শুধু শমসের আলম নন। তার মতো অনেকেই নিরাপত্তার স্বার্থে নগদ টাকার পরিবর্তে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বইমেলায় এসে পছন্দের বই কিনছেন।
আলাপকালে শমসের আলম বাংলানিউজকে বলেন, বইয়ের মূল্য পরিশোধে নগদ টাকার পরিবর্তে আমি মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করেছি। বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার ৫শ’ টাকা পরিশোধ করায় ১০শতাংশ ক্যাশব্যাকও পেয়েছি সঙ্গে সঙ্গে!
বইমেলা মানেই সারা বছরের বইয়ের সংগ্রহ। অনেকেই তাই ফেব্রুয়ারির জন্য আলাদা বাজেট রাখেন। বাদল খান নামে এক বইপ্রেমী ফেসবুক স্ট্যাটাসে বইমেলা উপলক্ষে বোনাস দেওয়ার দাবি তোলেন! তবে বোনাস মিলুক বা না মিলুক পছন্দ আর বাজেট মিলিয়ে তালিকা ধরে বইপ্রেমীদের কেনাকাটায় কোন ঘাটতি থাকে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেলা উপলক্ষে প্রকাশকদের বই কেনায় ২৫ শতাংশ ছাড়ের পাশাপাশি বিকাশসহ বেশ কয়েকটি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠানও তাদের গ্রাহকদের দিচ্ছে ক্যাশব্যক অফার। ফলে এতে গ্রাহকদের যেমন হচ্ছে সাশ্রয়, তেমনি ক্যাশব্যাকের কারণে বই কেনার তালিকাও হচ্ছে লম্বা, বাড়ছে গ্রাহকদের খুশির মাত্রাও।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আশরাফুল ইসলাম বইমেলায় ঘুরে ঘুরে বই দেখছিলেন বিভিন্ন স্টলে। এবারের মেলায় তার বই কেনার বাজেট ১ হাজার ৫শ’ টাকা। মেলায় ঢুকেই দেখলেন বিকাশে বই কিনলে পাওয়া যাবে ১০ শতাংশ ক্যাশব্যাক। আশরাফুলের বিকাশ একাউন্ট নেই। কিন্তু পাশেই দেখলেন বিকাশের একটি স্টল রয়েছে যেখানে বিকাশ একাউন্ট খোলা যাচ্ছে। তিনি একটা বিকাশ একাউন্ট খুলে ফেললেন এবং ১,৫০০ টাকায় পাঁচটি বই কিনে তার মূল্য বিকাশে পরিশোধের সাথে সাথেই ১৫০ টাকা ক্যাশব্যাক পেলেন। অনেক দিনের চাওয়া পূরণ করে বাড়তি এই টাকা দিয়ে আহমদ ছফার ‘গাভী বৃত্তান্ত’ বইটি কিনে খুশি মনে বাড়ি ফিরলেন আশরাফুল।
গত কয়েক বছর ধরেই ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে বইমেলায়। দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবা বিকাশ সূত্রে জানা যায় ২০১৫ সালে মাত্র ৮৭০ জন গ্রাহক বিকাশে পেমেন্ট করেছেন। ২০১৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭ হাজার গ্রাহকে। আর ২০১৮ এর বইমেলায় তা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে।
মেলার শুরুতেই ৩৫০টি প্রকাশনীর ২৫ ভাগ ছাড়ের সাথে আরো ১০ ভাগ ক্যাশব্যাক অফারের ঘোষণা দেয় বিকাশ। মেলায় সংযোজিত অনেক নতুন প্রযুক্তিগত সেবার সাথে বিকাশের এই ক্যাশব্যাক সুযোগকে ইতিবাচক বলেছেন দর্শনার্থীরা।
বিকাশের কর্পোরেট কমিউনিকেশন বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জাহেদুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুণের বেশি গ্রাহক বিকাশের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন বইমেলায়। এই সংখ্যা আমাদের উৎসাহ যুগিয়েছে।
তিনি বলেন, বিকাশের মাধ্যমে বই কেনার ফলে একজন গ্রাহক প্রকৃতপক্ষে বইয়ের গায়ের মূল্যের চেয়ে ৩২.৫ শতাংশ কম মূল্যে বই কিনতে পারছেন।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে জাহেদুল ইসলাম বলেন, বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশকরা দিচ্ছে ২৫ শতাংশ ছাড়। প্রকাশকের ছাড়ের পর বইয়ের মূল্য বিকাশে পরিশোধের সঙ্গে সঙ্গে বইয়ের মূল্যের ১০ ভাগ ক্যাশব্যাক আকারে গ্রাহকের একাউন্টে ফেরত দিচ্ছে বিকাশ। এতে একজন গ্রাহক একই বাজেটে অধিক সংখ্যক বই কিনতে পারছেন।
এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, বইমেলায় বিকাশের জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখেই আমরা কয়েক বছর ধরে তাদের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবার সুযোগ দিয়ে থাকি। ভবিষ্যতে এটি অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
এসই/এমজেএফ