ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

সেলিম আল দীনের প্রয়াণ দিবসে জাবিতে স্মরণযাত্রা

জাবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪
সেলিম আল দীনের প্রয়াণ দিবসে জাবিতে স্মরণযাত্রা

নাট্যতত্ত্ব বিভাগের আয়োজনে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ১৭তম প্রয়াণ দিবস পালিত হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ উপলক্ষে স্মরণযাত্রার আয়োজন করা হয়।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবন প্রাঙ্গণে নাটকের গান পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

সেলিম আল দীনের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ‘ইচ্ছে করে কবরে কান পেতে শুনি- শত জোয়ারের আবাজ’ শিরোনামে আজ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ। তিনি এ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।

সকাল সাড়ে ১০টায় স্মরণযাত্রার আয়োজন করা হয় যা পুরাতন কলা ভবন থেকে নাট্যাচার‌্যের সমাধি প্রাঙ্গণ পর্যন্ত যায়। সকাল থেকেই সেলিম আল দীনের সমাধিস্থলে ভক্ত ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা জড়ো হতে থাকে। পরে একে একে সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, ঢাকা থিয়েটার, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, সেলিম আল দীন বাংলা নাটককে আরো গবেষণা যোগ করে সমৃদ্ধশালী করতে পারতেন কিন্তু তার অকাল প্রয়াণের কারনে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি।

দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে আরও ছিলো দুপুর ১২টায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের আফসার আহমদ থিয়েটার ল্যাবে সেলিম আল দীন আলাপন।  

দুপুর দেড়টায় সেলিম আল দীন রচিত মঞ্চনাট্যের স্থিরচিত্র প্রদর্শনী হয়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠিত হয়। যার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক। সন্ধ্যা ৬টায় পরিবেশিত হয় সেলিম আল দীনের নাটকের গান ও নৃত্য, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আকাশ সরকার নির্দেশনায় পরিবেশিত হয় ঐতিহ্যবাহী ‘ধামাইল’।

রাত ৭টায় অনুষ্ঠিত হয় সেলিম আল দীন রচিত নাটক ‘নিমজ্জন’। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক বলেন, সেলিম আল দীন ছিলেন বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার নাটক সম্মৃদ্ধ। বাংলা নাটকে এখনো তাঁর চাপ রয়েছে। তাঁর অকাল প্রয়াণে বাংলা নাটকের অনেক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

সেলিম আল দীনের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনীর সোনাগাজী থানার সেনেরখিল গ্রামে। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং একুশে পদকজয়ী এই নাট্যকার ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় মারা যান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁকে সমাহিত করা হয়। সেলিম আল দীন সেনেরখিলের মঙ্গলকান্দি মাধ্যমিক স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন ১৯৬৪ সালে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ১৯৬৬ সালে ফেনী কলেজ থেকে। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। দ্বিতীয় বর্ষের পর তিনি ঢাবি ছেড়ে দেন। টাঙ্গাইলের সাদত কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে ঢাবি থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ১৯৯৫ সালে জাবি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি পান। ১৯৭৪ সালে জাবির বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।

সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম ক্ষেত্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে প্রতিবছর আয়োজিত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসবে যেসব মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি ছিল, তাদের অন্যতম সেলিম আল দীন। বিভিন্ন উৎসবের মূল বাণী ঠিক করে দেওয়া, অনুষ্ঠান বেঁধে গান তৈরি করাসহ সবই করতেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।