সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মেলার মূল মঞ্চে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম।
আলোচনাকালে বইটির প্রসঙ্গে মোহাম্মদ সেলিম বলেন, সামগ্রিকভাবে এই গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা, রাজনৈতিক দর্শন, শিক্ষা ভাবনা, দ্বিতীয় বিপ্লব, ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর আত্মদর্শন, মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার হিসেবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের আলোকে লেখক নিজস্ব ভঙ্গিতে, নতুন বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব-ঐতিহ্য দলিল’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের ফলে ‘ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ। অনাদিকাল ধরে এই ভাষণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সব ধরনের বৈষম্য, অত্যাচার, নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিশ্বমানবতাকে ঐক্যবদ্ধ হবার প্রণোদনা জোগাবে।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ যেমন উদ্দীপনাময় তেমনি এর ছিল সুনির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য, পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয়। নাতিদীর্ঘ অথচ কালোত্তীর্ণ এ ভাষণ সমগ্র বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রেরণা জুগিয়েছে। কাব্যিক ব্যাঞ্জনাময় এ ভাষণে মানুষের অধিকার আদায়ের কথা, মানবতার কথা উঠে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ কেন বিশ্ব ঐতিহ্য সম্পদ হলো সে বিষয়টি অনুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে এ গ্রন্থে।
অনুষ্ঠানে বইয়ের লেখক অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের পরিপ্রেক্ষিত সৃষ্টি হয়েছে বাঙালির হাজার বছরের মুক্তি সংগ্রামের আকাঙ্ক্ষার মধ্য দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ সমগ্র বিশ্বের কাছে যে বার্তা পৌঁছে দেয়, তা হলো- কোনো জাতির মুক্তি আকাঙ্ক্ষাকে অস্ত্র দিয়ে দমন করা যায় না। আমরা বলতে পারি, ৭ই মার্চের এ ঐতিহাসিক ভাষণই বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের ভিত্তি নির্মাণ করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ওপর লিখিত অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদের প্রতিটি বইই অনবদ্য এবং পরিশ্রমের স্বাক্ষরবাহী। আজকের আলোচ্য বইয়েও লেখক বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে বিশ্লেষণ করেছেন। এ গ্রন্থটি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধি যেমন বাড়াবে, তেমনি গবেষকদের জন্য বঙ্গবন্ধুচর্চার নতুন নতুন দিক উন্মোচন করবে।
এরপর সন্ধ্যায় মেলার মূলমঞ্চে স্বকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন- কবি মুজিবুল হক কবীর, আয়শা ঝর্না, চঞ্চল আশরাফ ও মাজুল হাসান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন- আবৃত্তিশিল্পী মেহেদী হাসান, তিতাস রোজারিও ও সিদ্দিকুর রহমান পারভেজ। এছাড়া এদিন ছিল সাইমন জাকারিয়ার পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ভাবনগর ফাউন্ডেশন’-এর পরিবেশনা। এতে সংগীত পরিবেশন করেন- আলম দেওয়ান, মোক্তার হোসেন, রহিমা খাতুন, শারমিন সুলতানা ও মো. মাহাবুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
ডিএন/এইচজে