রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বইমেলার মূলমঞ্চে পিয়াস মজিদের লেখা 'মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলা একাডেমি' শীর্ষক বইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সেলিনা হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক শাহিদা খাতুন।
সেলিনা হোসেন বলেন, পিয়াস মজিদ রচিত মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলা একাডেমি বইটি মূলত বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ সর্বোপরি মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর সাংস্কৃতিক চেতনাকে ধারণ করেই রচিত। সাংস্কৃতিক চেতনা দিয়েও যে সংগ্রাম করা যায় বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়। ভাষা আন্দোলনের পর থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে বাংলা একাডেমির দীর্ঘ অভিযাত্রার ইতিহাস ও অর্জন নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এ গ্রন্থ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
শাহিদা খাতুন বলেন, ভাষাশহীদের স্মৃতি-বিজড়িত এই মাসে বাংলা একাডেমিতে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলা একাডেমি শীর্ষক বইয়ের যে আলোচনা তা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। বইটির লেখক পিয়াস মজিদ গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ করেছেন। বহু উৎস থেকে পুরোনো বই-পুস্তক, পত্র-পত্রিকা, নথিপত্র ঘেঁটে অনেকের দৃষ্টির আগোচরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইতিহাসের মূল্যবান অনেকগুলো তথ্য সংগ্রহ ও একত্রিত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, বাংলা একাডেমি বইয়ের নামে থাকা এই তিনটি শব্দ অবিচ্ছেদ্য।
তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির জীবনে গৌরবোজ্জ্বল একটি অধ্যায়। এই অধ্যায়ের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু। আর বাংলা একাডেমি মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিভূমি, বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনার ভ্রুণকেন্দ্র। ষাটের দশক থেকে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরবর্তী সময় পর্যন্ত বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বাঙালি সংস্কৃতির মূল কেন্দ্র ছিল বাংলা একাডেমি। সেদিনের বাংলা একাডেমি তার কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মানুষের জাতীয়তাবাদী মানসকে বিকশিত করতে পেরেছিল। একাডেমির সেই ইতিহাস এই বইয়ের মধ্য দিয়ে আরও উজ্জ্বলতর হয়ে উঠেছে।
আলোচকরা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। তাই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সূতিকাগার বাংলা একাডেমির সঙ্গেও তার সম্পর্কটি অতীব নিবিড়। অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক এ গ্রন্থটিতে লেখক পিয়াস মজিদ মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে বাংলা একাডেমির ভূমিকা ও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বাংলা একাডেমির সম্পর্কটি একজন গবেষকের দৃষ্টিকোণ থেকে দক্ষতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন। যারা বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসেন তাদের কাছে এ গ্রন্থটি সমাদৃত হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।
বইয়ের লেখক পিয়াস মজিদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলা একাডেমির পারস্পরিক যোগসূত্র অন্বেষার প্রেরণা থেকেই এ বইয়ের সৃষ্টি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলা একাডেমি বিষয়ে এ বই রচনা করতে পেরে আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করছি।
আলোচনা সভা শেষে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি মাসুদুজ্জামান, মাহবুব আজীজ, জাহানারা পারভীন ও আশরাফ জুয়েল। এছাড়া আবৃত্তি পরিবেশন করেন- শিরিন ইসলাম, আজিজুল বাসার ও মনিরুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০
এইচএমএস/এইচজে