বইমেলা থেকে: অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হলো কুমার চক্রবর্তীর নতুন দু’টি বই। একটি ‘আত্মধ্বনি’, অন্যটি ‘বহু হও ব্রহ্মাণ্ডের মতো: ফের্নান্দো পেসোয়া ও তাঁর কবিতা’।
আগে প্রকাশিত পদ্য-গদ্য-অনুবাদ-গবেষণা মিলিয়ে পনেরোটি বই ও নতুন প্রকাশিত এ দুটোসহ মোট ১৭টি বই কুমার চক্রবর্তীর।
আত্মধ্বনি বইটির সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আত্মধ্বনি বইটিতে আসলে আমার আত্মভাবনার কথা রয়েছে। আমার ভেতরে যে অপর আমি, যে আসলে আমার প্রতিস্বকে চালায়, আমার হয়ে কথা বলে, আমার অস্তিত্ববিষয়ক উৎকণ্ঠাকে শব্দরূপ দেয়, তারই মনস্তাত্ত্বিক উচ্চারণ নিয়ে এ বই। ইংরেজিতে ‘পার্পল প্রোজ’ বলে একটি কথা আছে, এ ধরনের গদ্য হলো মনোশৈলীয়। আমি তা-ই লিখেছি।
আর দ্বিতীয় বইটি সম্পর্কে কুমার চক্রবর্তী বলেন, বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্তুগিজ কবি ফের্নান্দো পেসোয়ার ওপর এ বইটি, রয়েছে তার ১২০টির মতো কবিতার বাংলা অনুবাদ, ২৭ হাজার শব্দের পেসোয়া-বিষয়ক গদ্য যার অন্তর্ভুক্ত আছে—আমার ভূমিকা, ওক্তাবিয়ো পাসের ও রিচার্ড জেনিথের পেসোয়াবিষয়ক লেখার অনুবাদ, কালপঞ্জি, অন্যনাম ও ছদ্মনামীয় রচনা।
একটি বই থেকে আরেকটি বইয়ের ভ্রমণ ও পার্থক্য সম্বন্ধে বলতে গিয়ে : প্রতিটি বই-ই তো আলাদা। বই আসলে শব্দে লেখা হয় না, চেতনায় লেখা হয়। চেতনাই শব্দের জন্ম দেয়। লেখক তার নিজ বিষয় ও প্রাতিস্বিকতাকে মিলিয়ে লেখেন তার বই। কখনো বিষয় ভিন্ন হয়, কখনো বা বিষয় এক হলেও ভাষা ও দৃষ্টিভঙ্গির কারণে লেখা স্বতন্ত্র হয়ে যায়। তবে যেটা বলা দরকার, আত্মধ্বনি বইটি আমার পুরোপুরি আত্মচিন্তা ও অনুভূতি থেকে লেখা, এ ধরনের লেখা আগে আমি আর লিখিনি, হয়তো আর লেখা সম্ভবও হবে না।
আর পেসোয়ার বইটি অনুবাদ হলেও পেসোয়ার কারণেই তা আলাদা। এই কবি চারটি অন্যনামে (ছদ্মনামে নয়) কবিতা লিখেছেন যা একেবারে ভিন্নরকম। তিনি প্রায় ৭৫টি অন্যনাম ব্যবহার করেছেন। পেসোয়ার সংবেদনবাদ, প্রতি-অধিবিদ্যা আর অসাধারণ একাকিত্বময় জীবনকে তুলে ধরতে চেয়েছি আমি। কবি হওয়ার নিয়তিসম্ভাব্যতা, নিয়তিনিষ্ঠুরতাও, যা তরুণ কবিদের জানা দরকার, তা পেসোয়া পাঠে জানা যাবে বলে মনে হয় আমার। তবে তা না-ও হতে পারে।
আত্মধ্বনি বইটি প্রকাশ করেছে সংবেদ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংবেদের ১৬৭-১৬৮ নম্বর স্টলে পাওয়া যাবে। আর ‘বহু হও ব্রহ্মাণ্ডের মতো: ফের্নান্দো পেসোয়া ও তাঁর কবিতা’ বইটি এসেছে কথাপ্রকাশ থেকে। স্টল নম্বর ৩১৭-৩২০। বই দুটোর বিনিময় মূল্য যথাক্রমে ১৫০ এবং ২০০ টাকা।
বই প্রকাশে বইমেলার সময়-ই কেন? জানতে চাইলে কুমার চক্রবর্তী বলেন, মেলাকে সামনে রেখেই বরাবর আমি বই লেখা শুরু করি। আমি মনে করি, এ সময়ে বই প্রকাশ পেলে একসাথে অনেক লেখক-পাঠকের মনোযোগ নিবিষ্ট হয়, বিশেষ করে লেখকদের। মেলাকেন্দ্রিক বই প্রকাশের বিষয়টি আমার ভালো লাগে, এটি একটি অসাধারণ ঘটনা বলেই আমি মনে করি। যদিও তাতে গুণগত অনেক ঝামেলা থাকে। সবকিছুই অন্যদের মতো হবে কেন, আমরা আমাদের মতো হই।
এ দুটো বইসহ ঘরে বসে বইমেলার যেকোনো বই পেতে ভিজিট করুন rokomari.com-এ। অথবা কল করুন 16297 নম্বরে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬
টিকে/এএ