ঢাকা: চলছে বইমেলার ষষ্ঠ দিন। ছুটির দিন না হলেও বইমেলায় রয়েছে উল্লেখযোগ্য পাঠক-দর্শনার্থীর উপস্থিতি।
বইমেলাকে কেন্দ্র করে প্রথমদিন থেকেই প্রকাশিত হচ্ছে নানা বই। প্রতিদিনের প্রকাশিত নতুন বইয়ের পাশপাশি পুরনো বইগুলোও আকর্ষণ করছে পাঠকদের।
এ বছর লেনিনের জীবনকে উপজীব্য করে প্রথমবারের মতো বাংলায় উপন্যাস প্রকাশ করেছে কথা প্রকাশ। বইটি লিখেছেন সিটি ব্যাংকের কান্ট্রি ম্যানেজার আশানুর রহমান। একসময় বালক ভ্লাদিমির কীভাবে পৃথিবীর একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর আদর্শের প্রবাদ পুরুষ লেনিন হয়ে উঠলেন তা স্থান পেয়েছে বইটিতে। বিপ্লব, সংগ্রামের বাইরে লেনিন মানুষ ছিলেন; রাগ, ক্ষোভ, একরোখা মনোভাবের মতো তারও যে মানবীয় গুণাবলী ছিল তা এ বইয়ে স্থান পেয়েছে। এছাড়া একই প্রকাশনী থেকে হরিশঙ্কর জলদাসের 'উপেক্ষিত সীতা' বইটিও পাঠকের আগ্রহ তালিকায় রয়েছে।
অক্ষর প্রকাশনীতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই সৌমেন সাহার ‘মানব মস্তিস্ক ও ভয় কী’ বইটি। এতে ভয় কী, আমরা কেন ভয় পাই, শিশু, কিশোরসহ বিভিন্ন সময়ের ভয়ের নানা প্রকার এবং এসব থেকে উত্তরণের উপায় স্থান পেয়েছে।
ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে এ বছর পাঠকের আগ্রহে সাব্বির জাদিদের লেখা উপন্যাস ‘আজাদির সন্তান’। বইটির ছত্রে ছত্রে উঠে এসেছে কাশ্মীরের শত বছরের ইতিহাস। বইটিতে কাশ্মীরের সৌন্দর্য, সংস্কৃতি ও জীবনাচার নিপুণভাবে স্থান পেয়েছে। এছাড়াও একই প্রকাশনী থেকে শাকিল রেজা ইফতির ‘আমার ইস্তানবুল’ ও আশির আহমেদের 'জাপান কাহিনি' বই দুটির বিক্রি বেড়েছে।
অনিন্দ্য প্রকাশনী থেকে মোশতাক আহমেদের প্যারাসাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ‘হারানো জোছনার সুর’ এবং রুদ্র গোস্বামীর কবিতার বই ‘তুমিও ভালোবাসো’ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
এছাড়া আদর্শ প্রকাশনীতে ঝংকার মাহবুবের প্রোগ্রামিংয়ের চৌদ্দগোষ্ঠী, মাওলা ব্রাদার্সে আহমদ ছফার ‘যদ্যপি আমার গুরু’, শব্দশৈলী প্রকাশনীতে সামশাদ সুলতানা খানমের ‘মেরুপ্রভা’ বইগুলো পাঠকের আগ্রহে রয়েছে।
জ্ঞানকোষ প্রকাশনীতে মুহম্মদ জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন ‘জিটুৎসি’ এবং মহিউদ্দিন মোহাম্মদের ‘ভোর হলো দোর খোলো খুকুমণি ওঠো রে’ বই দুটি জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছে। এছাড়া বায়ান্না ('৫২) প্রকাশনীতে ওবায়েদ হকের ‘আড়কাঠি’, ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে মুসা আল হাফিজের ‘উত্তরাধুনিক সরাব’ বইগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।
প্রকাশনা সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন, মেলার দিন বাড়তে বাড়তে বিক্রিও বাড়বে। ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আশিকুজ্জামান বলেন, এখনো অনেকেই এসে বই দেখছেন, তালিকা করে নিয়ে যাচ্ছেন। পরে এসে হয়তো কিনবেন।
তবে মেলায় আরও নতুন লেখকদের বই প্রকাশ এবং মানের দিকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পাঠকরা।
মেলায় পাঠক আশরাফুল ইসলাম সায়ান বাংলানিউজকে বলেন, নতুন লেখকদের বই আরও বেশি আসা উচিত। প্রজন্মের ভাষা ও আগ্রহের বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। এর বাইরে প্রকাশের সময় মানের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। গবেষণাধর্মী যেসব নন-ফিকশন লেখা হয়, সেসবের প্রতিও গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে। লেখা আরও বেশি আসলে পাঠকও আগ্রহী হবেন বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৪
আরআইএস