ঢাকা: এয়ার এশিয়ার কুয়ালালামপুরগামী ফ্লাইটের একটি শিডিউল বাতিল হওয়ায় হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। তবে এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করছেন না ঢাকায় এয়ারলাইন্সটির জিএসএ টোটাল এয়ারলাইন্স সার্ভিসেস লিমিটেড (তাস)।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ২৫ মিনিটে এয়ার এশিয়ার একে ৭০ ফ্লাইটটি শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। এই এয়ারলাইন্সটিতে মূলত মালয়েশিয়ায় প্রবাসী শ্রমিকরাই বেশি যাতায়াত করেন। তবে গত সন্ধ্যায় তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে জানতে পারেন, তাদের ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে।
একে ৭০ এর যাত্রী আতিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ফ্লাইট বাতিল করলেও তারা ফোন দিয়ে জানাননি। কর্তৃপক্ষ বলেছে মেইল করে জানিয়েছেন। কিন্তু বেলা ২টার সময় আমি মেইল চেক করেও এয়ার এশিয়ার কোনো মেইল পাইনি।
তিনি বলেন, সন্ধ্যায় এয়ারপোর্ট পৌছে আমার মতো অনেকেই বোর্ডিংয়ের জন্যে অপেক্ষা করতে থাকেন। তবে সাড়ে নয়টা বেজে গেলেও যখন বোর্ডিং না পাই আমরা বিচলিত হয়ে পড়ি। টার্মিনালে তাদের কোনো লোকও দেখতে পাচ্ছিলাম না।
এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করে, ওপরের তলায় এয়ার এশিয়ার অফিসে যাই। এই যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, অফিসে শ্রমিক যাত্রীদের সঙ্গে দুর্বব্যাবহার করা হচ্ছিল। অথচ দূর দূরান্ত থেকে আসা এসব যাত্রীদের কাছে তাদের দুঃখ প্রকাশ করে সেবা প্রদানের কথা। এখন তারা বলছে তাদের ঢাকা রুটের এয়ারক্রাফটটি নষ্ট হয়ে রয়েছে।
এই ফ্লাইটটি ধরতে গত মঙ্গলবার রাতে ভোলা থেকে রওনা দিয়েছেন প্রবাসী শ্রমিক সোহেল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টার জার্নি করে এসেছি। আমরা সবাইতো মেইল ব্যাবহার করি না, যে জানতে পারবো ফ্লাইট বাতিলের কথা। এখন আরো ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে এয়ারপোর্টে।
রফিক নামের অপর এক শ্রমিক বলেন, তাদের ফ্লাইট বাতিল হয়েছে আবার তারা দুর্ব্যাবহারও করছেন। আমার আগামীকাল সকালে পুচংয়ে কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিলো। আমার একদিনের বেতন বাদ যাওয়াসহ কন্ট্রাকটরের গালিগালাজ শুনতে হবে। এ দায় অবশ্যই এয়ার এশিয়ার। এখন তারা বলছে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ২৫ মিনিটে ফ্লাইট! বাড়ি থেকেও একদিন বাদ গেলো, মালয়েশিয়ায় কর্মস্থলেও একদিন বাদ গেলো, ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
ফেনী থেকে আসা শ্রমিক দুলালের সঙ্গে তার পরিবার পরিজনও এসেছেন বিদায় জানাতে। তবে এখন তার বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও শিশু সন্তানকেও এয়ারপোর্টের ফ্লোরে শুয়ে বসে অপেক্ষা করতে হবে আরো একদিনের জন্যে।
তবে এ বিষয়ে জানতে তাস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুজিবল হক এবং ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সাদি আব্দুল্লাহর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এছাড়াও ঢাকার সেলস অফিসে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৫
এমএন/বিএস