এমনটাই বলছিলেন এলাচ চাষি শাহজাহান। তিনি বেনাপোল ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা।
শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমে ২০১৬ সালে তানজিনিয়া থেকে ছয়টি এলাচ চারা সংগ্রহ করি। পরবর্তীতে আরও কিছু চারা সংগ্রহ করে পূর্ণাঙ্গ চাষ শুরু করি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সঠিক দিক নির্দেশনা না পাওয়ায় একাধিকবার এলাচ চাষে ক্ষতির সম্মুখীন হই। বেশ কয়েকবার কৃষি বিভাগ ও মসলা ইনস্টিটিউশনের কর্মকর্তারা আমার ক্ষেত পরিদর্শন করেন। এছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে এলাচ চাষ করে সফলতা পাই। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এলাচ চাষে আগ্রহীরা আমার কাছ থেকে চারা কিনে বাণিজ্যিকভাবে এলাচ চাষ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও এলাচ চাষের জন্য উপযোগী। অন্য মসলার মতো এলাচ চাষের জন্য আলাদা কোনো জমির প্রয়োজন হয় না। এটা অন্য গাছের ছায়াতলে চাষ করা যায়। এই এলাচ ক্ষেত পরিচর্যা করার জন্য প্রতিদিন শ্রমিক প্রয়োজন যা অন্য মসলা চাষের তুলনায় অনেক ব্যয়বহুল ও লাভজনক। সরকার যদি এলাচ চাষে আগ্রহীদের আর্থিক সহযোগিতা করে অথবা সল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে তাহলে ভবিষ্যতে এলাচ মসলা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এতে দেশের বেকারত্ব সমস্যাও কমবে এবং তৈরি হবে অনেকের কর্মসংস্থান।
তিনি আরও বলেন, এলাচ গাছে ফল আসতে পাঁচ বছর সময় লাগে। এক একর জমিতে এলাচ চাষ করতে (চারা, সেচ, কিটনাশক, শ্রমিক) ফল আসা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমিতে ১২শ’ এলাচ চারা রোপণ করা যায়। পাঁচ বছর পর থেকে এক একর জমির এলাচ গাছ থেকে প্রতি বছরে প্রায় ১৫শ’ কেজি ফল পাওয়া যাবে। এর বাজারমূল্য ২০ লাখ টাকা। এছাড়া একটি এলাচ গাছ ৩০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে ও ফল দেয়।
শাহজাহান বলেন, গাছে এখনো ভালো ফল ধরেনি। দ্রুতই গাছে ফল ধরবে বলে আশা করছি। ফল বিক্রি করতে না পারলেও চারা বিক্রি করে ভালো সাড়া পাচ্ছি। এ পর্যন্ত আট লাখ টাকার বেশি চারা বিক্রি করেছি। প্রতি পিস এলাচ চারা ২৫০-৩০০ টাকা করে বিক্রি করছি।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার শাহজাহানের এলাচ ক্ষেত পরিদর্শন করেছি। তাকে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের মসলা গবেষকরাও তার এলাচ ক্ষেত দেখে গেছেন। তিনি যেভাবে পরিশ্রম করছেন খুব দ্রুত সফলতা আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২০
এনটি