ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হচ্ছে পণ্য, নিশ্চুপ বিমান

উর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৬
বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হচ্ছে পণ্য, নিশ্চুপ বিমান

ঢাকা: বর্ষাকাল এলেই মাথায় হাত পড়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে আমদানিকৃত পণ্যের আমদানিকারকদের। কার্গো ভিলেজের গোডাউনে জমে হাটু পানি।

নষ্ট হয় কোটি কোটি টাকার পণ্য।

 

কিন্তু এ বিষয়ে নজর নেই বিমান বাংলাদেশ এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক)।
 
কার্গো ভিলেজের গোডাউনে জমে থাকা বৃষ্টির পানির কারণে আনান ইন্টারন্যাশনালের প্রায় দেড় কোটি টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে গত মে মাসে। তাদের আমদানি করা পণ্যের মধ্যে ছিলো গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, মোবাইল এক্সেসরিজ, বেবি ক্লথসহ নানা পণ্য।
 
আনান ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী মো. তাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গোডাউনের শেড আছে, দেয়াল আছে। পণ্য গোডাউনে আছে শুনে কিছুটা নিশ্চিন্ত ছিলাম। কিন্তু নিতে এসে দেখি, আমাদের আমদানি করা পণ্য গোডাউনের পানিতে ডুবে আছে। বৃষ্টি হলেই কার্গো ভিলেজের গোডাউনে হাটু পানি জমে। আমাদের প্রায় দেড় কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়েছে।
 
শুধু আনান ইন্টারন্যাশনালই নয়, অসংখ্য আমদানিকারকের পণ্য কার্গো ভিলেজে নষ্ট হচ্ছে। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন তারা বলে জানিয়েছেন ঢাকা কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার শহীদুজ্জামান সরকার।
 
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ভিজে কার্গো ভিলেজের গোডাউনে পণ্য নষ্টের অভিযোগ করছেন সিএন্ডএফ এজেন্টরা। আমরা গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এতে করে সিএন্ডএফ এজেন্টরা অনেকটা ক্ষুব্ধ।
 
কার্গো ভিলেজের দায়িত্বে রয়েছে বিমান বাংলাদেশ। এসব বিষয়ে একাধিকবার বিমান বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করলেও তা ফলপ্রসু হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ ফরিদ।
 
শেখ মোহাম্মদ ফরিদ বাংলানিউজকে বলেন, কার্গো ভিলেজের গোডাউনের দায়িত্ব বর্তমানে রয়েছে বিমান বাংলাদেশের কাছে। তারা এটি বেবিচকের কাছ থেকে লিজ নিয়েছিলো। প্রতিবার বর্ষায় গোডাউনের মালামাল বৃষ্টিতে নষ্ট হয়। কিন্তু সেদিকে বিমান কোনো নজর দিচ্ছে না। আমরা বেবিচকের সঙ্গে কথা বলেও কোনো সুফল পাচ্ছি না। প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকার মালামাল নষ্ট হচ্ছে, যার দায় নিচ্ছে না কেউ। বিমান যদি এই দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতো তাহলে এই সমস্যা হতো না।
 
তবে এসব বিষয়ে নিশ্চুপ বিমান। বিমানের কার্গো শাখার জেনারেল ম্যানেজার আলী আহসান বাবু বাংলানিউজকে বলেন, ‘এসব বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু বলতে পারবো না’।  
 
একইভাবে বিষয়টি এড়িয়ে যান বেবিচকের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন জাকির হাসান। তিনি বলেন, ‘আমি একটু ব্যস্ত আছি। এসব বিষয়ে কথা বলতে পারবো না’।
 
তবে বেবিচক ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানিয়েছেন সচিব এস এম গোলাম ফারুক।
 
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা এসব বিষয়ে অবগত নই। কিন্তু এ ধরনের সমস্যা থাকলে অবশ্যই বেবিচকের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সমস্যা চিহ্নিত করে বেবিচক ও বিমান বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করে কি করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো’।
 
কার্গো ভিলেজে বর্তমানে ৫৪ টি কুরিয়ার সার্ভিস তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ হাজার কনসাইনমেন্ট আসে কার্গো ভিলেজে। প্রতি বছর কার্গো ভিলেজ থেকে পণ্য চুরি যাওয়া ও বর্ষা মৌসুমে পণ্য নষ্ট হওয়ার ঘটনা স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন সিএন্ডএফ এজেন্টরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৮ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৬
ইউএম/এএসআর/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।