ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ফেনীর চরাঞ্চলের তরমুজে স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২২
ফেনীর চরাঞ্চলের তরমুজে স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা তরমুজ ক্ষেতে কাজ করছেন চাষি। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজী বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের বিগত বছরে ভালো ফল হওয়ায় এবারও লাভের আশায় স্বপ্ন বুনছেন তরমুজ চাষিরা।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে আবাদও বেড়েছে।

রোদ, বৃষ্টি সর্বোপরি আবহাওয়া ঠিক থাকলে ফলনের ব্যাপারেও বেশ আশাবাদী কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ জানায়, সোনাগাজী চলাঞ্চলে চলতি মৌসুমে ৩৪৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে তরমুজ। যা গত বছরের তুলনায় ২৮ হেক্টর বেশি। লাভবান হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এ অঞ্চলের সম্ভাবনামী ফসল হিসেবে দেখা দিচ্ছে তরমুজ।

উপকূলীয় এ অঞ্চলের আবহাওয়া ও পরিবেশ তরমুজ চাষের বেশ উপযোগী এবং কম খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে গ্রীষ্মের এই ফল চাষে। আকারে অনেক বড় এবং সুস্বাদু হওয়ায় বাজারেও রয়েছে এসব তরমুজের বেশ চাহিদা। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা এসে সরাসরি ক্ষেত থেকে এসব তরমুজ কিনে নিয়ে যায়। উপজেলার চরদরবেশ, চরচান্দিয়া, আমিরাবাদ ও সদর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এসব চরের জমি এক সময় রবি মৌসুমে খালি পড়ে থাকতো। কৃষি অফিসের প্রচেষ্টায় বর্তমানে এসব জমিতে এখন তরমুজসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হয়। গত বছর এখানে তরমুজের চাষ হয়েছিল ৩১৭ হেক্টর জমিতে। যা ২০২০ সালের তিনগুণেরও বেশি। একসময় নোয়াখালীর কৃষকরা এসব জমি বর্গা নিয়ে তরমুজ চাষ করছেন। এখন স্থানীয়রাও আবাদ করে।

স্থানীয়রা জানায়, সোনাগাজী চরাঞ্চলেল তরমুজ আকারে বড়, চকচকে লাল এবং খেতে অনেক মিষ্টি হয়। পুরো জেলায় এখানকার তরমুজের ব্যাপক চাহিদা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররাও এখানকার তরমুজ কিনে নিয়ে যান।
 
শাহরাজ সর্দার নামে স্থানীয় এক চাষি বলেন, গত বছর আমি ৬ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। লাভ হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো। এবারও একই পরিমাণ জমিতে তরমুজের আবাদ করেছি।  

আরেক চাষি আবুল কালাম বলেন, তরমুজ চাষে খরচ কম ও তুলনামূলক সহজ। গাছগুলোর একটু বাড়তি যত্ন করতে হয়, এতে ফলন ভালো হয়। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সার্বক্ষণিক সেবা পেয়ে থাকেন বলেও জানান চাষিরা। উপ-সহকারী কৃষি অফিসার প্রতাপ চন্দ্র নাথ বলেন, ভিক্টর সুগার, ওশেন সুগার, গ্লোরি, বাংলালিংক, ব্ল্যাক বেরি, স্থানীয় ও অন্যান্য জাতের ৩৪৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। গত বছর প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিক টন তরমুজ উদপাদন হয়েছে এখানে। এবার আরও অধিক পরিমাণে উদপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত তরমুজের আবাদ শুরু হয় এবং ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত জাতভেদে ফল বাজারজাত করা হবে। এবার জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টি হওয়ায় কিছু নিচু জমিতে পানি জমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা পুনরায় আবাদ করেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, তরমুজ চাষের প্রতি কৃষকরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমরাও তাদেরকে সবসময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এবারও তরমুজের বাম্পার ফলনের আশা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২২ 
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।