ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্বর্ণ হেরফের হয়নি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২১ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৮
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্বর্ণ হেরফের হয়নি

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্বর্ণ হেরফের হয়নি বলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে জানিয়েছেন গভর্নর ফজলে কবির। তিনি কমিটিকে জানিয়েছেন যেটা হয়েছে সেটা হিসেবে গরমিল। আর মিডিয়াতে অতিরঞ্জিত করে খবর ছাপানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে সংসদীয় কমিটি মনে করছে, এতো নিরাপত্তার মধ্যেও কিভাবে ওই ঘটনা ঘটেছে। তবে যাইহোক না কেন এতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।

এ ধরনের ঘটনা যেন পুনরায় না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে কমিটির পক্ষ থেকে।

বুধবার (১ আগস্ট) সংসদ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিবিধ আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্বর্ণ হেরফের হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হলে গভর্নর এ কথা জানান।

বৈঠক শেষে কমিটি সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, ‘ বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্বর্ণ হেরফের নিয়ে বিবিধ বিষয় হিসেবে আলোচনা হয়েছে। ব্যাংকের পক্ষে থেকে সব ঠিক আছে বলে জানানো হয়েছে। ’

ব্যাংকের পক্ষ থেকে কমিটিকে জানানো হয়েছে ‘কোনোভাবেই ভল্টের স্বর্ণ হেরফের হওয়ার সুযোগ নেই। কেননা সেখানে ৪২টি সিসি ক্যামেরা আছে। তাছাড়া ১৮ ইঞ্চির দু’টি চাবি আছে। সেই চাবি দিয়ে ছয় জায়গায় খুলে তারপর ভল্টে যেতে হয়। কাজেই কোনোভাবেই তা সম্ভব নয়। তাদের দাবি আধুনিক মেশিনের কারণে কষ্টিপাথরের হিসেবে ৪০ শতাংশ আর ৪৪ শতাংশ এখানে একটু পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া ব্যাংক স্বর্ণের ক্রেতাদের এনে দেখিয়েছে তারা নাকি বলেছেন সব ঠিক আছে।

সভাপতি বলেন, এ বিষয়ে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা করলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের মধ্যে কিছু একটা ঝামেলা রয়েছে মনে হচ্ছে। যাইহোক এ বিষয়ে সাবধান হওয়া উচিত।

অন্যদিকে, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে মোট রাজস্ব আহরণ দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ সর্বনিম্ন পর্যায়ে। এ বিষয়ে বিগত ১০ বছরেও কোনো উন্নতি হয়নি। এতে অর্থমন্ত্রী সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলে দাবি করেছেন সভাপতি।

বিগত দশ বছরে দেশে জিডিপি অনুপাতে রাজস্ব আহরণ গড়ে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ, যা পার্শবর্তী দেশ ভারতে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এমনকি নেপালে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। উন্নত অর্থনীতির দেশে জিডিপি অনুপাতে রাজস্ব আহরণ গড়ে ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ।

দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে রাজস্ব আয় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। অন্যান্য দেশের রাজস্ব আয় সংগ্রহ পদ্ধতি থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রয়োজনে পাইলট প্রজেক্ট হাতে নিয়ে ভ্যাট-ট্যাক্সের আওতা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।

ব্যাংক ঋণের ওপর আরোপিত সুদের হার কমিয়ে ৯ শতাংশে নিয়ে আসা সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ দিনের দাবি। এখনো অনেক ব্যাংক সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার কার্যক্রম হাতে নেইনি। সিঙ্গেল ডিজিটে আনার কার্যক্রম বাস্তবায়ন না হওয়ায় কমিটিতে ক্ষোভপ্রকাশ করা হয়েছে।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- কমিটি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আব্দুল ওয়াদুদ,ফরহাদ হোসেন ও শওকত চৌধুরী ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৮
এসএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।