অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: প্রকাশকদের অভিজ্ঞতাই সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে। বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে বেশ ক’জন প্রকাশক ইতিমধ্যে বলেছেন, মেলায় একবার জোয়ার শুরু হলে তা আর থামবে না।
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৫তম দিনের চিত্র তাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। মূল ফটক খোলার অপেক্ষায় মেলা সংলগ্ন রাস্তা, আইল্যান্ড বইপ্রেমীদের দখলে। ধীরে ধীরে লাইনে দাঁড়াতে থাকেন দর্শনার্থীরা, আর তা ক্রমশ দীর্ঘও হতে থাকে। ফটকে ঢোকার অপেক্ষায় দ্বিমুখী সর্পিল লাইন চোখে পড়ে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান- উভয় অংশের গেটের সামনে।
কর্মদিবসেও মেলার শুরুতেই এতোটা ভিড় দেখে স্টলকর্মীরা আনন্দিত। অন্বেষা’র বিক্রয় কর্মকর্তা তৃপ্তি বাংলানিউজকে বলেন, মেলার এ সময়টিতে ভিড় মানেই ক্রেতাদের আগমনই বেশি। আমাদের ক্রেতারা অধিকাংশই শিক্ষার্থী। তারা কেনার টার্গেট নিয়েই বেশি আসেন। আবার দূরের বাসিন্দারাও আসেন বিকেলে। তারাও এতোদূরে এসে খালি হাতে ফিরতে চান না। তাই বিকেলের ভিড়টা আমাদের জন্য শুভ।
নারিন্দা থেকে আসা সত্তোরোর্ধ্ব আলেয়া বেগম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকের সামনে বসে ভেতরে ঢোকার অপেক্ষা করছিলেন। নাতি আরাফ তাকে পাখা দিয়ে বাতাস দিচ্ছিলেন। মেয়ে শিউলি খানম, নাতনী তাসনুভাও পাশে। তাসনুভা বদরুন্নেসা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী, আরাফ নারিন্দা সরকারি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। এ পরিবারের কারো নির্দিষ্ট কোনো বই পছন্দ নেই, তবে যার যেটি পছন্দ হয় কিনে নেবেন।
রায়েরবাগ থেকে বোনের সঙ্গে মেলায় এসেছেন মাদ্রাসা ছাত্র মো. মাহফুজুর রহমান। বোন মাহমুদা আফরোজ রাকা লেদার টেকনোলজিতে পড়েন হাজারিবাগে। বেশি সময় ঘুরতে পারবেন বলেই বেলা থাকতেই মেলায় চলে এসেছেন বলে জানালেন তারা।
ফটক খোলার পরপরই সময়, অন্বেষা, নলেজ মিডিয়াসহ বেশ ক’টি প্রকাশনীর স্টলে ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
মেলার বাংলা একাডেমি অংশে নলেজ মিডিয়ার স্টলে শিশুশিক্ষার্থীদের ভিড় বেশি। তাদের কেনাকাটা দেখে খুশি স্টলকর্মীরাও।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো লেখক, প্রকাশককে মেলায় ঘুরতে দেখা যায়নি। যথারীতি তথ্যকেন্দ্রে নতুন বই জমা দেওয়া চলছে।
নাসির আলী মামুনের ক্যামেরায় তোলা জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ছবি নিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন হবে বিকেলে। একাডেমির শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত অন্য প্রকাশ’র কর্মকর্তারা।
বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘বাংলাদেশে জীবনানন্দ দাশ চর্চা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ। আলোচনায় অংশ নেবেন- কবি রুবী রহমান, কবি মুহাম্মদ সামাদ, পশ্চিমবঙ্গের জীবনানন্দ গবেষক প্রভাত কুমার দাস, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী ও কবি পিয়াস মজিদ। সভাপতিত্ব করবেন বিশিষ্ট লেখক আহমদ রফিক।
সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া মেলা চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
এসকেএস/আরএম