ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শুরু হচ্ছে সাহিত্যের সবচেয়ে বড় আসর ঢাকা লিট ফেস্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৩
শুরু হচ্ছে সাহিত্যের সবচেয়ে বড় আসর ঢাকা লিট ফেস্ট

ঢাকা: মহামারির কারণে তিন বছর স্থগিত থাকার পর আবারও ঢাকায় বসছে দেশি-বিদেশি সাহিত্যিক, চিন্তাবিদ, লেখকদের মেলা ঢাকা লিট ফেস্ট।  
আগামী ৫ থেকে ৮ জানুয়ারি রাজধানীর বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই ফেস্টের দশম আয়োজন।



চার দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে আছেন এর তিন পরিচালক সাদাফ সায, আহসান আকবার এবং ড. কাজী আনিস আহমেদ।  

শনিবার (১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিট ফেস্টের পরিচালক সাদাফ সায জানান, অনেক আনন্দের এবং গর্বের একটি আয়োজন ঢাকা লিস্ট। আমাদের গর্বের বিষয় যে আমরা বিশ্বব্যাপী বড় মাপের লেখকরা আমাদের সঙ্গে থাকবেন এবার। এ বছর লিট ফেস্টে অংশ নেবেন নোবেল বিজয়ী আব্দুলরাজাক গুরনাহর মতো বিখ্যাত ব্যক্তিরা। এছাড়া নুরুদ্দিন ফারাহ, অমিতাভ ঘোষ, হানিফ কুরেশী, পঙ্কজ মিশ্র, টিলডা সুইন্টন, জন লি এন্ডারসন, অঞ্জলি রউফ, সারাহ চার্চওয়েল, গীতাঞ্জলি ডেইজি রকওয়েল, গ্রন্থার ফ্রয়েড, অ্যালেকজান্দ্রা প্রিঙ্গেল, ডাইম সারাহ গিশ্বার্ট, মারিনা মাহাথির, জয় গোস্বামী, কামাল চৌধুরী, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, আনিসুল হক, মাসরুর আরেফিন, মারিনা তাবাসসুম, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ইমদাদুল হক মিলন, কায়সার হক, শাহীন আখতার, অমিতাভ রেজা এবং আজমেরী হক বাঁধনসহ আরও অনেকেই।

চারদিনের এই উৎসবে, ১৭৫টির বেশি সেশনে অংশ নিচ্ছেন ৫টি মহাদেশের ৫০০ এর বেশি বক্তা, শিল্পী ও চিন্তাবিদ।

লিট ফেস্টের আরেক পরিচালক ড. কাজী আনিস আহমেদ বলেন, আমরা লিট ফেস্টকে দেখি একটি ফেস্টিভ্যাল অব আইডিয়া হিসেবে। যদিও এখানে সাহিত্য একটি মুখ্য বিষয়। এবারের আয়োজনে আমরা চলচ্চিত্র নিয়ে আলাপ করবো। টিলডা সুইন্টন আসছেন, সঙ্গে আমার আমাদের নির্মাতাদের রাখবো। ওটিটি নিয়ে অনেক আলাপ হচ্ছে। সেটা নিয়েও আমরা এখানে কথা বলবো।

তিনি বলেন, অন্য বিষয়ের মধ্যে আমরা বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করবো। এবার এস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবক সারাহ গিলবার্ট আসছেন। এছাড়া আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ভাষা উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। এই জায়গায় আরেকটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হচ্ছে আমরা দুইজন রোহিঙ্গা কবিকে নিয়ে আসছি। শিশুদের জন্য আমাদের অনেক উপস্থাপনা থাকছে। আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি অনুষ্ঠানটিকে ঢাকা কেন্দ্রীক না রেখে ঢাকার বাইরে যেসব লেখক আছেন তারা আসতে পারছেন কিনা এবং নারী লেখকরা যথাযথ প্রতিনিধিত্ব পাচ্ছেন কিনা সেদিকে নজর রেখে পুরো আয়োজন সাজানো হয়েছে।

অপর পরিচালক আহসান আকবার বলেন, মহামারির কারণে আমাদের আয়োজন তিন বছর হয়নি। মহামারির কথা মাথায় রেখে আমরা সারাহ গিলবার্টকে নিয়ে আসছি। এবার আমরা স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকগুলো আলোচনা রাখছি। আগামীতে মহামারির যেন না আসে সেজন্য আমরা কিভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি, আমাদের আরেকটা ভ্যাকসিন যেন না লাগে, সুস্থ থাকবে কি খাওয়া উচিত সেজন্য চিকিৎসক, শেফদের আমরা এই আয়োজনে যুক্ত করেছি।

এবার ১২ বছরের বেশি বয়সের দর্শনার্থীদের উৎসবে প্রবেশ করতে লাগবে টিকিট। সাধারণ দর্শকদের জন্য টিকিট মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে দৈনিক জনপ্রতি ৫০০ টাকা। তবে একসঙ্গে চারদিনের টিকিট নিতে চাইলে ছাড় মিলবে ৫০০ টাকা, পাওয়া যাবে ১৫শ টাকায়। এদিকে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সুখবর। তারা প্রতিজন রোজকার জন্য ২০০ টাকায় টিকিট কিনতে পারবেন এবং একসঙ্গে চারদিনের কিনলে সেটি পাবেন মাত্র ৫০০ টাকায়।

রেজিস্ট্রেশন ও টিকিট প্রাপ্তি নিয়ে ঢাকা লিট ফেস্টের পরিচালক কাজী আনিস আহমেদ বলেন, লিট ফেস্টে করপোরেট বা সরকারি স্পন্সারশিপের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আরও টেকসই করতে আমাদের দর্শক-স্রোতা, পাঠকদের সহায়তা চাইছি। আমরা আশা করবো সাহিত্যপ্রেমী যারা তারা এই সহনীয় মূল্যের টিকিট দিয়ে শরিক হিসেবে লিট ফেস্টে শামিল হবেন। বিদেশে অনেক ফেস্টিভ্যালেই রেজিস্ট্রেশনের পরও প্রতিটি সেশনের জন্য আলাদা ফি দিতে হয়।

সেখানে আমরা এক টিকিটেই সকল সেশন দেখার সুবিধা দিচ্ছি। আমরা মনে করি, সাধারণ ও শিক্ষার্থীদের টিকিট অনেক সহনীয় মূল্যে রাখা হয়েছে। আর ভিআইপি টিকিট এক ধরনের স্পন্সরশিপ। এটা যারা পারবেন এবং চাইবেন তারা করবেন। আর মূল অনুষ্ঠানে প্রতিটি সেশনে সবার সমান অধিকার যিনি আগে আসবেন তিনি আগে বসবেন– এই নীতিতেই চলবে। এছাড়া ভিআইপি ক্যাটাগরির জন্য প্রতিদিন একজন দর্শনার্থীর টিকিট মূল্য পড়বে ৩ হাজার টাকা করে। একসঙ্গে চারদিনের জন্য কিনলে পাওয়া যাবে ১০ হাজার টাকায়। এই ক্যাটাগরির আওতায় দর্শকরা পাবেন ফ্রি পার্কিং সুবিধা, ভিআইপি আইডি কার্ডসহ ঢাকা লিট ফেস্টের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশের সুযোগ, যেখানে থাকছে লাঞ্চের ব্যবস্থাও।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলা ট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল বলেন, চার দিন ব্যাপী ঢাকা লিট ফেস্ট অনেক বড় একটা আয়োজন। এই ধরনের বড় উৎসবে টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকা আমাদের জন্য গর্বের। সবার আন্তরিক সহযোগিতায় এই আয়োজন সফল হবে বলে আমি আশা রাখছি।

সিটি ব্যাংকের সিইও মাশরুর আরেফিন বলেন, ঢাকা লিট ফেস্ট আমাদের প্রাণের জায়গা। ২০১৫ সালের আমরা স্পন্সর করেছিলাম। ২০১৯ সালেও আমরা ছিলাম। আমরা আয়োজকদের অনুরোধ করেছিলাম প্রাণ প্রকৃতি নিয়ে সেশন রাখতে এবং তারা রেখেছেন।

আয়োজকরা জানান, চারদিনের এই আয়োজনে থাকবে কথোপকথনের একটি বৈচিত্র্যময় মিশ্রণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সেশন শিশু ও তরুণদের জন্য আকর্ষণীয় আয়োজন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নাট্য, সঙ্গীত এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

ঢাকা লিট ফেস্টের টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকছে ঢাকা ট্রিবিউন এবং বাংলা ট্রিবিউন। সেসঙ্গে প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে আছে দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড এবং স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে থাকছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও সরাসরি টিকিটের লোকেশন জানতে লগইন করা যাবে www.dhakalitfest.com -এ। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. আমিনুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২৩
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।