মকবুল হোসেন নামে এক যাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ইউএস-বাংলা এই রুটে বিপ্লব ঘটিয়েছে। আমি বেশ কয়েক দফায় ব্যাংকক ভ্রমণ করেছি।
মকবুল হোসেন মনে করেন, এই রুটে ইউএস-বাংলাকে যাত্রী ধরতে হলে আরও ফ্লাইট বাড়াতে হবে। অনেকে আছেন যারা আজ গিয়ে একদিন থেকে পরদিন ফিরতে চান। তারা ইউএস-বাংলায় যাতায়াত করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে অন্য এয়ারলাইন্সে যেতে হবে। এক এয়ারলাইন্সে গিয়ে আরেক এয়ারলাইন্সে ফিরতে লোকজন অভ্যস্ত না। সবাই চায় রিটার্ন টিকিট একই এয়ারলাইন্স থেকে কাটতে।
আবার মিটিং কিংবা ডাক্তারের অ্যাপয়েনমেন্ট ধরার জন্য নিয়মিত ফ্লাইট জরুরি। ধরেন কাউকে রোববার সময় দিয়েছে ডাক্তার। তিনি যদি ইউএস-বাংলায় যেতে চান একদিন আগে যেতে হবে। এতে তার সময় ও খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
ব্যাংককগামী যাত্রীদের মধ্যে রোগীর সংখ্যা উল্লেখ করার মতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আপাতদৃষ্টিতে ফ্লাইট বাড়ানো ঝুঁকি মনে হলেও মার্কেট ধরার জন্য ফ্লাইট সংখ্যা বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন মকবুল হোসেন।
অপর এক যাত্রী বলেন, ইউএস-বাংলার ইন ফ্লাইট ও এয়ারপোর্টের সার্ভিস মনে রাখার মতো। ফ্লাইং টাইমে যে খাবার পরিবেশন করছে তার স্বাদ ও মান অসাধারণ। খাবার সব সময় গরম থাকে। যাত্রীরা সঠিকভাবে এখনও জানে না এই সুবিধাগুলোর কথা। এসব সুবিধার কথা জানলে অন্য কোনো ফ্লাইটে যাওয়া দূরের কথা, চিন্তাও করার কথা নয়।
বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের গলাকাটা দামের কারণে এতোদিন যারা বিরক্ত ছিলেন, তাদের জন্য শাপেবর হয়েছে ইউএস-বাংলার ভ্রমণ প্যাকেজ। আবার যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন তারাও এখন সাশ্রয়ী এবং অনটাইম সার্ভিসের কারণে বেছে নিচ্ছেন ইউএস-বাংলাকে।
এছাড়া ইউএস-বাংলার ৬ মাসের (সুদমুক্ত) কিস্তিতে ব্যাংকক-পাতায়া-ফুকেট ভ্রমণের আকর্ষণীয় প্যাকেজ দারুণভাবে সাড়া ফেলেছে। হলিডেজ প্যাকেজ নামে এ সাশ্রয়ী প্যাকেজটি ব্যাংক এশিয়া, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, যমুনা ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, মেঘনা ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, সাউথ-ইস্ট ব্যাংক, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ও ইউসিবিএল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী উপভোগ করতে পারবেন।
প্যাকেজে শুধু ব্যাংকক ভ্রমণের জন্য গ্রাহককে মাসে দিতে হবে ৩ হাজার ৯৮৩ টাকা, ব্যাংকক ও পাতায়া ভ্রমণে ৪ হাজার ৯৮৩ টাকা, ব্যাংকক ও ফুকেট ভ্রমণে ৭ হাজার ১৫০ টাকা। প্যাকেজে সব ধরনের ট্যাক্সসহ প্লেনভাড়া, হোটেল, সকালের নাস্তা, হোটেল-এয়ারপোর্ট-হোটেল ট্রান্সফারসহ সব সুবিধা রয়েছে।
সপ্তাহে তিনদিন (শনি, সোম ও বুধ) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা থেকে যাত্রা করে ইউএস-বাংলার বোয়িং প্লেন। ব্যাংকক সময় দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ঢাকা ছেড়ে আসে। ভাড়াও অন্যান্য ফ্লাইটের তুলনায় কম। ভাড়া শুরু হয়েছে ২১ হাজার টাকা থেকে। এছাড়া জিপি স্টার গ্রাহকদের জন্য রয়েছে মূল ভাড়ার উপর ১০-১২% ডিসকাউন্ট সুবিধা।
১৫ মে ২০১৬ থেকে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রুটে পাখা মেলে ইউএস-বাংলা। বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে দোহা, মাস্কাট, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ও কলকাতা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা রুটে সপ্তাহে দু’টি ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে।
যশোর ও রাজশাহী ছাড়াও অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতিদিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ছয়টি, কক্সবাজার তিনটি, সৈয়দপুর তিনটি, সিলেট একটি এবং বরিশাল রুটে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় এ এয়ারলাইন্সটি।
১৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে যাত্রা শুরু করে গত তিন বছরে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে প্রায় ৩১ হাজারের বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ইউএস-বাংলা। এয়ারলাইন্সটির বহরে চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে।
নভেম্বর মাসের মধ্যে আরও দু’টি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট এবং আগামী বছরের শুরুতে আরও দু’টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট বহরে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান ইউএস-বাংলার জিএম (মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
এসআই/এএ