তবে এবারের প্রেক্ষাপট নিয়ে শঙ্কিত খামারিরা। সেইসঙ্গে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এবারের পশু কোরবানি নিয়ে।
খামারিরা বলছেন, করোনার কারণে গত চারমাস ধরে গোখাদ্যের দাম অনেকটাই চড়া রয়েছে। সেই হিসেবে পশু পালনে গত চারমাসে খরচও বেড়েছে। সবমিলিয়ে পশুর দামও কোরবানিতে কিছুটা বাড়াতে হবে। আর ভালো দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।
যদিও লোকসান দিয়ে পশু বিক্রি করবেন না বলে জানিয়েছেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার হস্তিসুন্ড এলাকার সরদার ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী গিয়াস উদ্দিন সরদার।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক নিয়মে পশু লালন-পালন এবং মোটাতাজা করেন তারা। এ কারণে তাদের গরুর স্বাস্থ্য যেমন ভালো, আয়ুকালও দীর্ঘস্থায়ী। লোকসান দিয়ে বিক্রি না করে পরের বছরের জন্য অপেক্ষায় রাখতে কোনো বেগ পেতে হবে না তাদের। তাতে করে পরিস্থিতি ঠিক হলে দামও ভালো পাবেন।
তরুণ খামারি সাদ্দাম হোসাইন জানান, কোরবানিতে পশু বেচাবিক্রি কেমন যাবে তা একমাস আগেই বোঝা যায়। খামারগুলোতে প্রতিবছর এমন সময়টাতে আনাগোনা থাকে। এবারে তা নেই। বলা যায়, করোনার প্রেক্ষাপটে সামনে কি হবে তা বলা মুশকিল। কারণ গত চার মাস খামারিসহ গরু-ছাগল পালন সংশ্লিষ্টদের দিন খারাপ কেটেছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের স্থানীয় কার্যালয়েরর হিসাব অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে গত বছরের চাহিদা অনুযায়ী কোরবানিযোগ্য পশুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৪ লাখ ৪৩ হাজার। যারমধ্যে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৬০০ পশু স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করা সম্ভভ হয়েছিলো। বাকি পশু বিভাগের বাইর থেকে বিশেষ করে কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, ঝিনাইদহসহ অন্যান্য জেলা থেকে আনা হয়েছিলো।
তবে করোনার বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবারে এ লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ কমে যাওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। সেই হিসাবে এবারে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ পশু কোরবানি হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. কানাই লাল স্বর্ণকার।
তার দেয়া তথ্যানুযায়ী, বরিশালের ৬ জেলার ১৯ হাজার ৮০৬ জন খামারির কাছ থেকে কোরবানিযোগ্য ১ লাখ ৪ হাজার ৭৪১ টি পশুর হিসাবে পাওয়া গেছে এ পর্যন্ত। যে সংখ্যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ১ লাখ ৩০ থেকে ৪০ হাজারে গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া পারিবারিকভাবে লালন-পালন করা (গৃহস্থলি) আরও প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. কানাই লাল স্বর্ণকার বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পশু কোরবানি হলে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পশু বিভাগের বাইর থেকে যোগান দিতে হবে।
তিনি বলেন, করোনার ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এবারে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। তাই কোরাবানির লক্ষ্যমাত্রা কমে গেছে। তবে এতে করে খামারিদের ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকলেও লোকসান হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ স্থানীয় উৎপাদনের থেকে এখনও লক্ষ্যমাত্রা বেশি রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
এমএস/ওএইচ/