ঢাকা: ঝরা পাতার দিন এসে গেছে। আজ শীতের শেষ দিন।
পরনে বাসন্তী রঙের শাড়ি, খোঁপায় হলুদ গাঁদার মালা। এক হাতে বই, অন্য হাতে ধরা হলুদ পাঞ্জাবি পরা প্রিয় মানুষের হাত। শীতের শেষ বিকেলে এমন সাজেই সেজেছে পুরো বইমেলা।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মেলায় আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের পোশাক ও সাজসজ্জায় ছিল বসন্তের আবহ। বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে ঘুরছিল একদল তরুণী। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই বলল, তারা সবাই একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। এসেছেন ধানমণ্ডি ও মোহাম্মদপুর থেকে।
কাশফিয়া ঝিলিক নামে একজনকে বসন্তের আগেই বাসন্তী সাজের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, প্রকৃতির মতো আমাদের মনে বসন্ত আরও আগেই চলে এসেছে।
ফায়রুজ খান নামে এক বইপ্রেমী বলেন, শীতের সন্ধ্যায় গরম চায়ে চুমুক দেওয়ার তৃপ্তিই আলাদা। সঙ্গে যদি থাকে নতুন বইয়ের সংযোগ, তবে তো কথাই নেই। আর আজ শীতের শেষ সন্ধ্যা; এটা তাহলে মিস করি কীভাবে! তাই বন্ধুরা মিলে এখন মেলাতে।
বিকেলে অমর একুশে বইমেলার দুয়ার খুলতেই প্রকৃতির রঙে নিজেদের সাজিয়ে নেওয়া পাঠক-দর্শনার্থীরা প্রবেশ করে মেলা চত্বরে। বসন্ত না এলেও তার আগমনী বার্তায় মেলায় লেগেছিল ফাল্গুনের রং। তাই তো মেলাজুড়ে যেদিকেই চোখ যায় সেখানেই রঙের ছড়ছড়ি।
সরকারি ছুটি না হলেও সন্ধ্যায় দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়েছে বইমেলা প্রাঙ্গণ। নতুন বই কেনা আর মেলার টান যেন উপেক্ষা করার উপায় ছিল না বইপ্রেমীদের।
কামরুল ইসলাম নামে এক তরুণ বলেন, আজকের বিকেল শীতের শেষ বিকেল। এমন বিকেলে মেলায় যাওয়া, পছন্দের বই কেনা, ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতি অন্যরকম। প্রকৃতিতে কড়া নাড়ছে ফাল্গুন। অমর একুশে বইমেলাও যেন বসন্তের অপেক্ষায়। ফাল্গুন আসার একদিন আগেই বসন্তের আমেজ বিরাজ করছে মেলায়। তাই বন্ধুদের সাথে নিয়ে চলে এলাম সন্ধ্যাটা বই আর প্রকৃতির সাথে উদযাপন করতে।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেলের পর মেলার দু’পাশের গেটে ছিল দীর্ঘ লাইন। বাইরের দীর্ঘ লাইনের মতো ভেতরেও ভিড় ছিল। ভিড় সামলে নিয়ে স্টলের সামনে জায়গা করে পছন্দের বই কেনেন ক্রেতারা। বিক্রিও বেশি ছিল বলে জানান অন্যপ্রকাশ, বিদ্যাপ্রকাশ, কাকলী প্রকাশনী, সময়, ইত্যাদি, গ্রন্থ প্রকাশের প্রকাশকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
এইচএমএস/এমজেএফ