ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

বইমেলায় গাজী আজিজুর রহমানের ‘ভ্রামণিক রবীন্দ্রনাথ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
বইমেলায় গাজী আজিজুর রহমানের ‘ভ্রামণিক রবীন্দ্রনাথ’ লেখক গাজী আজিজুর রহমান ও ভ্রামণিক রবীন্দ্রনাথের প্রচ্ছদ

ঢাকা: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রমণসাহিত্য নিয়ে এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশ হয়েছে লেখক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক গাজী আজিজুর রহমানের বই ‘ভ্রামণিক রবীন্দ্রনাথ’।

মোস্তফা কারিগরের প্রচ্ছদে বইটি প্রকাশ করেছে পুঁথিনিলয়। এটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় পুঁথিনিলয়ের ৩০১, ৩০২ ও ৩০৩ নম্বর স্টলে।

দাম রাখা হচ্ছে কমিশনসহ ৩৭৫ টাকা।

‘ভ্রামণিক রবীন্দ্রনাথ’র ফ্ল্যাপে বলা হয়েছে, বাঙালি জাতি হিসেবে সাধারণত ভ্রমণবিমুখ। মূলত বৈরাগ্য বিলাসেই তার মুক্তি। গৃহ তার কাছে বিশ্ব, বিশ্ব তার কাছে গৃহকোণ। নতুনে তার বিরাগ, পুরাতনে অনুরাগ। গতিতে সে নিস্পৃহ, স্থিতিতে সে স্পৃহ। বাঙালির এই স্বভাব প্রবণতা থেকে আরও অনেক কিছুর মতো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালিকে প্রবুদ্ধ করেছিলেন ভ্রমণের মুক্তধারায়।  

রবীন্দ্রনাথই বাঙালির সবচেয়ে বড় ভ্রামণিকের উদাহরণ। তিনি আজও আমাদের ভ্রমণ সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রচয়িতা। তার মতো ভ্রমণ বিষয় এত গ্রন্থ আর কোনো বাঙালি আজও লেখেননি। তিনি জীবনে কত হাজার মাইল ভ্রমণ করেছেন সেটি গবেষণার বিষয়, কিন্তু লিখেছেন হাজার পৃষ্ঠার মতো। এর মধ্যেই বিধৃত রয়েছে প্রায় গোটা বিশ্বের ইতিহাস, ভূগোল, মানবসমাজের শিক্ষা-সংস্কৃতি-রাজনীতি-ঐতিহ্যসহ মানব চৈতন্যের দীপ্তি।

তার দেখা ও উপলব্ধির উজ্জ্বল ভুবনও অনেকাংশে আয়ত্তীকৃত এই ভ্রমণ কথার চরণে চরণে। কবির সেই বিশ্ব লোককে পাঠক সমাজের সামনে তুলে ধরা এবং পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই গ্রন্থের অবতারণা। শুধু তাই না, তার ভ্রমণসাহিত্য রচনার নবরীতি, ভ্রমণকলা ও তুলনামূলক আলোচনার প্রয়াসও রয়েছে এই গ্রন্থে। তিনি যে পৃথিবীর এক অন্যতম ভ্রমণ সাহিত্যিক গ্রন্থটি তারও এক অভিজ্ঞানে ঋদ্ধ।

সব মিলে রবীন্দ্রনাথের অতি মূল্যবান অথচ সবচেয়ে অমূল্যায়িত ও অনালোচিত তার ভ্রমণসহিত্য। সেই প্রেক্ষিতটি বিবেচনায় রেখে তার ভ্রমণসাহিত্যকে পাদ প্রদীপের আলোয় এনে দীপ্ত করা ও উদ্ভাসিত করার উদ্যতিতে এই গ্রন্থের উন্মীলন। বলা যায় রবীন্দ্রবিশ্বে অনুপ্রবেশের এক অন্যতম সিংহদ্বার তার ভ্রমণসাহিত্য।

গাজী আজিজুর রহমানের লেখার একটি ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশেষ করে মৃত্যু, আত্মহত্যা এবং কবিতাবিষয়ক তার লেখাগুলো পাঠককে বারবার ভাবিত করে, প্রশ্নমুখী করে তোলে। বিশ্বসাহিত্য, ইতিহাস, আধুনিকতা তার প্রিয় লেখালেখির বিষয়।  

তার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে- প্রবন্ধ-গবেষণা: বাংলার দ্বিতীয় রেনেসাঁ (২০১৮), স্বদেশ ভাবনা ও বঙ্গবন্ধু (২০১৭), সাহিত্যে সমাজবাস্তবতার ধারা (১৯৯২ ও ২০১৪), স্বেচ্ছামৃত্যুর করতলে কবি (১৯৯৬ ও ২০১৫), কালীগঞ্জের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ (২০১৪), সাহিত্য ও সিংহাসন (১৯৯৯), আধুনিক বাংলা উপন্যাসের বিষয় ও শিল্পরূপ (২০০৯), সাতক্ষীরার ভাষা ও শব্দকোষ (২০০৪), নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ (২০০১); সম্পাদনা: মরণরে তুহু মম (২০০৪) এবং খান আনসার উদ্দীন আহমেদ রচনাবলী (১৯৯৯); উপন্যাস: বজ্রের বাঁশি (১৯৮৯), যোদ্ধার জতুগৃহ (১৯৯১), শামুক (১৯৯৬); নাটক: সক্রেটিস (১৯৯৩), চন্দ্রাবতী (১৯৯৬), কালো সূর্যের নিচে (১৯৯১) ও অভাজন (১৯৯৯)।  

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গাজী আজিজুর পেয়েছেন বেশ কয়েকটি পুরস্কার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সাতক্ষীরা সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৫), শিমুল-পলাশ সাহিত্য পুরস্কার, (কলকাতা ২০০৪), বাংলা ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র পুরস্কার (২০০৭), সিকানদার আবু জাফর পদক (২০১২), কবি সুকান্ত পুরস্কার (কলকাতা ২০১৫)।  তিনি দীর্ঘদিন সম্পাদনা করে যাচ্ছেন নদী নামের একটি সাহিত্যপত্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।