শুক্রবার (২২ মার্চ) মেলার দ্বিতীয় দিনে বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, শিশু কিশোরদের জন্য এ মেলায় যেমন স্থান পেয়েছে সহস্রাধিক বই, তেমনি আছে বড়দের বইও। দুপুরের পর থেকে যেসব অভিভাবক শিশুদের নিয়ে মেলায় এসেছেন তারাও হাতে নিয়ে দেখছেন নানান আঙ্গিকের বই।
মেলার বিভিন্ন স্টলের বিক্রয়কর্মী এবং প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা সবসময়ই চান বড়দের মতো করে শিশুরাও বই পড়তে আগ্রহী হয়ে উঠুক। আর শিশুদের উৎসাহিত করতে বড়দের ভূমিকাটাই সব থেকে বেশি বলে মনে করেন তারা।
গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, গবেষণা, সংকলন, ভাষা ও সাহিত্য, রেফারেন্স গ্রন্থ, আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা, সাক্ষাৎকার, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, গণমাধ্যম ও চলচ্চিত্র, ভ্রমণ, প্রকৃতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, জীবনী গ্রন্থ, শিশু সাহিত্য, অনুবাদ, বিজ্ঞান ও সাইন্স ফিকশনসহ বিচিত্র বই রয়েছে প্রকাশনীগুলোতে। তবে সেসব বইয়ের মধ্য থেকে প্রকাশনীর মতে বিশেষ কিছু ভালো বইয়ের কথা জানালেন প্রকাশকরা।
কথা প্রকাশ থেকে জানানো হয়, আহমদ রফিকের ভাষা আন্দোলনের গ্রন্থ ‘ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি ও কিছু কথা’, যতীন সরকারের প্রবন্ধ ‘প্রত্যয় প্রতিজ্ঞা প্রতিভা’, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ‘সময় বহিয়া যায়’, ড. আবুল আহসান চৌধুরীর ‘বাংলাদেশের লোকসঙ্গীতে প্রেম চেতনা’, আবদুল মান্নানের ‘বাংলাদেশের রাজনীতির গতি প্রকৃতি’, শামসুজ্জামান খানের ‘বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও বর্তমান বাংলাদেশ’, আন্দালিব রাশদীর অনুবাদ গ্রন্থ ‘মাতিলদা’, গল্প ও উপন্যাসের মধ্যে সেলিনা হোসেনের ‘সময়ের ফুলে বিষপিঁপড়া’, সুমন্ত আসলামের ‘এক মায়াবতী আমার’, ইমদাদুল হক মিলনের ‘আমার ভালোবাসার উপন্যাস’ ও ‘কলাপাতা ও লাল জবাফুল’, শেলী সেনগুপ্তার ‘দেরদিনের ঘুম’, মুহম্মদ মনিরুল হুদার সায়েন্স ফিকশন ‘নীল চশমা’ ও ‘হ্যালসিয়ন’, শেখ সাদীর ‘ইসলামে প্রথম’ নতুন বইগুলোর মধ্যে বেশ ভালো।
বাতিঘর প্রকাশনা থেকে বুদ্ধদেব বসুর ‘আত্মজৈবনিক’, আরতি দত্তের ‘যে অতীত ভোলা যায় না’, মাহবুব লীলেনের ‘অভাজনের মহাভাররত’, হরিশংকর জলদাসের ‘নতুন জুতোয় পুরনো পা’, বিশ্বজিৎ চৌধুরী ও মশিউল আলমের ‘নির্বাচিত গল্প’, শিবব্রত বর্মনের ‘বানিয়ালুলু’, বুদ্ধদেব বসুর ‘রাত ভরে বৃষ্টি’, সমরেশ মজুমদারের ‘সোনার মোবাইল’ বইগুলো ইতোমধ্যেই পাঠকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে বলে জানান প্রকাশনীর পক্ষে বিক্রয়কর্মী মো. হাসান।
বেহুলাবাংলা প্রকাশনীর প্রকাশিত অনুবাদ গ্রন্থের মধ্যে জাভেদ হুসেনের ‘ধ্রুপদী উর্দু কবিতা’, শৌভিক দে সরকারের ‘রোবের্তো বোলনিওর নির্বাচিত গল্প’, জুয়েল মাজহারের ‘কবিতার ট্রান্সটোমার’, মহসীন হাবিবের ‘দণ্ডিত নাস্তিক’, অন্যান্য বইয়ের মধ্যে জাকির সোহানের ‘প্রফেসর ব্রিগেড’, রনি রেজার ‘এলিয়েনের সঙ্গে আড্ডা’, মাসুম মাহমুদ সম্পাদিত ‘নির্বাচিত অণুগল্প: মোমিন রহমান’ কইগুলোতে পাঠকের আগ্রহ আছে বলে জানান প্রকাশনীর পক্ষে ম্রিতোষ তত্রাচ।
এছাড়া অ্যাডর্ন পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত সান জু’র ‘দি আর্ট অব ওয়ার’, আবদুস সালাম মামুনের ‘উপমহাদেশের আইন ও শাসনের ইতিহাস’, বুলবুল সরওয়ারের ‘ঝিলাম নদীর দেশ’, গাজী তানজিয়ার ‘কালের নায়ক’, আনিসুজ্জামানের নির্বাচিত ও সম্পাদিত ‘সাহিত্যকীর্তি গ্রন্থমেলা’, বাংলা বাউল সিরিজের বিভিন্ন বই ও বাংলা ক্লাসিক সিরিজের বিভিন্ন বই পাঠকদের জন্য নির্বাচন করেছেন প্রকাশনীটি।
বিকেলে মেলার মূলমঞ্চে রয়েছে শিশুদের জন্য সিসিমপুর পরিবেশনা, লেখকের সঙ্গে কথোপকথন অধিবেশন ও সাংস্কৃতিক আয়োজন! মেলা চলবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।
তবে সকাল থেকে দুপুর অবধি অনেকটাই ফাঁকা ফাঁকা কেটেছে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির বইমেলা। দুপুর পর্যন্ত ক্রেতাশূন্য মেলায় স্টল সাজিয়ে শুধু ক্রেতাদের জন্য অপেক্ষাই করেছেন বিক্রতারা।
শুক্রবার সকাল ১১টায় মেলার দ্বার উন্মুক্ত করলেও দুপুর একটা পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থী, পাঠক এবং ক্রেতাদের আগমন ছিল হাতেগোনা। তবে বিকেলে মেলায় লোকসমাগম হবে বলে আশা করছেন প্রকাশনা সংস্থা এবং শিশু একাডেমি কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৯ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৯
এইচএমএস/এমজেএফ