ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

বগুড়ায় সবজি বাজারে আলুর আমদানি বাড়লে দাম পাচ্ছেন না চাষিরা

কাওসার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২০
বগুড়ায় সবজি বাজারে আলুর আমদানি বাড়লে দাম পাচ্ছেন না চাষিরা বগুড়ায় মহাস্থান সবজির বাজারে বিক্রির জন্য আলু নিয়ে আসা হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: বগুড়ার মহাস্থানে সবজির বাজারে আমদানি বেড়েছে আলুর। তবে আমদানি বাড়লেও সে তুলনায় দাম পাচ্ছেন না কৃষকেরা।

রোববার (২২ মার্চ) সকালে মহাস্থানে সবজির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় কৃষকরা জমি থেকে আলু তোলার সঙ্গে সঙ্গেই তা বস্তায় ভরে বাজারে নিয়ে আসছেন। বাজারে নির্ধারিত স্থানে ধুয়ে পরিষ্কার করে তা বিক্রির জন্য স্তুপ করে সাজানো হচ্ছে।

তবে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আলুর দাম নিয়ে এখন কিছুটা চিন্তিত। খুচরা বাজারে দাম থাকলেও পাইকারি বাজারে আলুর দাম ক্রমেই পড়ে যাচ্ছে। এর আগে আলুর দাম কখনো এতো কমে যায় নি, এমনটাই দাবি তাদের।

মহাস্থান সবজির বাজারে আসা একাধিক আলু চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগাম চাষ করা আলুতে ভালো দাম পেলেও পরের ধাপের চাষ করা আলুতে সে তুলনায় দাম পাচ্ছেন না তারা। ক্রমেই আলুর দাম কমে আসছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর থেকেই আলুসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি আসা শুরু হয় এ বাজারে। ভ্যান, ভটভটি, পিকআপ ভ্যান, বস্তায় ভরে বাইসাইকেলে করে আলু বাজারে নিয়ে আসা হচ্ছে।

বিক্রির জন্য আনা আলু স্তুপ করা হচ্ছে।  ছবি: বাংলানিউজআলু বিক্রি করতে আসা চাষি রইচ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছরের মতোই এবারোও তিনি আগাম জাতের আলু লাগিয়েছিলেন। শুরুর দিকে ভালো দাম পেলেও পরে বাজারের অবস্থা পড়ে যাওয়ায় আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না তিনি।

অপর চাষি ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, সাড়ে সাত বিঘা জমিতে তিনি লাল পাকড়ি জাতের আলুর চাষ করেছিলেন। সে আলু উঠানোর কাজও প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু বাজারে চাহিদা মোতাবেক আলুর দাম নেই। প্রথমদিকে একটু ভালো দাম থাকলেও এখন তা নেই।

তিনি বলেন, লাল পাকড়ি, গ্যানোলাসহ আগামজাতের বিভিন্ন আলু প্রতি শীত মৌসুমে কৃষকরা চাষ করেন। বর্তমানে প্রতি কেজি লাল পাকড়ি পাইকারি হিসেবে ১০-১৫ টাকা, সাদা গ্যানোলা জাতের আলু প্রতি কেজি ৮-১০ টাকা ও কার্ডিনাল জাতের আলু ৮-১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কিন্তু দিন যতোই যাচ্ছে, ততই আলুর দাম কমছে জানান তিনি।

মহাস্থান সবজি বাজারের ফয়েজ, শাকিল, আমিনসহ একাধিক আলুর পাইকারি ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার আলুর প্রচুর ফলন হয়েছে। প্রতিদিন চাহিদার বেশি আলু বাজারে আসায় দাম তুলনামূলক কম পাচ্ছেন চাষিরা।

তারা আরও জানান, এসব আলু রাজধানী ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম অঞ্চলে বেশি যায়। এছাড়াও দূর-দূরান্তের বিভিন্ন বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা শহর থেকে বেপারী এসে এ বাজার থেকে আলুসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি কিনে নিয়ে যান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ও স্থানীয় জাত মিলিয়ে ৫৫ হাজার ৪৫৪ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৪০ হাজার ৯৫৪ হেক্টর জমিতে উফশী ও ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আলু চাষ করা হয়। মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৭৩৮ মেট্রিক টন। এর মধ্যে উফশী জাতের ৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ মেট্রিক টন ও স্থানীয় জাতের ২ লাখ ৫২ হাজার ৮৪২ মেট্রিক টন আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছিলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২০
কেইউএ/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।