একুশে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিলো উল্লেখযোগ্য। তবে ২২তম দিনে এসে কিছুটা কমেছে সে সংখ্যা।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্য-প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ জানায় এ তথ্য।
জানা যায়, মেলার ২২তম দিনে নতুন বই এসেছে ৮২টি। আর ৪১টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে।
একুশে ফেব্রুয়ারির পরের দিন মেলায় দর্শনাথী তুলনামূলক কম থাকলেও বই বিক্রি নিয়ে প্রকাশনীগুলো হতাশ নয়। তাদের মতে, যারা এসেছেন তারা বই কেনার জন্য এসেছিলেন।
অনেকেই আছেন যারা লোকসমাগম এড়িয়ে চলেন, মূলত এমন ক্রেতার সংখ্যাই আজ (২২ ফেব্রুয়ারি) বেশি ছিল।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, অনেক বাবা-মা ছোট্ট শিশুকে নিয়ে মেলায় এসেছেন। বাবা তার পছন্দের কোনো কিনলেও মেয়ে-বা ছেলেটা নিয়েছে কমিক বা কার্টুন টাইপের বই। আর মা রসনা বিলাসের ওপর কোনো বই নিয়েছেন।
রুমানা বিনতে ফারহানা স্বামী সন্তানের সঙ্গেই মেলায় এসেছিলেন। বাংলানিউজকে বলেন, গল্পের বইয়ের সঙ্গে রান্নার ওপর বইও কিনেছি।
ময়ূরপঙ্খী প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি চন্দনা মণ্ডল জানান, একুশে ফেব্রুয়ারির পরের দিন হওয়ার ক্রেতার সংখ্যা কম। তবে বিক্রি ভালো হচ্ছে।
লাবণী প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি আমেনা পারভীন বলেন, শিশুরা তাদের পছন্দের বই নিচ্ছে।
কথা প্রকাশের বিক্রয় প্রতিনিধি জাফরুল ইসলাম বলেন, অনেকে একুশে ফেব্রুয়ারিতেই বই কেনেন। সবসময় সবার আসার সুযোগ থাকে না। অনেকে আবার একুশে ফেব্রুয়ারির দিন মেলায় আসতেও চান না। তবে সাধারণ দিন হিসেবে ক্রেতারা ভালোই সাড়া দিয়েছেন।
জানা যায়, ২২ ফেব্রুয়ারি নতুন বই এসেছে ৮২টি। একুশে ফেব্রুয়ারি যে সংখ্যা ছিল ২৬১টি। যে বইগুলো বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এসেছে এগুলোর মধ্যে রয়েছে গল্পের বই ১০টি, উপন্যাস ১০টি, প্রবন্ধ ২টি, কবিতা ২৮টি, গবেষণা ১টি, ছড়া ২টি ও শিশুসাহিত্যের ওপর ২টি।
এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ৩টি, বিজ্ঞান বিষয়ক ২টি, ভ্রমণের ওপর ১টি, রাজনীতি বিষয়ক ১টি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য বিষয়ক ১টি, ধর্মীয় ১টি, অনুবাদ ১টি এবং অন্যান্য ১৭টি বই প্রকাশ হয়েছে।
মেলার ২২তম দিনে মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি: বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক জিনাত হুদা অহিদ। আলোচনায় অংশ নেন মো. আবুল কাসেম এবং ড. শাহিনুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপস্থিতি এখন বাস্তবতা। এই বাস্তবতা স্বীকার করে এর গুণগত পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি। বিশেষ করে পাঠ্যসূচিতে বাঙালি জাতীয়তাবোধ, সংস্কৃতি, ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ এবং দেশজ ও সমকালীন বিশ্বের সাম্প্রতিক চিন্তাধারার সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সভাপতির বক্তব্যে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উপস্থিতি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খুবই জরুরি। দেশের সামগ্রিক শিক্ষাকাঠামোয় জাতীয় মূল্যবোধ ও মননের ছাপ না থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি শিক্ষা-উন্নয়নের কোনো সূচক হতে পারে না।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল অধ্যাপক শফিউল আলমের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন গেন্ডারিয়া কিশলয় কচিকাঁচার মেলা’র সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এছাড়া সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী কাদেরী কিবরিয়া, তপন মাহমুদ, শামা রহমান, মহিউজ্জামান চৌধুরী, নীলোৎপল সাধ্য এবং শিখা আহমাদ।
২৩ দিনে মেলায় যা থাকছে:
এদিন মেলা বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। বিকেল ৪টায় মেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘অনুবাদ সাহিত্য: সাহিত্যের অনুবাদ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম। আলোচনায় অংশ নেবেন কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, কবি শামীম আজাদ ও সাদাফ্ সায। সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
** বইপ্রেমীদের নানান মত মেলা নিয়ে
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৭
ইইউডি/এএ