ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

একুশে বইমেলা ২০২৩

জীর্ণ মলাট, শিথিল পাতায় চোখ

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
জীর্ণ মলাট, শিথিল পাতায় চোখ নতুন বইয়ে চোখ বুলাচ্ছেন এক তরুণী। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: বইমেলা মানেই শুধু ঝকঝকে ছাপা নতুন বইয়ের গন্ধ নয়, বইমেলা মানে হারানো বইয়ের খোঁজে ডুবুরির মতো সন্ধানও। জীর্ণ মলাট, শিথিল পাতার মধ্য থেকেও অনেকে খুঁজে নিচ্ছেন বহু দুষ্প্রাপ্য ভালোলাগার বই।

কেউ কেউ বাহারি রঙের মলাটের বইগুলো নেড়ে-চেড়ে দেখছেন। পছন্দের বই নিয়ে চলছে বিক্রেতার সঙ্গে দর-কষাকষিও।

ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে বইমেলা প্রাঙ্গণে ঢুকে চোখে পড়বে শত শত বইয়ের স্টল। আর এসব প্রকাশনীতে যেমন রয়েছে নতুন বইয়ের সমাহার, তেমনি এখানে মিলছে সব ধরনের পুরনো ও দুষ্প্রাপ্য বইও।



এখনও সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বর্ণযুগের বইসংগ্রহ করার ইচ্ছা প্রবল। বান্ডিল বান্ডিল নতুন বইয়ের মাঝেও রয়েছে পুরনো বইয়ের সমাহার। সবাই যে কিনছেন, তা নয়। কিন্তু অনেক বয়স্ক মানুষই পুরনো বই নেড়ে-চেড়ে দেখতে দেখতে হারিয়ে যাচ্ছেন সোনালি স্মৃতির জগতে।

বইমেলায় এসে ষাটোর্ধ্ব শিক্ষক হায়দার আলী বাংলানিউজকে বলেন, নতুন লেখকরা অনেক ভালো লেখেন। ভালো লেখকদের নতুন বইও আসছে। তবে এত দ্রুত বোঝা যায় না নতুন কোনো বইটা ভালো। তাই এখন পুরনো যে বইগুলো আছে, সেগুলো থেকেই কিনছি, কয়েকদিন পর নতুনগুলোর দিকে যাবো।



তিনি যোগ করেন, এখনকার লেখকদের মধ্যে আর আগের সেই লেখার মতো ধার পাই না। আমরা যখন ঢাবিতে পড়ি, কবিতা উপন্যাস পড়তাম, তখনকার লেখার মান-ই ছিল অন্যরকম। পড়া শুরু করলে দুই/তিনবার শেষ করে তবেই যেন উঠার ফুসরত মিলতো। এখকার লেখকরাও ভালো লেখেন, কিন্তু সেই ঝাঁঝ আর পাই না। তবুও নতুনকে তো জায়গা দিতেই হবে।


রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) মেলা প্রাঙ্গণে কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখা যায়, এদিন প্রায় প্রতিটি স্টলেই ছিল বইপ্রেমীদের পদচারণা। তারা ঘুরে ঘুরে দেখেছেন বইয়ের স্টল আর স্টলে সাজানো বিভিন্ন ধরনের বই। তবে স্টল ঘুরে নতুন বইয়ের তুলনায় বিগত বছরগুলোতে প্রকাশিত বইয়ের প্রতিই এদিন পাঠকদের আকর্ষণ ছিল বেশি। এ সময় তারার মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে হুমায়ূন আহমেদ, সৈয়দ শামসুল হক, শওকত ওসমান, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বেশ কয়েকজন লেখকের বই কিনেছেন।



প্রকাশকরাও জানালেন তেমন কথাই। মেলা প্রাঙ্গণে ঐতিহ্য, অন্বেষা, কাকলী, প্রথমা, অনন্যা, ইত্যাদি, ঘাস ফুল নদী, সময়, অন্য প্রকাশসহ একাধিক স্টলে ঘুরে ঘুরে বইয়ের বিকিকিন সম্পর্কে কথা হয় বাংলানিউজের।

তারাও জানিয়েছেন, নতুন বইয়ের তুলনায় বিগত বছরগুলোতে প্রকাশিত বইগুলোই এখন বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে নতুন যে বইগুলো এসেছে সেগুলোর বিকিকিনিও খারাপ নয়।



এ ব্যাপারে ঐতিহ্য প্রকাশনীর কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন তুহিন বাংলানিউজকে বলেন, নতুন বইয়ের সঙ্গে সঙ্গে মেলার প্রথম দিকের এ সময়টাতে বিগত বছরের বইগুলোই বেশি বিক্রি হয়। নতুন বইগুলো আসতে একটু সময় নেওয়াতেই এ সময় পাঠকদের নজর পুরনো বইয়েই থাকে। তবে নতুন বইগুলো এসে গেলে পাঠক সেদিকেই ঝুঁকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।