ঢাকা: ‘আত্মহত্যা’ সমাজ-শাস্ত্র-রাষ্ট্র অস্বীকৃত একটি আইন বা বিধান। তবু আদিকাল থেকেই এটি চলে আসছে, জ্ঞানী-নির্জ্ঞানী নির্বিশেষে।
প্রাবন্ধিক গাজী আজিজুর রহমান সব প্রতিকূলতার মাঝে সাহস ভরে সেই অবগুণ্ঠনকে উন্মোচিত করতে চেয়েছেন ‘স্বেচ্ছামৃত্যুর করতলে কবি’ গ্রন্থে।
তিনি এই গ্রন্থে শুধু কবিদের আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়েই তার লেখাকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। এর সঙ্গে যুক্ত করেছেন আত্মহত্যা কি, কেন, তার আত্মহত্যার বোধ, প্রবণতা, ঝোঁক, আবেগ, সংজ্ঞা ও সংবেদ। যা এই গ্রন্থের একটি উপরি পাওয়া।
গ্রন্থের পাঠসূচিতে যেসব কবির কবিতা ও আত্মহত্যাবিষয়ক আলোচনা করা হয়েছে তারা হলেন টমাস চ্যাটারটন, সের্গেই এসেনিন, ভ্লাদিমির মায়াকভস্কি, মারিনা ৎসভেতায়েভা, হার্ট ক্রেন, সিলভিয়া প্লাথ, অ্যান সেক্সটন, জেরার দ্য নের্ভাল, গেওর্গ ট্রাকল, পাউল সেলান, জেন জোসেফ র্যাবিয়েবিভেলা, আশরাফ আলি খান, ফজল মাহমুদ, সুনীল সাইফুল্লাহ ও এ কে এম আহমদউল্লাহ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উল্লেখিত কবিদের কবিতা ও কবিতার অনুবাদ।
আত্মহত্যাকে আমরা এতদিন শুধু সমাজতত্ত্বের পটভূমিতে, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানের বিষয়রূপে, কখনো দার্শনিকদের বিজ্ঞ প্রজ্ঞাপন ও শাস্ত্রিক প্রেষণা হিসেবেই দেখে এসেছি। কিন্তু এই প্রথম গাজী আজিজুর রহমান বিষয়টিকে বিচ্ছিন্ন করে সাহিত্য সম্পৃক্ত করলেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ, তত্ত্ব-তথ্য সংগ্রহ, পরিশ্রম ও বিপুল পঠন-পাঠন আমাদের সম্ভ্রম আদায় করে নেয়। এক ধরনের সম্মোহন, মুগ্ধ-মগ্নতা আচ্ছন্ন করে দেবে পাঠককে। যেন ‘আমার পায়ের শব্দ শোনো’- এ একেবারেই নতুন।
আত্মহত্যার গভীর গোপন রহস্যের মনোবিকলন ও মনশ্চেতনাকে লেখক যে নতুন মাত্রায় বাঙময় করে তুলেছেন বাংলা সাহিত্যে তা একেবারেই এক নতুন সংযোজন। বইটি পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সাঁকোবাড়ি প্রকাশনের ১১৩ নম্বর স্টলে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৫