, ভুলুমিয়া ও রোজাগোল্ড জাতের এ গ্রেডের প্রতি কেজি বীজ ২২ টাকা ও বি গ্রেড ২১ টাকা এবং এস্টারিক জাতের এ গ্রেডের প্রতি কেজি বীজ ২৫ টাকা ও বি গ্রেড ২৩ টাকা বিক্রির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত এ দামের চেয়ে ২ থেকে ৩ টাকা বেশি মূল্যে ডিলাররা চাষিদের কাছে এ বীজ বিক্রি করে থাকে। কিন্তু এর বেশি দামে বিক্রি করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯
এইচএডি/