ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শামসুল আরেফীনের ‘চট্টগ্রামের লোকগান: বিবিধ প্রবন্ধ’

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
শামসুল আরেফীনের ‘চট্টগ্রামের লোকগান: বিবিধ প্রবন্ধ’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ ও লেখক শামসুল আরেফীন।

চট্টগ্রাম: প্রকাশনা সংস্থা চট্টগ্রামের বলাকা থেকে প্রকাশিত হয়েছে লোকগবেষক ও কবি শামসুল আরেফীনের দীর্ঘদিনের গবেষণার ফসল ‘চট্টগ্রামের লোকগান: বিবিধ প্রবন্ধ।

গ্রন্থটি বাংলা একাডেমি বইমেলায় ৫৫৭ নম্বর বলাকা স্টলে এবং চট্টগ্রামের বইমেলায় ১৯০-১৯১ নম্বর বলাকা স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।

‘চট্টগ্রামের লোকগান: বিবিধ প্রবন্ধ’ গ্রন্থে চট্টগ্রামের লোকগান শীর্ষক একটি প্রবন্ধ প্রথম প্রবন্ধ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এই প্রবন্ধে চট্টগ্রামের লোকগানের বিভিন্ন শাখার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। যেমন: হঁঅলা, মাইজভাণ্ডারী গান, জাহাঁগিরি সঙ্গীত, জারি গান বা মর্সিয়া, কীর্তন, হাইল্যা সাইর, পাইন্যা সাইর, ফুলপাঠ গান, হালদাফাডা গান, গোরব পোয়ার গান, চাটগাঁইয়া গান, কবিগান প্রভৃতি।

শামসুল আরেফীন জানিয়েছেন, ‘চাটগাঁইয়া গানকে লোকগানের অন্তর্ভুক্ত করার কারণে আপত্তি উঠতে পারে। কিন্তু যেহেতু এই গান চট্টগ্রামের লোকসমাজকে বিনোদিত করে এবং এই গানে লোকসমাজের চিত্র, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ফুটে উঠে, সুতরাং এই গানকে চট্টগ্রামের লোকগানের অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি ওঠা উচিত নয়’।

প্রবন্ধটিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের লোকগানের সবচেয়ে প্রাচীন শাখা লুকিয়ে আছে চর্যাপদে; এছাড়াও বারমাসী ও গীতিকাকে প্রাচীন শাখা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

গ্রন্থের অন্য ১১টি প্রবন্ধের মধ্যে ১০টি চট্টগ্রামের লোকগান সম্পর্কিত বিষয়-নির্ভর। প্রবন্ধগুলোর নাম: ‘চট্টগ্রামের কবিয়াল ও কবিগান’, ‘লোকগানের অবিনাশী কণ্ঠ কর্ণফুলী কন্যা শেফালী ঘোষ’, ‘অপ্রকাশিত লোককবি রুহুল আমিন’, ‘চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান গ্রন্থে আস্কর আলী পণ্ডিতের গান’, ‘আবদুল গফুর হালীর গান’, ‘আস্কর আলী পণ্ডিত প্রসঙ্গে’, ‘ঈছা আহমেদ নকশবন্দির গান’, ‘চট্টগ্রামের বিয়ের গান’, ‘রাহে ভাণ্ডর দরবারের গান’ এবং ‘অনন্য সঙ্গীতজ্ঞ স্বপন কুমার দাশ’। বাকি ১টি প্রবন্ধ অর্থাৎ ‘বারমাসী গানে বৈশাখ শব্দের ব্যবহার’ প্রবন্ধটি চট্টগ্রামের লোকগান সম্পর্কিত বিষয়ভিত্তিক না হলেও তা উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে চট্টগ্রামের বারমাসীতে বৈশাখ শব্দের ব্যবহার এবং চট্টগ্রামের লোককবি আস্কর আলী পণ্ডিত, শাহ্ আবদুল জলিল সিকদার, খাদেম আলী, মোজহেরুল আলম ওরফে ছাহেব মিয়া প্রমুখ কর্তৃক বারমাসী রচনার বিষয়টি পরিস্ফুট হওয়ার কারণে।

ফিল্ড ওয়ার্কের আশ্রয়ে রচিত এই গ্রন্থের প্রতিটি লেখা পাঠকমহলে সমাদৃত হবে, লোকগবেষণায় কাজে লাগবে, তাতে সন্দেহ নেই।

উল্লেখ্য, শামসুল আরেফীন দীর্ঘকাল ধরে লোকগবেষক হিসেবে এপার-ওপার বাংলার সাহিত্যাঙ্গনে বেশ পরিচিত। তিনি লোক ও অন্যান্য বিষয়ে চট্টগ্রামের বলাকা প্রকাশন থেকে অনেকগুলো গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।

‘চট্টগ্রামের লোকগান: বিবিধ প্রবন্ধ’ ছাড়া তার অন্য গ্রন্থগুলোর নাম: আস্কর আলী পণ্ডিত: একটি বিলুপ্ত অধ্যায় (ফেব্রুয়ারি ২০০৬, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১১২), বাঙলাদেশের লোককবি ও লোকসাহিত্য ১ম খণ্ড (ফেব্রুয়ারি ২০০৭, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১২৮), বাঙলাদেশের লোককবি ও লোকসাহিত্য ২য়-৪র্থ খণ্ড (জানুয়ারি ২০০৮, পৃষ্ঠাসংখ্যা ২৪০), আস্কর আলী পণ্ডিতের দুর্লভ পুথি জ্ঞানচৌতিসা ও পঞ্চসতী প্যারজান (সংগ্রহ ও সম্পাদনা; ফেব্রুয়ারি ২০১০, পৃষ্ঠাসংখ্যা ২৮০),  বাংলাদেশের বিস্মৃতপ্রায় লোকসঙ্গীত ১ম খণ্ড (সংগ্রহ ও সম্পাদনা; ফেব্রুয়ারি ২০১২, পৃষ্ঠাসংখ্যা ৪৩২), বাঁশরিয়া বাজাও বাঁশি (পল্লীগানের গ্রন্থ; ২০১২ সালে ‘বাংলাদেশের বিস্মৃতপ্রায় লোকসঙ্গীত ১ম খণ্ড’ গ্রন্থভুক্তির মাধ্যমে প্রকাশিত), আস্কর আলী পণ্ডিত: ৮৬বছর পর (সংগ্রহ ও সম্পাদনা; ফেব্রুয়ারি ২০১৩, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১৬০), গাঙ্গেয় বদ্বীপের অনন্য সঙ্গীতজ্ঞ: স্বপন কুমার দাশ (সম্পাদনা; সরগম একাডেমি, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠাসংখ্যা ৩২), আঠারো শতকের কবি আলী রজা ওরফে কানুফকির (ফেব্রুয়ারি ২০১৭, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১২০), রুবাইয়াত-ই-আরেফীন (কাব্য, ফেব্রুয়ারি ২০১৪, পৃষ্ঠাসংখ্যা ৬৪), বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার দুর্লভ দলিল (ফেব্রুয়ারি ২০১৬, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১২০), সূর্য-পুত্র (কাব্য, ফেব্রুয়ারি ২০১৮, পৃষ্ঠাসংখ্যা ৬৪), কবিয়াল মনিন্দ্র দাস ও তাঁর দুষ্প্রাপ্য রচনা (ফেব্রুয়ারি ২০১৮), কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও স্বাধীনতা ঘোষণা (ফেব্রুয়ারি ২০১৯), কালুরঘাট প্রতিরোধ যুদ্ধ ও অন্যান্য (ফেব্রুয়ারি ২০১৯) এবং আহমদ ছফার অন্দরমহল (ফেব্রুয়ারি ২০২০) প্রভৃতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।